সুষ্ঠু ভোটের দাবিতে ওবায়দুল কাদেরের ভাইয়ের সড়ক অবরোধ

0

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভায় সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা ও তার সমর্থকরা।  এ সময় সড়কের বিভিন্নস্থানে টায়ার জ্বালানো হয়। 

রবিবার (০৩ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচির কারণে পৌর এলাকায় যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ থাকে দোকানপাটও।  বিকেল পাঁচটার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। 

আবদুল কাদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।  কর্মসূচি চলাকালে তিনি ভাবিসহ দলের একাধিক সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকায় পুলিশ ও প্রশাসন অনেকটা অসহায় হয়ে পড়ে।  বিক্ষোভের কারণে সকাল থেকে বসুরহাট শহরের বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।  সব সড়কে যানবাহন চলাচলও বন্ধ হয়।

বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক বলেন, তাঁরা চেষ্টা করছেন পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখছেন।

উপজেলা নির্বাচন কার্যলয় ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৬ জানুয়ারি হতে যাচ্ছে বসুরহাট পৌর নির্বাচন।  এ উপলক্ষে আজ রবিবার সকাল ১০টায় নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনবিষয়ক সভার আয়োজন করে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়।  এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম।  সভায় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল আলম সভাপতিত্ব করেন। 

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জিয়াউল হক মীর।  সভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিরসহ তিনজন প্রার্থী এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় উপস্থিত কয়েকজন বলেন, অনুষ্ঠানে অবাদুল কাদের মির্জা বক্তব্যের একপর্যায়ে কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিরুদ্ধে তার নির্বাচনী পোস্টার-ব্যানার ছিড়ে ফেলাসহ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের নানা অভিযোগ করেন।  এর নেপথ্যে ভাবির সঙ্গে তার পারিবারিক বিরোধ, দলের একাধিক সাংসদসহ কিছু নেতার ইন্ধন রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।  বক্তব্যের একপর্যায়ে জেলা প্রশাসক আর কিছু বলবেন কি না, জানতে চান।  তখন আবদুল কাদের বক্তব্যে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে সভাকক্ষ থেকে বেরিয়ে যান।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, সভায় মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা অনেক বিষয়েই বক্তব্য দিয়েছেন।  একপর্যায়ে তিনি (জেলা প্রশাসক) জানতে চেয়েছেন, আর কিছু বলবেন কি না।  এরপরই আবদুল কাদের উত্তেজিত হয়ে সভা ত্যাগ করেন।  এরপর কী হয়েছে, বলতে পারবেন না। 

সাভায় থাকা অনেকে বলেন, সভা থেকে বেরিয়ে আবদুল কাদের পৌর কার্যালয়ে গিয়ে দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে চিৎকার-চেঁচামেচি করেন।  একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। বেলা ১১টার দিকে তিনি পৌর শহরের জিরো পয়েন্টে বঙ্গবন্ধু চত্বরে অবস্থান নেন।  সেখানে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থক হাজির হন।  তাঁরা টায়ার জ্বালিয়ে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে ঝাড়ু নিয়ে বিক্ষোভ করেন।  বিক্ষোভকারীরা ডিসি ও এসপির অপসারণ দাবি করে নানা স্লোগান দেন। 

দুপুরে জিরো পয়েন্টে আবদুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন, কিন্তু ভোটের অধিকার এখনো প্রতিষ্ঠা হয়নি। দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি বন্ধ হয়নি।  তাই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোট অনুষ্ঠানের নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত তিনি অবস্থান কর্মসূচিতে অনড় থাকবেন।  কেউ পাশে না থাকলে প্রয়োজনে তিনি একা লড়ে যাবেন। 

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান বলেন, বিকেল পাঁচটার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী বসুরহাট জিরো পয়েন্টে যান।  তিনি আবদুল কাদের মির্জাকে নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার পাশাপাশি জেলা কমিটি নিয়ে করা অভিযোগ নির্বাচনের পর বসে মীমাংসার আশ্বাস দেন।  এরপর আবদুল কাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।  এরপর সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com