আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের মোকাবেলায় চীন-পাকিস্তান

0

যুক্তরাষ্ট্র যখন তল্পিতল্পা গোছাচ্ছে, তখন ৮ সেপ্টেম্বর ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন এখন আফগানিস্তানে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এগিয়ে আসছে। আর এর মানে হলো, বেইজিং আশা করছে যে তারা আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। তারা মনে করছে, বিনিয়োগের মাধ্যমেই যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ের পর অস্থিতিশীলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবানকে চীন প্রস্তাব দিয়েছে যে মার্কিন সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের পর তারা যদি আফগানিস্তানে শান্তি নিশ্চিত করে, তবে তাদের জন্য একটি সড়ক নেটওয়ার্ক নির্মাণ করে দেবে। 

একই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, গত তিন মাস ধরে বেইজিংয়ে যে আলোচনা চলেছে, তাতে দেশটিতে জ্বালানি ও অবকাঠামো প্রকল্পে বেশ ভালো বিনিয়োগ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে চীনা সুরক্ষা

চীনারা আফগানিস্তান নিয়ে ভাবছে এবং ভবিষ্যতের জন্য পথ পরিষ্কার করে রাখছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের ওই প্রতিবেদনে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জেমস ডোরসে এ তথ্য জানান। বেলুচিস্তানে দ্বিতীয় উপজাতীয় নেতা পত্রিকাটিকে বলেন, আফগানিস্তানের প্রধান প্রধান নগরীকে সংযোগ করে একটি মোটরওয়ে নির্মাণ করার প্রস্তাব দিয়েছে চীন।

যুক্তরাষ্ট্র এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি করে চীনের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী প্রকল্প চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) ধ্বংস করতে চায়।
কেন? চীন ও ইরান (যুক্তরাষ্ট্রের অপছন্দের দেশ) সম্প্রতি ৪০০ বিলিয়ন ডলারের সামরিক ও বাণিজ্য চুক্তি করেছে। আর এটাও অবাক করা ব্যাপার নয় যে ইরান, তুরস্ক, পাকিস্তান ও চীন আগের চেয়ে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে।
সিপিইসির সমাপ্ত স্থান হচ্ছে বেলুচিস্তানের গোয়াদর বন্দর। মালাক্কা প্রণালীতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র মিলে চীনকে উত্যক্ত করতে পারে ওই স্থান এড়াতে আশঙ্কায় চীন তার কাশগড় থেকে বেলুচিস্তান পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করতে শুরু করেছে।

চীন চায় গোয়াদর বন্দরকে ইরানের চাবাহার বন্দরের সাথে যুক্ত করতে।এই চাবাহার বন্দর থেকেই ভারতকে সম্প্রতি বিদায় করে দেয়া হয়েছে। গোয়াদর বন্দরের ওপর ইসরাইল নজর রাখছে। ইসরাইল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সম্প্রতি ইয়েমেনের সোকোত্রা দ্বীপে একটি গোয়েন্দা ঘাঁটি নির্মাণ করেছে। এখান থেকে গোয়াদর দেখা যায়।

চীন ও আফগান তালেবানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান আস্থা
চীন এখন আফগানিস্তানে তার ভবিষ্যত বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করছে। পাকিস্তান এ কাজে চীনকে সহায়তা করছে। আর আফগান তালেবানের সাথে চুক্তি করে বিদায় নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র আবার পাকিস্তানকেও পরিত্যাগ করে ভারতকে মিত্র হিসেবে গ্রহণ করেছে।
এদিকে কিছু কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তানের সাথে তুরস্কের সম্পর্কও উষ্ণ হচ্ছে।

এর পর কী?
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, চীন তার মুসলিম উইঘুরদের ওপর নির্যাতন চালালেও তুরস্ক, ইরান, পাকিস্তান ও এমনকি মালয়েশিয়ার মতো মুসলিম দেশগুলো পর্যন্ত চীনের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্বিগ্ন করছে। দেশটি এ নিয়ে হৈচৈ করছে। অথচ এই যুক্তরাষ্ট্রই ইরাক, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও সিরিয়ার মতো দেশে লাখ লাখ মুসলিমকে হত্যা করেছে।
ভবিষ্যতে পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।তবে আফগান তালেবানকে সাথে নিয়ে চীন আশ্বাস পাচ্ছে যে সিপিইসি বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) কাছ থেকে নিরাপদ থাকবে।

সূত্র : দি কুইন্ট

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com