স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট আইকনের শেষ ভুল

0

দিনকাল আমার কেমন চলছে, এ কথা ভাবার সময় কদাচিত হয়ে ওঠে না। যতদূর মনে পড়ে, সেই বালক বেলা থেকেই আমি নিদারুণ ব্যস্ত সময় কাটাই। অবসর অলসতা এবং এতদসংক্রান্ত বিনোদন কিংবা বিষাদগ্রস্ততা সাধারণত আমাকে স্পর্শ করে না। আমি সর্বদাই ত্রিমাত্রিকভাবে নিজেকে ব্যস্ত রাখি। আমার মন- মস্তিষ্ক এবং শরীর এই তিনটি সত্ত্বাকে সর্বদা জাগ্রত রাখিÑ ব্যস্ত, রাখি এবং পর্যাপ্ত ঘাম ছোটানো পরিশ্রম করাই। ফলে সমাজ সংসারের অনাহূত ভয়ভীতি, দাঙ্গা ফ্যাসাদ, স্বার্থের দ্বন্দ্ব এবং এতদসংক্রান্ত মানসিক ও শারীরিক অশান্তি আমাকে সচরাচর পীড়িত করে না। খুব বেশি আনন্দ-উল্লাস-হইহুল্লোড় ইত্যাদির মধ্যে যেমন চুপচাপ থাকতে পারি ঠিক তেমনি চরম বিরূপ পরিস্থিতিতেও প্রশান্ত মনে স্মিত হাস্যে সুন্দর আগামীর জন্য অপেক্ষা করতে পারি। আমার এই অভ্যাসটি বর্তমানকালের বৈশ্বিক আতঙ্কের মধ্যে কিভাবে চালু রয়েছে তা আজকের নিবন্ধটি পড়লেই সম্মানিত পাঠক বুঝতে পারবেন।

বিশ্বজুড়ে চলমান করোনা আতঙ্কের মধ্যেও আমি দিব্যি আমার নিত্যনৈমিত্তিক কাজ করে যাচ্ছি। পরিস্থিতির কারণে কিছু কিছু ব্যস্ততা এখন আর আগের মতো নেই- কিন্তু নতুন নতুন কাজ দিয়ে আমি পূর্বতন ব্যস্ততার শূন্যস্থানগুলো ভরাট করে ফেলেছি। বর্তমান পরিস্থিতিটি আমি প্রায় বছর খানেক আগেই আন্দাজ করেছিলাম। আমার সেই চিন্তাকে ভিডিও আকারে প্রায় সাত মাস আগে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে প্রচার করেছিলাম যার শিরোনাম ছিল- দুর্ভিক্ষ এবং অর্থনৈতিক মহামারীর পূর্বাভাস। যারা নিয়মিতভাবে আমার ইউটিউব চ্যানেল দেখেন অথবা ফেসবুক, টুইটার এবং লিংক্ডইন-এ আমাকে অনুসরণ করেন তারা নিশ্চয়ই ভিডিওটি দেখেছেন। এই ভিডিও করার আরো আগে- তা প্রায় দশ মাস আগে আরেকটি ভিডিও করেছিলাম যার শিরোনাম ছিল- বাংলাদেশের জন্য অশনি সঙ্কেত!


বাংলাদেশে আমার পর্যায়ে অন্য যারা রয়েছেন তারা সর্বদা কী করেন তা জানি না। কিন্তু আমি কোনো বিষয়ে উপদেশ দেয়ার আগে সেই উপদেশটি নিজে অনুসরণ করি। আমার এই অভ্যাসের কারণেই গত এক বছরে আমার ব্যবসা, অর্থনৈতিক দায়-দেনা, সামাজিক সম্পর্ক এবং চিন্তা-চেতনা কাটছাঁট করতে করতে এমন একটি জায়গায় নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি ঠিক যেমনটি করে থাকে সাইমুমের কবলে পড়া উট। ফলে করোনা আতঙ্কের মধ্যেও আমি আরো অনেকের তুলনায় ভালো আছি। আমি আধুনিকতা, বিজ্ঞান, ধর্মবোধ এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির বাস্তবতা মেনে নিয়ে যতটা সম্ভব রোগটি থেকে নিজের মন-মস্তিষ্ক ও দেহ বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। লক্ষ্য করছি যে, আমাদের সমাজের একশ্রেণীর লোক করোনা সম্পর্কে একেবারেই অবগত নন। ফলে তারা খেয়াল-খুশি মতো চলাফেরা করে যেমন নিজেকে বিপদে ফেলছেন- তেমনি অন্যকেও বিপদে জড়াচ্ছেন। বিপরীত দিকে এমন মানুষও আছেন যারা আবার সবকিছু একটু বেশি বুঝে ফেলেছেন। ফলে এসব লোক মৃত্যুভয়ে ভীত হয়ে এমন সব বাড়াবাড়ি শুরু করেছেন যা রীতিমতো হাস্যকর।

