নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পের নাম প্রস্তাব
১৯৭৯ সালে মিসর ও ১৯৯৪ সালে জর্ডানের পর তৃতীয় আরব রাষ্ট্র হিসেবে গত ১৩ আগস্ট ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি স্বাক্ষরের ঘোষণা দেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত। দুই দেশের টেলিফোন যোগাযোগ সচল করার পাশাপাশি নিয়মিত বিমান চলাচলও শুরু হয়েছে।
চুক্তিতে ভূমিকা রাখায় আগামী বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের নাম প্রস্তাব করেন ক্রিশ্চিয়ান টাইব্রিং। তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী সংঘাত নিরসনে ভূমিকা রাখার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকা প্রশংসনীয়।’ তিনি আরও দাবি করেন, ‘ট্রাম্প পৃথিবীর অনেক দেশে শান্তি ফিরিয়ে এনেছেন। সামনের বছর পুরস্কারটির জন্য তারই মনোনীত হওয়া উচিত।’
নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করতে ট্রাম্পের নাম প্রস্তাবের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৮ সালে সিঙ্গাপুরে উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনের সঙ্গে আলোচনায় অংম নেওয়ার কারণেও তার নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প পুরস্কার জেতেননি।নোবেলপ্রাইজ.ওআরজি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদানের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই এবং বিজয়ীর নাম ঘোষণার কাজটি করে থাকে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী বাছাইয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। আর এ কমিটিকে নিয়োগ দেয় নরওয়ের পার্লামেন্ট স্টর্টিং।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি শুরু হয় মূলত আগের বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে। তখন মনোনয়ন দেওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত ব্যক্তিদের কাছে আমন্ত্রণপত্র পাঠায় নোবেল কমিটি। আমন্ত্রণপত্রে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন আহ্বান করা হয়। এই যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন বিভিন্ন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমপি, মন্ত্রী), বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধান, ইন্টারন্যাশনাল কোর্টস অব ল, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, দর্শন, আইন ও ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক; শান্তি গবেষণা ইন্সটিটিউটের নেতা, পররাষ্ট্রবিষয়ক ইন্সটিটিউট; শান্তিতে নোবেল জয়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান; নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির সাবেক ও বর্তমান সদস্য এবং নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউটের সাবেক উপদেষ্টারা।
সেপ্টেম্বরে আমন্ত্রণপত্র পাওয়ার পর পরের বছরের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ থাকে। তবে কেউ নিজেকে মনোনয়ন দিতে পারেন না। এ সময় পার হয়ে যাওয়ার পর যারা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন তাদেরকে পরের বছরের জন্য বিবেচনা করা হয়। যারা নির্ধারিত সময়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন সেগুলো থেকে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়। নোবেল কমিটি প্রার্থীদের কাজগুলো মূল্যায়ন করে ওই সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করে। মার্চ থেকে আগস্টে উপদেষ্টাদের মত নেওয়া হয়। সংক্ষিপ্ত তালিকাটি কমিটির স্থায়ী উপদেষ্টারা পুনরায় মূল্যায়ন করেন।