বিএসএফ না চাইলে সীমান্তে পাচার সম্ভব নয়: উদয়ন গুহ

0

সীমান্তে রমরমা পাচারের দায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের ঘাড়ে চাপালেন পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ। শুক্রবার যখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভল্লা রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ও স্বরাষ্ট্র সচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকার সাথে বৈঠকে বসছেন, ঠিক সেই সময়েই সীমান্তে গুলি চালানোর ঘটনার দায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উপরেই চাপালেন উদয়ন।

উদয়ন বললেন, ‘মাথায় গুলি লেগে প্রকাশ বর্মণের মৃত্যু কেন হলো? বিএসএফের মদদ ছাড়া সীমান্তে কোনো কিছুই পাচার করা সম্ভব নয়। আমি সীমান্তবর্তী এলাকার বিধায়ক। অধিকাংশ কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা। সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের সমস্যার কথা আমি জানি। স্টিলের ব্লেড দিয়ে মোড়া কাটাতাঁরের বেড়া পেরিয়ে কী করে পাচার হয়? তা নিয়ে সকলের মনেই প্রশ্ন আছে।’

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সিতাইয়ের চামটা এলাকায় বিএসএফের গুলিতে তিন সন্দেহভাজন পাচারকারী নিহত হয়। প্রশাসন সূত্র বলছে, মৃত তিনজনের মধ্যে একজন ভারতীয়, বাকি দু’জন বাংলাদেশের নাগরিক। মৃত ভারতীয়ের নাম প্রকাশ বর্মণ।

সেই নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেন দিনহাটার নবনির্বাচিত বিধায়ক। বলেন, ‘বিএসএফ মাঝেমধ্যে দু’একজনকে গ্রেফতার করে, গুলি চালায়, কিন্তু পাচার সব সময় চলতে থাকে। মাঝে মাঝে যখন পাচারকারীদের সাথে টাকা-পয়সার ভাগে সমস্যা হয়, তখন বিএসএফ গুলি চালায়। এলাকার মানুষদের উপর জুলুম চলতে থাকে। মনে রাখতে হবে, কাউকে হত্যা করার অধিকার বিএসএফের নেই। গুলি করে আটকাতে পারতেন সীমান্তরক্ষীর বাহিনীর সদস্যরা। তা করা হলো না। বিএসএফের দিকে কেউ পাথর ছুড়েছে, এ কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। এ সব অজুহাত দেয়া হচ্ছে। আমরা ধিক্কার জানাচ্ছি এই কাজে। বিএসএফের উপর অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রণ করুক। না হলে অশান্তি বাড়বে।’

ভারত, পাঞ্জাব ও আসাম সীমান্তে বিএসএফের এখতিয়ারভুক্ত এলাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্র। শুক্রবার অজয় ভল্লার উপস্থিতিতে এই নিয়ে আলোচনা হতে পারেও বলে সূত্রে জানা গেছে।

এই নির্দেশ ঘোষণার পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর বিরোধিতা শুরু করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে তিনি এই নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছেন। রাজ্য পুলিশের ক্ষমতা খর্ব হবে বলে সেই চিঠিতে জানিয়েছিলেন তিনি।

এ দিন সংবাদ সম্মেলন উদয় উদয়ন বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে বলে এসেছি, কাঁটাতারের বেড়া একেবারে জিরো পয়েন্টে দেয়া হোক। সেখানে গেট না থাকলেও অসুবিধা নেই। তা হচ্ছে না, ভারতের ভূখণ্ডের ১৫০ গজ ভিতরে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া হচ্ছে। ভারত নিজের জমি ছেড়ে দিচ্ছে। যত অত্যাচার, জুলুম, ভারতের কাঁটাতার এলাকার ভিতরে ভারতীয়দের উপর করা হয়। এত দিন ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বিএসএফের এলাকা ছিল। শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় এই এলাকায় বিএসএফ হস্তক্ষেপ করতে পারত। এখন নতুন আইন বলবৎ করার চেষ্টা হচ্ছে পাঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গ এবং আসামে ৫০ কিলোমিটার বিএসএফের আওতায় আনার চেষ্টা হচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিবাদ করেছেন। আমরাও প্রতিবাদ করছি। কারণ, ৫০ কিলোমিটার হলে অনেকদূর পর্যন্ত এলাকা বিএসএফের এখতিয়ারের মধ্যে চলে আসবে। আমরা যারা সীমান্ত এলাকায় থাকি, তারা জানি, কীভাবে বিএসএফের এখতিয়ারভুক্ত এলাকায় জুলুম চালায় বাহিনী। আমাদেরও গাড়ি আটকে রেখে বারবার নাজেহাল করা হয়। এ বার সাধারণ মানুষও অত্যাচারের মুখে পড়বে।’

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com