বাজিমাতের বদলে বিপাকে বিজেপি!

0

কলকাতার সাবেক মেয়র ও তৃণমূল নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়কে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় যেতে ইচ্ছুক বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু এ নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।

তিনি বিজেপিতে থেকেও ছিলেন না। তৃণমূল থেকে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন বছরখানেক আগে। কিন্তু এত দিন সে ভাবে দলের কোনো অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি তৃণমূলের সাবেক নেতা এবং কলকাতা পুরসভার সাবেক মেয়র শোভ চট্টোপাধ্যায়কে। মনে করা হচ্ছিল, তিনি হয়তো ফের তৃণমূলে ফিরে যাবেন। নির্বাচনের আগে সেই শোভনকেই বিশেষ দায়িত্ব দিলো রাজ্য বিজেপি। যা নিয়ে দলের ভিতরে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

শোভন চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলে থাকাকালীন বরাবরই দক্ষিণ কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার দায়িত্ব সামলেছেন। নির্বাচনের আগে রাজ্য বিজেপিও তাকে কলকাতা জোনের পর্যবেক্ষক করেছে। বিজেপির এই জোনে দমদম, কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি বড় অংশ পড়ে। দমদম না হলেও বাকি এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরে সামলেছেন শোভন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে শোভনের নেতৃত্বে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩১টির মধ্যে ২৯টি আসন জিতেছিল তৃণমূল।

শোভনের নেতৃত্বে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিজেপিও কি একই রকম ফল করতে পারবে? এই প্রশ্ন নিয়ে দলের ভিতরেই তীব্র অশান্তি শুরু হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিজেপির দায়িত্ব যারা সামলাচ্ছেন, তাদের বক্তব্য, একসময় শোভনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে দলের কর্মীদের। মানুষের কাছে শোভনের বিভিন্ন ‘অন্যায়’ তারা প্রচার করেছেন। এখন সেই শোভনই ওই অঞ্চলে দলের পর্যবেক্ষক। পুরনো কর্মীদের পক্ষে তা মেনে নেয়া সম্ভব নয়। নাম প্রকাশ করতে না চাওয়া নেতাদের বক্তব্য, এ ভাবে তৃণমূল ছেড়ে আসা নেতাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়ে দিলে নিচের তলার কর্মীরা কাজে আগ্রহ পাবে না। তারা নির্বাচনের সময় বসে যাবে।

শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেয়ার পর থেকেই বিজেপির আদি ও নব্যদের মধ্যে খানিক তর্ক শুরু হয়েছে। তবে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি শুভেন্দু বড় নেতা। ফলে কী ভাবে সকলকে একসঙ্গে নিয়ে চলতে হয়, তা তিনি জানেন। কিন্তু শোভন কি তা পারবেন? তৃণমূলে থাকাকালীন একসময় দলের এমপি কবীর সুমনের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন তিনি। সুমন বলেছিলেন, কী ভাবে শোভন চট্টোপাধ্যায় তাকে বিভিন্ন কাজে বাধ্য করছেন। সেই শোভন বিজেপি কর্মীদের কতটা কাছে টেনে নিতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।

রাজ্য বিজেপির এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, তৃণমূলের শোভন আর বিজেপির শোভন এক নয়। তৃণমূলে মমতার ছায়ায় শোভন বেড়ে উঠেছেন। বিজেপিতে যখন তিনি এসেছেন, তত দিনে তিনি কেচ্ছা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে গেছেন। স্ত্রীকে ছেড়ে বান্ধবীর সঙ্গে থাকছেন। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও তাকে গত কয়েক বছর বিশেষ দেখা যায়নি। ফলে তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কতটা কাজ করতে পারবেন, মানুষ তাকে কতটা গ্রহণ করবে, তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি আছে। আরো একটি প্রশ্ন উঠছে। শোভনের পাশাপাশি তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে ওই একই এলাকার সহ-পর্যবেক্ষক করা হয়েছে। বিজেপি কর্মীদের একাংশের প্রশ্ন, শোভন না হয় নেতা, কিন্তু কোন অধিকারে বৈশাখী এই পদ পেলেন?

সূত্র : ডয়চে ভেলে

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com