এ সংকটে মানুষ বাঁচানোই হোক অগ্রাধিকার
করোনাভাইরাস সংক্রমণ বর্তমান বিশ্বে প্রলয়ের সৃষ্টি করেছে। অদৃশ্য একটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবাণুর আক্রমণ মোকাবিলায় বিশ্বে মানুষ আজ নিজ নিজ ঘরে স্বেচ্ছায় বন্দী। পরাশক্তিসহ সব দেশের সরকার এবং সরকারপ্রধানরা পরাস্ত ও অসহায়। প্রতিটি দেশের সব দল, পেশা, ধর্ম ও বর্ণের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই মারাত্মক ছোঁয়াচে ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে সমূহ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে। দেশে দেশে চলছে যুদ্ধাবস্থা। বাংলাদেশের ধীরগতিতে করোনাভাইরাস আশঙ্কাজনকভাবে বিস্তার লাভ করছে। বাংলাদেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গ্রামগঞ্জেও মারাত্মক এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। যারা এত দিন জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন, করোনাভাইরাস বাংলাদেশে কোনো ক্ষতি করতে পারবে না, ভাইরাসকে প্রতিহত করতে সব ব্যবস্থা করা হয়েছে, তারাও এখন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।
বিশ^ অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, যে দেশে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে, সে দেশ ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিহত করার জন্য সর্বশক্তি দিয়ে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রায় সব দেশই লকডাউন বা জরুরি অবস্থা জারি অথবা কারফিউ ঘোষণা করে জনগণকে যার যার ঘরে থাকতে বাধ্য করেছে। যেসব দেশ প্রাথমিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সেসব দেশ করোনাভাইরাস সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ এই প্রাথমিক বিষয়টি গুরুত্ব না দেওয়ায় এখন তাদের খেসারত দিতে হচ্ছে। অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশও এ ক্ষেত্রে প্রথম দিকে উদাসীন ছিল। তাই প্রস্তুতিতেও বিলম্ব হয়েছে। বাংলাদেশে ৮ মার্চ, ২০২০ তারিখে যখন এক ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানানো হয়, তখন করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য সরকারের কাছে মাত্র ১ হাজার ৭৩২টি পরীক্ষা কিট মজুদ ছিল। একটি পরীক্ষা কেন্দ্র আইইডিসিআর দিনে ২০ থেকে ২৫ জন সন্দেহভাজন করোনা রোগীকে পরীক্ষা করে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করে। আইইডিসিআর ২৯ মার্চ, ২০২০ তারিখে স্বীকার করেছে যে, করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শুরু থেকে ৫৫ দিনে মাত্র ১ হাজার ৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শুরু থেকেই বিশ^স্বাস্থ্য সংস্থা যেখানে নমুনা পরীক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশকে তাগিদ দিচ্ছিল, তখন বাংলাদেশে এ ক্ষেত্রে অবহেলা ও উদাসীনতা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রথম থেকে ব্যাপক নমুনা পরীক্ষা করতে পারলে হয়তো বর্তমানে যে বিস্তৃতি দেখা দিয়েছে, তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো। সরকার যতই প্রস্তুতির কথা বলুক না কেন, প্রকৃতপক্ষে সরকার প্রথম দিকে করোনাকে পাত্তাই দেয়নি। সরকারের মন্ত্রী ও নেতাদের বক্তব্যে তারই প্রতিফলন হয়েছে। যদি সরকার সত্যিকারভাবে প্রস্তুত থাকত, তাহলে শুরু থেকে এখনকার মতো ১৩-১৪টি কেন্দ্র থেকে নমুনা পরীক্ষা করতে পারত। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যসেবকদের পারসোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) সরবরাহ করতে পারত।
বিলম্বে হলেও সরকার ২৬ মার্চ, ২০২০ তারিখ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণার মাধ্যমে সামাজিক দূরত্ব সৃষ্টির পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং দুই দফায় সরকারি ছুটি ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করেছে। কিন্তু সরকারের সমন্বয়হীনতার কারণে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহর থেকে লাখো লাখো মানুষ রেল, লঞ্চ, বাস ও ফেরিতে গাদাগাদি করে গ্রামে যাওয়ার প্রতিযোগিতা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি করেছে। গত ৪ এপ্রিল, ২০২০ তারিখে গার্মেন্ট শিল্প দিনে খোলার ঘোষণা দিয়ে আবার রাতে বন্ধ ঘোষণা করায় লাখ লাখ গার্মেন্ট শ্রমিক রাস্তাঘাটে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়েছে। এতে তারা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়েছে। দরিদ্র গার্মেন্ট শ্রমিকরা তাদের চাকরি বাঁচাতে কাজে যোগদানের জন্য ফেরি, ট্রাক, পিকআপ ভ্যানে গাদাগাদি করে এবং দলবদ্ধভাবে দীর্ঘ পথ হেঁটে কর্মস্থল আসতে বাধ্য