মিজানের দেখা মিলল এক পুলিশ কর্মকর্তার অফিসে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজান ঢাকা মহানগর এক পুলিশ কর্মকর্তার অফিসে অবস্থান করেন। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এমন চিত্র দেখতে পান গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। বিষয়টি সরকারের উচ্চ মহলকে জানানো হয়েছে।
১৯৮৯ সালে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাসায় হামলাকারীদের একজন মিজান। ঘটনার সময় তিনি ছিলেন ফ্রিডম পার্টির বড়ো নেতা। পাগলা মিজান নামেই সবাই তাকে চেনে। পরে ফ্রিডম পার্টি থেকে গিয়ে ভেড়েন আওয়ামী লীগে। তিনি এখন মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের আলোচিত-সমালোচিত নেতা।
১৯৮৯ সালের ১০ আগস্ট মধ্যরাতে ফ্রিডম পার্টির সদস্য কাজল ও কবিরের নেতৃত্বে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে হামলা চালায় ১০/১২ জনের একটি চক্র। তারা সেখানে গুলি করে এবং বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় শেখ হাসিনা বাড়ির ভেতর অবস্থান করছিলেন। বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীরাও পালটা গুলি চালায়। একপর্যায়ে হামলাকারীরা চলে যায়। এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা হয়। ১৯৯৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মামলার অভিযোগপত্র দেয়। এতে লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) সৈয়দ ফারুক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুর রশিদ ও মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) বজলুল হুদা এবং নাজমুল মাকসুদ মুরাদসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। অভিযোগপত্রে মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজানকে হামলার পরিকল্পনাকারীদের একজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মিজানের ছোটো ভাই মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফাও ছিলেন হামলাকারী দলের সদস্য।
পুলিশ কর্মকর্তার অফিসে মিজানের অবস্থান সম্পর্কে মহানগর পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেন, প্রায় দুই লাখ পুলিশ সদস্যের মধ্যে মাত্র কিছুসংখ্যক দুর্নীতিবাজ, অসত্ কর্মকর্তার কারণে পুরো পুলিশ বাহিনী এর দায়ভার বহন করতে পারে না। পুলিশ এত ভালো কাজ করছে, কিন্তু এসব সদস্যের কারণে সুনাম প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। অপরাধ হ্রাস, সন্ত্রাস-জঙ্গি দমন এবং দেশের উন্নয়নে পুলিশের ভূমিকাও কম নয়। সরকার প্রধান পুলিশের ভূমিকা প্রায়ই প্রশংসা করে থাকেন। এমনকি শান্তিরক্ষী মিশনেও বাংলাদেশ পুলিশের কর্মদক্ষতা, নিষ্ঠা, সততা ও পেশাদারিত্ব নিয়ে জাতিসংঘ মিশন কর্মকর্তারা প্রশংসা করে থাকেন। একটি দুষ্টচক্রের কারণে সকল অর্জন ম্লান হয়ে যায়। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।