মেইল-ইন-ব্যালটে রেকর্ড, পিছিয়ে পড়ছেন ট্রাম্প

0

মার্কিন নির্বাচনে নতুন রেকর্ড। ৩০টি রাজ্য থেকে ইতিমধ্যে জমা পড়েছে ৯০ লাখেরও বেশি ব্যালট। এত দ্রুত এত বেশি সংখ্যক ভোট আগের কোনো নির্বাচনে পড়েনি। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জমা পড়া মেইল-ইন-ব্যালটের বড় অংশই এসেছে নথিভূক্ত ডেমোক্র্যাটদের থেকে। যা রিপাবলিকানদের পাঠানো ব্যালটের প্রায় দ্বিগুণ।

আগামী ৩ নভেম্বর ভোট। মেইল-ইন-ব্যালটে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রতিবারের মতোই। কিন্তু আগেকার যাবতীয় রেকর্ড ভেঙে চুরমার। নেপথ্যে— করোনা আতঙ্ক। ২০১৬ সালে মেইল-ইন-ব্যালট ও অ্যাবসেন্টি ব্যালটে ভোট দিয়েছিলেন ৫ কোটি ৭২ লাখ জন। ইউএস ইলেকশন প্রোজেক্টের পক্ষ থেকে জানা গেছে, গত শনিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত ৯০ লাখ ৫৫ হাজার ৫২ জন মেইল-ইন-ব্যালটে ভোট দিয়েছেন।

করোনা কালে এমনটা হতে চলেছে বলে আগাম জানিয়েছিলেন ইউএস ইলেকশন প্রোজেক্টের তত্ত্বাবধায়ক ও ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইকেল ম্যাকডোনাল্ড। তার মতে, এবারের নির্বাচনে প্রায় ১৫ কোটি মানুষ (মোট মার্কিন জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশ) ভোট দেবেন। মার্কিন নির্বাচনী ইতিহাসে ১৯০৮ সালের পর এত ভোট কখনও পড়েনি। ম্যাকডোনাল্ডের ব্যাখ্যা, করোনার কারণে এবার মেইল-ইন-ব্যালটে ভোট বেশি পড়বে। ইতিমধ্যে বহু প্রদেশ মেল-ইন-ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ বাড়িয়েছে। সঙ্গে রয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘিরে প্রবল বিতর্ক। দু’য়ে মিলে ভোটারদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে। বেড়েছে ভোট দেয়ার প্রবণতাও। এবার ভোট দেবেন বলে বহু মানুষ আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের বড় অংশই বেছে নিচ্ছেন মেইল-ইন-ব্যালট। কিছুদিন আগে একই সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন অধ্যাপক মার্ক রোজেল। তার কথায়, করোনার জন্য বহু ভোটার মেইল-ইন-ব্যালটে ভোট দেবেন। কিন্তু এর জন্য ভোটের ফলপ্রকাশে কোনও দেরি হবে না।

ইউএস ইলেকশন প্রোজেক্টের তথ্যানুযায়ী, শনিবার দুপুর পর্যন্ত ২০ লাখেরও বেশি নথিভূক্ত ডেমোক্র্যাট মেইল-ইন-ব্যালটে ভোট দিয়েছেন। সেখানে নথিভূক্ত রিপাবলিকান ভোটের সংখ্যা ৮ লাখ ৯১ হাজার। ব্যালেটগ্রাউন্ড স্টেটগুলিতেও এবার পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেয়ার প্রবণতা অনেকটাই বেশি। শুক্রবার পর্যন্ত উইসকনসিনে ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৯৮৭ জন ভোট দিয়েছেন। ২০১৬ সালে এখানকার ১ লাখ ৪৬ হাজার ২৯৪ জন মেইল-ইন-ব্যালট ব্যবহার করেছিলেন। উইসকনসিন, মিনেসোটাসহ পাঁচটি রাজ্য থেকে এখনো পর্যন্ত প্রচুর সংখ্যক মেইল-ইন-ব্যালট জমা পড়েছে। ২০১৬ সালের মোট মেইল-ইন-ব্যালটের তুলনায় যা ২০ শতাংশ বেশি।

সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৬২ শতাংশ ডেমোক্র্যাট ভোটার মেইল-ইন-ব্যালটে ভোট দিয়েছেন বা দেবেন বলে জানিয়েছেন। তুলনায় মাত্র ২৮ শতাংশ রিপাবলিকান আগাম ভোট দিচ্ছেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, রিপাবলিকানদের অনাগ্রহের পিছনে রয়েছে ট্রাম্পের মন্তব্য। তিনি বলেছিলেন, ‘এবারের নির্বাচনে মেইল-ইন-ব্যালটে সবচেয়ে বেশি কারচুপির আশঙ্কা রয়েছে।’ অন্যদিকে, বাইডেন শিবির প্রথম থেকেই আগাম ভোট দেয়ার জন্য মার্কিনিদের আবেদন জানিয়েছেন। সেই কারণেই মেইল-ইন-ব্যালটে ভোট দেয়ায় রিপাবলিকানদের তুলনায় এগিয়ে ডেমোক্র্যাটরা। ব্যবধান ক্রমশ বাড়ছে।

চিন্তা বাড়াচ্ছে ‘ন্যাকেড ব্যালট’
ভোটগ্রহণের মধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর চিন্তা বাড়িয়েছে ‘নেকেড ব্যালট’। এবারের মেইল-ইন-ব্যালট প্রক্রিয়ায় ব্যালট পেপার ছাড়াও রয়েছে ভোটারের নাম-ঠিকানা লেখা খাম। থাকছে ভোটকেন্দ্রের ঠিকানা লেখা অন্য একটি খামও। ব্যালটে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচনের পর তা ভোটারের নাম, ঠিকানা লেখা খামে ভরতে হবে। সেই খামটিকে আবার ভোটকেন্দ্রের ঠিকানা লেখা খামে ভরে পোস্ট করতে হবে। যদি ভোটারের নাম-ঠিকানা লেখা খামটি ভিতরে না থাকে, তবে তা ‘নেকেড ব্যালট’ হিসেবে গণ্য হবে। বাতিল হবে ভোটটি। এই নিয়মের গেরোয় কোনো ভোট যাতে নষ্ট না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রচার চালাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। আসরে নেমেছেন বেশ কয়েকজন সেলেবও। উর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত রেখেই ‘নেকেড ব্যালট’ নিয়ে ভোটারদের সচেতন করেছেন মার্ক রুফালো, ক্রিস রক, নাওমি ক্যাম্পবেলসহ একাধিক তারকা।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com