হয়েছে। সব পরিবহন বন্ধ থাকায় একইভাবে শ্রমিকদের ফেরত যেতে হয়েছে। শ্রমিকদের এই অমানবিক কষ্ট ও স্বাস্থ্যঝুঁকির জবাব কে দেবে? এ ঘটনায় সরকারের ব্যর্থতা ও সমন্বয়হীনতার নগ্ন প্রকাশ ঘটেছে। এ ছাড়া বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে যে গতানুগতিকভাবে ত্রাণকার্য পরিচালনা করা হচ্ছে, তা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ লঙ্ঘিত হচ্ছে। এতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ইতোপূর্বে নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য যেসব নির্দেশাবলি প্রদান করেছিলেন তাও মানা হচ্ছে না। এসব ক্ষেত্রে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে সরকারি নির্দেশাবলি ও বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে।
সর্দি, কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা না পেয়ে প্রতিদিন বেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। তাদের পরীক্ষার আওতায়ও আনা হচ্ছে না, আর অন্যদিকে কোনো চিকিৎসক তাদের কাছে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না। এদের মধ্যে যদি করোনা আক্রান্ত কেউ থেকে থাকে, তাহলে তার আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা অনেকেই ইতিমধ্যে হয়তো না বুঝে আক্রান্ত হয়েছে। পরীক্ষার অপ্রতুলতার জন্য ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এ ধরনের উপসর্গ যেসব রোগীর মধ্যে আছে, তাদের পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে।
দেশে বর্তমানে সাধারণ ছুটি চলছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ ও সরকারের নির্দেশ সত্যিকারভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে সাধারণ ছুটি যথেষ্ট পদক্ষেপ কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সবাইকে ঘরে থাকার বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করতে প্রশাসন বিভিন্ন স্থানে লোকজন রাস্তায় বের হলে তাদের জরিমানা এবং নানাভাবে হেনস্তা করছে। অন্যদিকে রাস্তায় গাদাগাদি করে মানুষকে অবস্থান নিতে (ত্রাণসামগ্রী নেওয়ার সময় বা কারখানা ও বাজারের সামনে) দেখা যাচ্ছে। যার ফলে সাধারণ ছুটিতে রাস্তায় বের হওয়া যাবে কিনা তা জনগণের কাছে পরিষ্কার নয়। প্রশাসনের কাছেও বিষয়টি সম্পর্কে দোদুল্যমানতা প্রকাশ পাচ্ছে। এমনি সংকট মোকাবিলায় বহুদেশ তাদের দেশে লকডাউন, কারফিউ ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। পাশের দেশ ভারত একসঙ্গে ২১ দিনের ‘লকডাউন’ ঘোষণা করে সবাইকে বাড়িতে থাকতে বাধ্য করছে। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় পুলিশ কর্তৃপক্ষ ঢাকা মহানগর থেকে বাইরে যাওয়া বা বাইরে থেকে ঢাকা মহানগরীতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। ঢাকার মিরপুর, বাসাবো, নারায়ণগঞ্জসহ পাঁচটি এলাকায় প্রশাসন ‘লকডাউন’ বা ‘অবরুদ্ধ’ ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের যে কোনো শহর বা গ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহজনক রোগী থাকলে সে এলাকাকে প্রশাসন ‘লকডাউন’ করে দিচ্ছে। একেক স্থানে একেক অবস্থায় প্রশাসন তাদের দায়িত্ব পূর্ণাঙ্গভাবে পালন করতে পারছে না। এ অবস্থায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের ‘উর্ধ্বলম্ফ’ সময়ের জন্য সারা দেশ ‘লকডাউন’ করা যায় কিনা তা সরকারকে জরুরিভাবে ভাবতে হবে।
গত ৫ এপ্রিল, ২০২০ তারিখে প্রধানমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে দেশের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলা করতে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। আগের দিন (৪ এপ্রিল, ২০২০) দেশের বৃহত্তম ও জনপ্রিয় দল বিএনপির পক্ষ থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দুর্যোগ-পরবর্তী আর্থিক পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ৮৭ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ প্রস্তাব করেছিলেন। