করোনা বিশ্বে যেসব পরিবর্তন করেছে

0

কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে বৈষম্য এবং বিগত কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের জন্য দরিদ্রতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

জাতিসঙ্ঘ শ্রম সংস্থা (আইএলও) ফেব্রুয়ারিতে বলেছিল, বিগত ১২ মাসের মধ্যে কোভিড-১৯-এ অসমতাগুলোকে আরো গভীর করেছে এবং মহামারি চলাকালীন অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করা দুই বিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, খবর ইউএন নিউজ।

গত মার্চে সংস্থাটির অনুমানে বলা হয়েছিল যে করোনার প্রভাব লাখ লাখ মানুষকে বেকারত্বের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

আইএলও’র মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেন, ‘এটি এখন কেবল বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সংকট নয়, এটি একটি বড় শ্রমবাজার এবং অর্থনৈতিক সংকট যা মানুষের ওপর বড় প্রভাব ফেলছে।’

সংস্থাটি জীবিকা নির্বাহের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস করার বিভিন্ন উপায় নিয়ে তাদের সুপারিশ প্রকাশ করেছিল, যার মধ্যে কর্মক্ষেত্রে কর্মচারীদের সুরক্ষা, অর্থনৈতিক ও কর্মসংস্থান প্রণোদনা কর্মসূচি এবং আয় ও কাজের ক্ষেত্রে সহায়তা অন্তর্ভুক্ত ছিল।

খাদ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখা

করোনায় বিশ্বব্যাপী দুর্ভোগের মাত্রা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে এপ্রিলের মধ্যে। জাতিসংঘ সমর্থিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, দারিদ্র্য পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে এবং আগে থেকেই খাদ্য সঙ্কটে থাকা দেশগুলো মহামারির কারণে আরও বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

মানবিক সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে গবেষণায় বলা হয়, ‘আমাদের অবশ্যই জরুরি খাদ্য সরবরাহ কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করতে হবে, যাতে জীবন বাঁচিয়ে রাখার জন্য মানুষ খাওয়ার সুযোগ পায়।’

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে যখন যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ছিল, গরিব ও অসহায়দের খাদ্য সহায়তার জন্য তখন বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহনগুলোকে ব্যবহার করা হয়।

নারীদের ওপর প্রভাব

সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত তথ্যের প্রতি ইঙ্গিত করে জাতিসঙ্ঘ উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপি’র প্রধান আছিম স্টেইনার বলেন, ‘আয়ের উৎস হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা বেশি এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার আওতাধীন হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকায় করোনাভাইরাসের বড় প্রভাব পড়েছে নারীদের ওপর।’

বলা হয়, নারীদের দারিদ্র্যের হার নয় শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে যা প্রায় ৪৭ মিলিয়ন নারীর সমান। এটি চরম দারিদ্র্য দূরীকরণে গত কয়েক দশকের অগ্রগতির উল্টোচিত্র তুলে ধরে।

প্রতি ছয় শিশুর মধ্যে আক্রান্ত এক

খরা, কোভিড-১৯ এবং নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধির সম্মিলিত প্রভাবে চরম সঙ্কটে রয়েছে দক্ষিণ মাদাগাস্কারের জনগণ, যারা এর আগে থেকেই খাদ্য এবং পুষ্টি সংকটের পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল।

শিশুদের দরিদ্রতা হ্রাসের অগ্রগতিও এ বছর মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

জাতিসঙ্ঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) এবং বিশ্বব্যাংক গত অক্টোবরে জানায়, মহামারি শুরু হওয়ার আগে থেকেই প্রায় ৩৬৫ মিলিয়ন শিশু দারিদ্র্যের মধ্যে জীবনযাপন করছিল এবং চলমান সংকটের কারণে এ সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেতে পারে।

চরম দরিদ্রতা কয়েক শ মিলিয়ন শিশুকে শারীরিক এবং মেধা বিকাশের ক্ষেত্রে তাদের প্রকৃত সম্ভাব্যতায় পৌঁছানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

সূত্র : ইউএনবি

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com