অশান্তি ও মতবিরোধে নাজেহাল ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব

0

রাজ্যে রাজ্যে দলের অন্দরে অশান্তি মতবিরোধে নাজেহাল ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই তার প্রতিফলন দেখা গেছে উত্তরাখণ্ডে। চার মাসের মধ্যে সেখানে তিনজন মুখ্যমন্ত্রী বদলেছে। ওই অস্বস্তির রেশ কাটার আগেই এবার নতুন করে সমস্যা শুরু হয়েছে কর্ণাটক ত্রিপুরায়। এই দুই রাজ্যেই বিজেপি ক্ষমতায়। এবং দুই রাজ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দলের একাংশে প্রায় বিদ্রোহের পরিবেশ। তা সামলাতে আসরে নেমেছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা। কিন্তু, তাতে সমাধানসূত্র মিলছে না। কাজেই হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে।

কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা শুক্রবার থেকে দিল্লিতে রয়েছেন। দেখা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর সাথে। দীর্ঘক্ষণ ওই বৈঠকচলে। শনিবার জগৎপ্রকাশ নাড্ডা অমিত শাহের সাথেও দেখা করেন ইয়েদুরাপ্পা। তার এই দিল্লি সফরের মধ্যেই কর্ণাটকে মুখ্যমন্ত্রী বদলের জল্পনা তুঙ্গে। আগামী কিছু দিনের মধ্যেই ওই রাজ্যে প্রশাসনিক প্রধান পদে নতুন কাউকে দেখা যাবে বলে আলোচনা শুরু হয়েছে।

একটি সূত্রের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকেইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ইয়েদুরাপ্পা। অব্যাহতি চেয়েছেন অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে। কিন্তু, এদিন অমিত শাহ জগৎপ্রকাশ নাড্ডার সাথে বৈঠক করে বেরিয়ে তিনি সাফ জানিয়েছেন, ‘কর্ণাটকে মুখ্যমন্ত্রীবদল নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী অথবা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও আমাকে ইস্তফা দিতে বলেননি। বরং, আগামী নির্বাচনে বিজেপি যাতে আবার ক্ষমতায় ফিরতে পারে, সেই লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তুত হতে বলা হয়েছে। লোকসভা ভোটেও কর্ণাটকে আগের তুলনায় বেশি আসন পাবে দল।

সাম্প্রতিক রদবদলে কর্ণাটক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অনুগামী হিসেবে পরিচিত কর্ণাটকের এমপি শোভা কারান্দলাজেকে কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক মহলের জল্পনা, এর বিনিময়ে এবার ইয়েদুরাপ্পাকে কার্যত সরে যাওয়ার বার্তাদেয়া হয়েছে। নতুন কোনো মুখকে সামনে রেখে আগামী দিনে কর্ণাটকে লড়াই হবে। যদিও এই কাজটা সহজ নয়। কারণ, ওইরাজ্যে এখনো ইয়েদুরাপ্পার মতো শক্তিশালী নেতা বিজেপির অন্দরে নেই। ফলে তাকে চটিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না।বিষয়টি চূড়ান্ত করতে হবে ইয়েদুরাপ্পাকে বুঝিয়ে সুজিয়েই। তাহলে কি বি এল সন্তোষ হবেন আগামী দিনের মুখ্যমন্ত্রী? ওইআলোচনাও চলছে। তবে ইয়েদুরাপ্পা অবশ্যই চাইবেন তার অনুগামী কাউকে পদে বসাতে।

ঠিক একই জল্পনা শুরু হয়েছে ত্রিপুরা নিয়ে। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে দেখা করেছেন ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবদেব। তিনি অবশ্য বলছেন, ত্রিপুরার উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েই আলোচনা করতে তার এই দিল্লি সফর। বিশেষ করে আগর গাছ এবংআগর কাঠ সংক্রান্ত বিশেষ কিছু পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। যাতে বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত এই গাছ কাঠের সঠিক ব্যবহার সৃজনেরব্যবস্থা হয়, সেটা নিয়ে সামগ্রিক প্রকল্প তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। এই একই উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি দেখা করেছেন কেন্দ্রীয় শিল্প বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সাথে।

কিন্তু, ত্রিপুরার রাজনৈতিক মহলের ধারণা, বিপ্লবকুমার দেবকে আদতে ডেকে পাঠানো হয়েছে রাজধানীতে। তিনি দলেরসংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের সাথেও কথা বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে ত্রিপুরাবিজেপির অন্দরে। বিদ্রোহীদের অভিযোগ, সরকারের ভ্রান্ত নীতির কারণে রাজ্যে দ্রুত জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে দল। সুতরাং, বিপ্লবকুমার দেবকেও কি সরিয়ে দেয়া হবে? এই গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com