যে দানে আরশের ছায়ায় স্থান পাবে মুমিন
দান-সহযোগিতা অনেক বড় ইবাদত। গরিব-অসহায়দের মাঝে শুধু অর্থ বিতরণের নামই দান নয়, বরং যে কোনো ভালো কাজ উপহার দেয়াই হচ্ছে দান। দান-সহযোগিতার ইবাদতে খুশি হয়ে মহান আল্লাহ মুমিন বান্দাকে আরশের ছায়ায় স্থান দেবেন।
বিচারের দিন আরশের ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না। ভয়াবহ সে দিনের প্রচণ্ড তাপে মানুষ শুধু আশ্রয় খুঁজবে। কঠিন হাশরের ময়দানে কীভাবে দান করলে বান্দা আরশের ছায়ায় স্থান পাবে? সে সম্পর্কে রয়েছে হাদিসের সুস্পষ্ট নির্দেশনা। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন আল্লাহর ছায়া ব্যতিত কোনো ছায়া থাকবে না, তখন আল্লাহ তাআলা ৭ শ্রেণির লোককে তাঁর (আরশের) ছায়া দান করবেন। (তাদের মধ্যে একজন হলো)- যে ব্যক্তি এতো গোপনে সাদকাহ বা দান-সহযোগিতা করে যে, ডান হাত যা দান করে, বাম হাত তা টের পায় না।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, মুসনাদে আহমদ)
প্রতিটি ভালো কাজও একটি দান। তা হোক রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দেয়া। আর তা মানুষের দৃষ্টির বাইরেও অনেকে করে থাকে। আর তাও গোপন দান হিসেবে পরিগণিত হবে। কেননা হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রত্যেক সৎকাজই একটি দান। তুমি তোমার ভাইয়ের সঙ্গে হাসি মুখে সাক্ষাৎ করবে এবং তোমার ভাইয়ের পানির পাত্রে তোমার বালতি থেকে (পানি) ঢেলে দেবে; এটাও সৎকাজ (সুতরাং এটাও দান)।’
ছোট ছোট ভালো কাজ করেও উল্লেখিত হাদিসে ঘোষিত ফজিলত লাভ করা সহজ। তাই যে ব্যক্তি অতি গোপনে দান করবে, তার জন্য রয়েছে অনেক বড় নেয়ামত। হাদিসে এসেছে-
হজরত বাহয ইবনে হাকিম তাঁর বাবা ও দাদার সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘গোপন দান বরকতময়। এতে মহান আল্লাহ তাআলার রাগ নিপতিত হয়ে যায়।’ (তাবরানি, তারগিব)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত গোপনে দান করা। ভালো কাজগুলো গোপনে করা। তবেই আল্লাহ তাআলার নেয়ামত লাভ করা সম্ভব। আল্লাহর ক্রোধ থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব। সর্বোপরি বিচারের কঠিন দিনে মহান আল্লাহর আরশের নিচে স্থান লাভে ধন্য হবে মুমিন।
আল্লাহ তাআলা মুমিন মুসলমানকে উল্লেখিত নেয়ামত ও আরশের নিচে স্থান লাভে গরিব-দুঃখীর মাঝে গোপনে অর্থদানসহ যে কোনো ভালো কাজ নিজ থেকে যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের উপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।