করোনা মোকাবিলায় আজ সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরবে বিএনপি
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপের এখনও ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বলছেন, চলতি বছরের শুরুতে যখন করোনাভাইরাস চীনসহ বিভিন্ন দেশে ছড়াতে শুরু করে তখন আমাদের সরকার এটাকে মোকাবিলার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে একেবারে নিষ্ক্রিয় ছিল। পরিস্থিতির ভয়াবহতা দেখা দিলে এখন সরকার কিছু-কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই যথেষ্ট নয়। তাই বিএনপির পক্ষ থেকে বিভিন্ন সেক্টরভিত্তিক প্রস্তাবনা তুলে ধরা হবে। তা বাস্তবায়নে স্বল্প-দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং কী পরিমাণ বাজেটের দরকার হবে তারও ধারণা দেয়া হবে। বিএনপির পক্ষ থেকে শনিবার (৪ এপ্রিল) সংবাদ সম্মেলন করে এই প্রস্তাবনা দেয়া হবে বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ শুক্রবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আমরা সরকারকে অনেকগুলো প্রস্তাবনা দেব। কীভাবে এই ভাইরাস থেকে জনগণ ও দেশের অর্থনীতিকে সুরক্ষা দেয়া যায় তার জন্য দীর্ঘমেয়াদি, স্বল্প ও মধ্য মেয়াদি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হবে।’
মওদুদ আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি করোনা পরিস্থিতি মেকাবিলায় সরকার সম্পূর্ণভাবে নিষ্ক্রিয়। এতদিন পর তাদের জ্ঞান ফিরেছে। এখন তারা বলছে আরও শনাক্ত করতে হবে। জেলায় জেলায় শনাক্ত করতে হবে। বাড়িতে-বাড়িতে যেতে হবে। এসব কথা তারা কেন প্রথম দিকে বলে নাই। আগে সরকার একেবারেই নিষ্ক্রিয় ছিল, অত্যন্ত উদাসীন ছিল। তাদের এমন একটা ভাব ছিল যে, করোনা মনে হয় বাংলাদেশে আসবে না বা আক্রমণ করবে না। তারা যে ভুলে ছিল, সেটা এখন বুঝতে পারছে। আমরা কালকে (শনিবার) সব প্রস্তাবনা তুলে ধরব।’
প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও শ্রমজীবী মানুষের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা থাকবে বলেও জানান মওদুদ আহমদ।
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, শনিবার (৪ এপ্রিল) বেলা ১১টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করবেন। করোনাবিষয়ক সতর্কতার কারণে সংবাদ সম্মেলনটি ফেসবুকের মাধ্যমে সম্প্রচার করা হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক নেতা জানান, দলের স্থায়ী কমিটির একজন নেতার নেতৃত্বে দলের বুদ্ধিজীবীরা এই প্রস্তাবনা তৈরি করেছেন। গত এক এপ্রিল দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সেই প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। প্রস্তাবনায় করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যে অঙ্কের বাজেটের কথা বলা হয়েছে তা নিয়ে আপত্তি তুলে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তা সংশোধন করার প্রস্তাব দেন। কারণ, বাজেট দিলে তো হবে না, সরকার কোথা থেকে সেই টাকা সংগ্রহ করবে, তারও নির্দেশনা থাকতে হবে প্রস্তাবনায়। এ ছাড়া প্রস্তাবনায় ডাক্তারদের জন্য বীমা, শ্রমজীবীদের জন্য ভাতা, শিল্প উদ্যোক্তা, ব্যাংক ঋণগ্রহীতা ও চিকিৎসাসামগ্রী আমদানিতে কর ছাড় নিয়েও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা থাকবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, সংবাদ সম্মেলনে পুরো পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি বক্তব্য তুলে ধরবে। সেখানে প্রতিটি সেক্টরভিত্তিক বিএনপির পক্ষ থেকে প্রস্তাবনা তুলে ধরা হবে। সেগুলো বাস্তবায়নে কী পরিমাণ অর্থের দরকার হবে তারও ধারণা দেয়া হবে। কোন কোন খাত থেকে সেই টাকা সরকার সংগ্রহ করতে পারবে তাও তুলে ধরা হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, বিএনপি তার অবস্থান শনিবার তুলে ধরবে। সেখানে সরকার কীভাবে এই করোনাভাইরাস মোকাবিলা করতে পারে, তাও আমাদের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হবে।