১৩ বছরের শিশু ধর্ষণ-হত্যায় ক্ষোভে ফুঁসছে ভারত

0

ভারতে ১৩ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় পুরো দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলের এই ঘটনায় জনমনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ভারতে নারী ও শিশুদের প্রতি যৌন সহিংসতার ঘটনা বাড়ছেই। সর্বশেষ উত্তরপ্রদেশের ওই শিশু ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা সামনে এলো।

এই ঘটনার বিচার চেয়ে মানবাধিকার কর্মী এবং সাধারণ মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। প্ল্যাকার্ড হাতে বিভিন্ন স্থানে লোকজনকে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। তারা দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

উত্তরপ্রদেশের ওই শিশু যে গ্রামে বসবাস করত সেখানকার দু’জনকে এই ঘটনায় দোষী সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, কয়েকদিন আগে একটি মাঠ থেকে ওই শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

শিশুটির মরদেহের ময়নাতদন্তের পর জানা যায় যে, সে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করা হয়।

শিশুটি একটি দলিত পরিবারের। সাধারণত ভারতে দলিত সম্প্রদায়কে নিচু শ্রেণি হিসেবে দেখা হয়। তাদের সঙ্গে সমাজের উঁচু শ্রেণির লোকেরা খুবই খারাপ আচরণ করে থাকে। এমনকি তারা মনে করে দলিত শ্রেণির লোকজনকে ধরা-ছোঁয়াও পাপ।

ওই শিশুটি লক্ষ্ণীপুর খেরি জেলার পাকারিয়া গ্রামের বাসিন্দা। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে কাছের একটি মাঠে গিয়েছিল শিশুটি। এরপর সে আর ফিরে আসেনি।

অনেক সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও শিশুটি আর ফিরে না আসায় তার পরিবারের লোকজন তাকে খুঁজতে বের হয়। পরে তারা একটি আখক্ষেতে তার মরদেহ খুঁজে পায়।

এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শিশুটির ময়নাতদন্তের পর দেখা গেছে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

শিশুটি দলিত বলেই কি এমন ঘটনা ঘটল কিনা সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ওই কর্মকর্তা। তিনি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।

এদিকে, দলিত অধিকারকর্মী চন্দ্রশেখর আজাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির অধীনে দলিত সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, নিপীড়ন অনেক বেড়ে গেছে। শনিবার এক টুইট বার্তায় আজাদ বলেন, আমাদের মেয়েরা নিরাপদ নয়, আমাদের বাড়ি নিরাপদ নয়, আমাদের চারপাশে শুধু ভয় আর ভয়।

১৩ বছরের ওই শিশুটিকে এভাবে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ভারতজুড়ে নতুন করে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ এই বর্বর কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্তদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩৩ হাজারের বেশি ধর্ষণের ঘটনা অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন ৯১ জন ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকৃত সংখ্যা হয়তো আরও বেশি। কারণ সামাজিক ক্ষেত্রে নিগ্রহের শিকার হওয়ার ভয়ে অনেক ভুক্তভোগীই ধর্ষণ বা যৌন হয়রানির ঘটনা প্রকাশ করে না।

এদিকে, উত্তরপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব এক টুইট বার্তায় বলেন, লক্ষ্ণীপুর খেরি এলাকায় শিশুকে ধর্ষণ ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা মানবতাকে নাড়া দিয়েছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com