প্রচারণায় মাঠে নামলেই আওয়ামী লীগের সশস্র হামলা: অভিযোগ বিএনপির মেয়রপ্রার্থীর
তৃতীয় ধাপে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ নির্বাচন নিয়ে বিএনপি প্রার্থী বলেন, কোনো রকম প্রচার-প্রচারণাই করতে দেয়া হচ্ছে না তাকে। তিনি বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে এ পর্যন্ত ১২টি বড় ধরনের সশস্র হামলা ও ছোটখাট ১০টি হামলার শিকার হয়েছেন তিনি নিজে ও তার নেতা-কর্মীরা। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে এখন তাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ বিএনপির মেয়রপ্রার্থীর।
রোববার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মো: এহেসান কুফিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি প্রার্থী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীসহ প্রতিপক্ষ প্রার্থীর সমর্থকদের দায়ী করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে এহেসান কুফিয়া অভিযোগ করেন, মনোনয়ন দাখিলের পর প্রথম ২১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তার বাড়িতে এসে আওয়ামী লীগের একদল সন্ত্রাসী সশস্র হামলা করে। এ সময় ভয়ে তিনি তার বাড়ির একটি কক্ষে আশ্রয় নেন। সন্ত্রাসীরা তার বাড়ির মূল ফটকে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে হামলা চালিয়ে তারা বাড়ির ফটক ভাঙ্গার চেষ্টাও করে। পরে তাকে গালিগালাজ করে চলে যায়। এরপর ৩০ জানুয়ারি তার প্রচারণায় ব্যবহৃত অটোরিকশা, মাইক ছিনিয়ে নিয়ে ভাংচুর ও নেতা-কর্মীকে আহত করা হয়।
এ ছাড়া এহেসান কুফিয়ার ভাতিজা মোয়াজকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী আনোয়ার হোসেন আশরাফের বড় ভাই স্থানীয় সংসদ সদস্য মো: আফজাল হোসেনের সিনেমা হলের মোড়ের মার্কেটে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা আটক রাখেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো: আমিরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল আলম, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিলু, জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান শরীফ, বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান মনির, বাজিতপুর পৌর বিএনপির সদস্য সচিব জসিম মাহমুদ ও যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল মালেক ভূঞা প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সর্বশেষ গত ৬ জানুয়ারি দুপুরে বিএনপি প্রার্থী পৌরসভার বেপারিপাড়া মোড়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গেলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ার হেসেন আশরাফের পিএস হিসেবে পরিচিত রাসেল মিয়ার নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে বিএনপির প্রার্থীসহ তার কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল মালেক ভূঞা মঞ্জু, বিএনপি নেতা রুপম, মাহবুব নেয়ামুল, আরমান ও মুখলেছসহ অন্তত ১২ জন গুরুতর আহত হন।
এহসান কুফিয়া বলেন, ‘দেড়শ’ বছরের প্রাচীন বাজিতপুর পৌরসভায় আমার বাবা আবদুল্লাহ বুরহান কুফিয়া পরপর চারবার মেয়র ছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমিও এ পৌরসভায় জনগণের বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলাম। গত নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন আশরাফ জোর করে কেন্দ্র দখল করে মেয়র হন। এবারো তিনি একই কায়দায় মেয়র হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। অথচ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি এক থেকে দেড়শ ভোট পাবেন। তাই তার মাথা নষ্ট হয়ে গেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে এহেসান কুফিয়া জানান, ‘তিনি রিটার্নিং অফিসারের কাছে এ পর্যন্ত ১২টি হামলার সুনির্দিষ্ট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু কোনো অভিযোগেরই সুরাহা পাননি তিনি। ‘বাজিতপুর পৌরবাসীর এখন জানমালের নিরাপত্তা নেই। আমিও নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কিত। নির্বাচনকে ঘিরে এমন অরাজকতা কোনোভাবেই আমাদের কাম্য নয়। আমাকে নির্বাচিনী প্রচারণার সুষ্ঠু পরিবেশ দিতে হবে।’