যা বলছিলাম; করোনার কারণে ব্যবসাবাণিজ্য তথা অর্থ উপার্জন সংক্রান্ত ব্যস্ততা নেই। এই সময়টুকুতে আমি পড়াশোনা, জানা-দেখা এবং বিভিন্ন বিষয়াদি গভীর মনোযোগসহকারে বিচার বিশ্লেষণ করার কাজে বেশি সময় অতিবাহিত করছি। এরই প্রেক্ষাপটে ফ্যাসিবাদ নিয়ে পড়াশোনা করছিলাম এবং বিশ্ব ফ্যাসিবাদের জনক-ইতালির বেনিতো মুসোলিনি সম্পর্কে একটি প্রমাণ্যচিত্র দেখছিলাম। দুনিয়াতে ফ্যাসিবাদের উত্থানের নেপথ্য কারণ এবং ফ্যাসিবাদীদের বিজয় ও দুর্ভাগ্যজনক পরিণতি সম্পর্কে কেউ যদি জানতে চান তবে মুসোলিনি সম্পর্কে জানলেই যথেষ্ট। কেউ যদি মুসোলিনির দুঃখ-দুর্দশা তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং নির্মম পরিণতি সম্পর্কে অধ্যয়ন করেন তবে আমার বিশ্বাস পৃথিবীর সব ধনসম্পদ দিয়েও যদি আপনাকে প্রলুব্ধ করা হয় তবে আপনি মুসোলিনি হতে চাইবেন না অথবা মুসোলিনির সহযোগী, সাহায্যকারী কিংবা সঙ্গী-সাথী হতে আগ্রহী হবেন না। অন্য দিকে, আপনি যদি মুসোলিনির চরিত্র সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হন তবে খুব সহজে শিশুকাল থেকেই অনেককে বিকিয়ে দিতে পারবেন যারা হয়তো বাড়তে বাড়তে একদিন ভয়ঙ্কর ফ্যাসিবাদী দানবে পরিণত হবে।

আজকের নিবন্ধে মুসোলিনির ব্যক্তিগত জীবনের আলেখ্য কিংবা তার ফ্যাসিবাদী দর্শন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যাবো না। তার জীবনের কয়েকটি ভুল সিদ্ধান্ত এবং কয়েকটি কুকর্ম পর্যালোচনার মাধ্যমে আজকের শিরোনামের যথার্থতা প্রমাণের চেষ্টা করব। মুসোলিনি যে সময় ফ্যাসিবাদের নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন তখন ইতালি সার্বিক দিক থেকে ইতিহাসের জঘন্যতম সময় পার করছিল। প্রথম মহাযুদ্ধের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় ইতালির রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক সংহতি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছিল। অসৎ রাজনীতিবিদ, চোরাকারবারি, সন্ত্রাসী মাফিয়া এবং চোর ডাকাতের দৌরাত্ম্যের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছিল দুর্ভিক্ষ, সামাজিক অস্থিরতা, বিভিন্ন প্রকার রোগবালাই এবং মহামারীর প্রকোপ। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর একজন সাধারণ মানুষ সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থাৎ ছোট অপরাধের জন্য বৃহৎ শাস্তিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিল। খুন-ধর্ষণ রাহাজানি ইত্যাদি এত বেশি মাত্রায় হতো যে- ওগুলো নিয়ে মানুষের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতো না।



ইতালির উল্লিখিত সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থায় বেনিতো মুসোলিনি হঠাৎ করেই একটি সংগঠন গড়ে তোলেন এবং সেই সংগঠনটির মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী কার্যক্রম শুরু করেন। আপনারা শুনে হয়তো অবাক হবেন যে, ব্যক্তিগত জীবনে মুসোলিনি একজন সাংবাদিক ছিলেন। প্রথমে তিনি ইতালির অত্যন্ত নামকরা একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক ছিলেন এবং পরে নিজেই পত্রিকা প্রকাশ করে সম্পাদক কাম প্রকাশক হয়ে যান। তার সম্পর্কে দ্বিতীয় অবাক করা বিষয় হলো, ফ্যাসিবাদ কিন্তু মুসোলিনির নিজস্ব মতবাদ নয়। এই মতবাদের প্রবক্তা ছিলেন বেশ কয়েকজন যারা মুসোলিনির জন্মের আগেই তাদের মতবাদ প্রচার করেছিলেন। পুরো ইউরোপে ফ্যাসিবাদী মতাদর্শ ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিল কিন্তু কোথাও প্রচারিত ছিল না। মুসোলিনিই প্রথম মতবাদটি সামাজিকভাবে চালু করেন এবং পরে রাষ্ট্রক্ষমতা লাভ করার পর রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করে পৃথিবীর ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম অভিশপ্ত মানুষরূপে আখ্যা পান।

