আফগানিস্তানে পাকিস্তানের সেনা ও গোয়েন্দা প্রধান, আলোচনায় বসছে কাবুল ও তালেবান

0

তালেবান ও আফগান সরকারের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আন্তঃআফগান আলোচনার আগ দিয়ে পাকিস্তানের সামরিক ও গোয়েন্দা প্রধানেরা মঙ্গলবার অঘোষিত সফরে কাবুল গিয়েছেন। কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কাবুলে পাকিস্তান দূতাবাস জানিয়েছে, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া ও আইএস ইন্টিলিজেন্স লে. জেনারেল ফয়েজ হামিদ প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সাথে সাক্ষাত করেছেন।

তালেবান ও আফগান সরকারের মধ্যে প্রস্তাবিত আন্তঃআফগান শান্তি আলোচনাকে সামনে রেখে এই গুরুত্বপূর্ণ সফরটি হয়।

গত সপ্তাহে আফগান সরকারের শীর্ষ আলোচক আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ বলেন যে আন্তঃআফগান আলোচনা মধ্য জুনে শুরু হতে পারে।

সোমবার আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০০৮-২০১৪ সয়কালে পাকিস্তানে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনকারী মোহাম্মদ সাদিক খানকে আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ দূত নিয়োগকে অভিনন্দন জানায়।

নতুন দায়িত্ব লাভের পরপরই সাদিক খান পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশির সাথে কথা বলেছেন।

শনিবার ইসলামাবাদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি বলেন, পুরো অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য আফগানিস্তানের স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রয়োজন।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সাদিক খানের নিয়োগের ফলে আফগানিস্তানের সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে ভূমিকা রাখবে।

আফগান শান্তি আলোচনায় পাকিস্তানের ভূমিকা

গত সপ্তাহে কাবুল সরকারের সাথে আলোচনা শুরুর জন্য তালেবানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে আহ্বান জানানোর প্রেক্ষাপটে নতুন এই নিয়োগ প্রদান করা হলো। গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হয়েছিল, তার অন্যতম শর্ত ছিল কাবুল সরকারের সাথে তালেবানের আলোচনা।

বিবৃতিতে বলা হয়, আফগানিস্তানবিষয়ক বিশেষ মার্কিন দূত পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সাথে আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে শান্তি আলোচনা নিয়ে কথা বলেছেন।

আফগানিস্তানবিষয়ক বিশেষ মার্কিন দূত জালমি খালিলজাদ রোববার ইসলামবাদে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়ার সাথে আলোচনা করেছেন।

পাকিস্তান ২০১৮ সালে ওয়াশিংটন ও তালেবানের মধ্যে বিরল সরাসরি আলোচনার ব্যবস্থা করে। এর জের ধরে দোহায় দুই পক্ষের মধ্যে শান্তিচুক্তিটি হয়।

শান্তিচুক্তিতে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে। তালেবান যদি শান্তিচুক্তি পালন করে, তবে ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নেবে যুক্তরাষ্ট্র।

সামরিক বিশ্লেষক কামাল আলম বলেন, তালেবানের ব্যাপারে পাকিস্তানের ধারণা সবসময়ই একই রয়েছে। নাইন ইলেভেনের পর থেকেই আমেরিকানদের পাকিস্তান বলে আসছিল যে তালেবান ও আল কায়েদার মধ্য পার্থক্য আছে। আমাদেরকে অবশ্যই তালেবানের সাথে কথা বলতে হবে।

আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে আলোচনা খুবই প্রয়োজন

তালেবান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে শান্তিচুক্তি সই হওয়ার দুই মাস পর আফগানিস্তানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে এবং বিশেষজ্ঞরা শান্তিপ্রক্রিয়ার ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন।

আফগানিস্তানের এক কর্মকর্তা বলেন, শান্তিচুক্তির পর তালেবান প্রতিদিন গড়ে ৫৫টি করে হামলা চালাচ্ছিল।

তবে আফগানিস্তানে শান্তিপ্রতিষ্ঠা এখন খুবই দরকারি বিষয়। আর সেজন্য আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে আলোচনা প্রয়োজন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com