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি, ভারতের প্রধানমন্ত্রীসহ প্রায় সব দেশ করোনা-পরবর্তী সময়ের জন্য তাদের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই সময়োপযোগী পদক্ষেপকে বিভিন্ন মহল প্রশংসা করেছে। তবে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যে সেক্টরটি মাঠে সম্মুখযুদ্ধে লড়াই করছে, সেই স্বাস্থ্য খাতে প্রণোদনা, সহায়তা ও করণীয় সম্পর্কে প্রথমে কোনো প্যাকেজ প্রদান উল্লেখ ছিল না। তবে আজ (৭ এপ্রিল, ২০২০ তারিখে) প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিশেষ বিমা প্রদানের কথা ঘোষণা করেছেন। তার প্রদত্ত পাঁচটি প্যাকেজে শিল্পকারখানাকে প্রণোদনা ও ব্যাংকসমূহকে সহায়তা করার কথা উল্লেখ আছে। করোনা প্রাদুর্ভাব-পরবর্তী অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় এসব কর্মপরিকল্পনা অবশ্যি আবশ্যক। অদৃশ্য শত্রুর আক্রমণে উদ্ভুত পরিস্থিতি-পরবর্তী সংকট মোকাবিলার কর্মপরিকল্পনার আগে, সেই শত্রুকে যুদ্ধে পরাজিত করার পরিকল্পনা অগ্রাধিকার দিতে হবে। যে কোনো দেশ কোনো যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে প্রথমে সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করা, যুদ্ধের ফ্রন্টে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো প্রস্তুত করা, গোলাবারুদ জোগান দেওয়া এবং সেনাবাহিনীর মনোবল চাঙ্গা রাখার জন্য যা প্রয়োজন তা-ই করে থাকে। প্রয়োজনে অন্য সেক্টরের খরচ কমিয়ে যুদ্ধের খরচ বৃদ্ধি করা যুদ্ধাবস্থায় প্রধান কাজ বলে বিবেচিত। করোনা নামক অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে যেসব চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যুদ্ধে লিপ্ত তাদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা সরঞ্জাম, জীবনে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করার প্রণোদনা, পর্যাপ্ত আইসিইউ ও ভেনটিলেটরসমৃদ্ধ হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা এবং করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার লক্ষ্যে আরও পরীক্ষাগার প্রস্তুত ও পরীক্ষা সরঞ্জাম (Test Kit) সরবরাহে ব্যবস্থা করা এখনই প্রয়োজন। মাঠে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দক্ষতার সঙ্গে যুদ্ধ পরিচালনা করতে হলে তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প্যাকেজে পুঁজিবাজার ও কৃষি সেক্টর স্থান পায়নি। করোনাভাইরাস সংক্রমণের আগ থেকে পুঁজিবাজার এক অন্ধকার গহ্বরে পতিত ছিল। এখন পুঁজিবাজার সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। পুঁজিবাজারের গতি ফিরিয়ে আনতে হলে এ সেক্টরেও প্রয়োজনীয় বরাদ্দ ঘোষণা করে শেয়ার-ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে আশার আলো জাগাতে হবে। কৃষি সেক্টর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা রাখে। করোনাভাইরাসের কারণে সবকিছু বন্ধ থাকায় বর্তমানে কৃষিকাজে বিঘ্ন ঘটছে। খাদ্য উৎপাদন অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে কৃষক যাতে বীজ, সার, সেচ ও কীটনাশক সুলভমূল্যে পায় এবং ক্ষেত্রবিশেষ প্রান্তিক চাষিরা যাতে বিনামূল্যে পায়, সেজন্য প্রণোদনা দিতে হবে। এ খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ এখনই দিতে হবে এবং কৃষক যাতে প্রণোদনা পায়, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
করোনাভাইরাসে সংক্রমণ বিষয়ে বিগত মার্চের শেষ পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন দোদুল্যমান পদক্ষেপ, ভাইরাস শনাক্ত করার জন্য পরীক্ষা কিটের অপ্রতুলতা এবং এ রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ঘোষণা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। অনেকের ধারণা, মার্চ পর্যন্ত সরকার করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের জন্য নয়, করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। অবশেষে অবস্থা এতই বেগতিক হয়েছে যে, সরকার পরীক্ষা কেন্দ্র বৃদ্ধি ও পরীক্ষা সংখ্যা বৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়েছে। ফলে বর্তমানে ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের সামনে একটিই চ্যালেঞ্জ- মানুষকে বাঁচাতে হবে। একদিকে করোনাভাইরাসের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করতে হবে, অন্যদিকে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কর্মহীন, দরিদ্র, খেটে খাওয়া ও ‘দিন আনে দিন খাওয়া’ মানুষগুলোকে বাঁচাতে হবে। এটা একটা বিশাল ও মানবিক কর্মযজ্ঞ। এ যুদ্ধে আমাদের অবশ্যই জিততে হবে। এ অবস্থায়, এই অদৃশ্য শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধে জয়ী হতে এবং দেশ ও জাতিকে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা করতে হলে দলমত, পেশা, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে একটি জাতীয় ঐকমত্যের প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। তার জন্য সরকারকে অতীতের সবকিছু ভুলে গিয়ে যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবার সহায় হোন।
লেখক : সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সদস্য, জাতীয় স্থায়ী কমিটি-বিএনপি এবং সাবেক অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, ভূ-তত্ত্ব বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।