ফ্যাসিবাদের তত্ত্ব কথা বুঝাতে গেলে আজকের নিবন্ধ হয়তো কারো কারো কাছে দুর্বোধ্য বলে মনে হতে পারে। কাজেই পাঠকদের সুবিধার্থে এটিকে পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি অথবা চারু মজুমদারের নকশালের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। সিরাজ সিকদার অথবা চারু মজুমদার যে সর্বহারা পার্টি বা নকশাল আন্দোলন চালু করেছিলেন, যা মূলত ফ্যাসিবাদের সেসব কাণ্ডকারখানা ছিল যেগুলো মুসোলিনি শুরু করেছিলেন তার জীবনের প্রারম্ভে। তিনি যুবকদের নিয়ে একটি গোপন সংগঠন গড়ে তোলেন, যারা রাতের আঁধারে ইতালির দুর্নীতিবাজ আমলা, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, ধর্মপ্রচারক এবং সমাজ সংসারের বিতর্কিত ও ঘৃণিত নারী-পুরুষদের একের পর এক হত্যা করতে শুরু করে। ফলে মুসোলিনির গোপন সংগঠনটি কয়েক মসের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়ে গেল এবং সারা দেশে সংগঠনটির সদস্য সংখ্যা পাঁচ লাখে উন্নীত হলো। মুসোলিনি এবার দেশটির সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হলেন এবং বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন।

এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর মুসোলিনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে তার সংগঠনের মাধ্যমে এমন অরাজকতা সৃষ্টি করলেন যা সামাল দেয়ার জন্য রাজা তৃতীয় ভিক্টর ইমানুয়েল তাকে ইতালির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিতে বাধ্য হন। ১৯২২ সালের ৩১ অক্টোবর নজিরবিহীনভাবে ইতালির ২৭তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মুসোলিনি যে তাণ্ডবময় যাত্রা শুরু করেছিলেন তা শেষ হয় তার মর্মান্তিক এবং হৃদয়বিদারক মৃত্যুর মধ্য দিয়ে। মুসোলিনিকে নিয়ে যারা গবেষণা করেছেন তারা লিখেছেন যে, শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন অদ্ভুত রকমের নিষ্ঠুর এবং সাঙ্ঘাতিক প্রকৃতির সাহসী। ছিলেন মারাত্মক বেপরোয়া এবং আগা-মাথা চিন্তা না করেই হুটহাট সিদ্ধান্ত নিতেন। তিনি প্রেমের মধ্যে গরল ফেলে দিতেন এবং যুদ্ধের মধ্যে প্রেমের বাদ্য বাঁচানোর চেষ্টা করতেন। তার পারিবারিক জীবন-যৌন জীবন এবং সামাজিক জীবন ছিল নিষ্ঠুরতায় ভরা। তিনি দুর্দান্তভাবে মেয়েদেরকে আকৃষ্ট করতে পারতেন কিন্তু তার সঙ্গে কেউ অন্তরঙ্গ হলে দ্বিতীয়বার কোনো রমণী ওপথে পা বাড়াত না।



গবেষকরা উল্লেখ করেছেন যে, মুসোলিনি কয়েক শত রমণীকে শয্যাসঙ্গী করেছেন এবং প্রত্যেককে বিছানায় নিয়ে বেদম প্রহারে রক্তাক্ত করে ধর্ষণের মতো জৈবিক লালসা চরিতার্থ করেছেন। তিনি তার প্রথম স্ত্রীকে মেরে ফেলেছিলেন। দ্বিতীয় স্ত্রীকে গুম করেছিলেন এবং একমাত্র পুত্রটিকে বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলে ছিলেন। তিনি নিজেকে জুলিয়াস সিজার ভাবতেন এবং স্বপ্ন দেখতেন সিজারের অধীন যে সাম্রাজ্য ছিল সেই রকম একটি সামাজ্য গড়ে তোলার। এই লক্ষ্যে তিনি প্রথমেই ইতালির সাবেক কলোনি লিবিয়া আক্রমণ করে নির্বিচার গণহত্যা চালান এবং দেশটির অর্ধেক লোকসংখ্যা গুলি করে মেরে ফেলেন। তারপর তিনি পাঁচ লাখ সৈন্য পাঠিয়ে একইভাবে নুবিয়া অর্থাৎ ইথিওপিয়ায় তাণ্ডব চালান। এরই মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে তিনি হিটলারের সাথে মিত্রতা বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং জার্মানি ভ্রমণে আসেন।

হিটলারের সাথে প্রথম সাক্ষাতের পর মুসোলিনি হিটলারকে একজন অযোগ্য ভাঁড় মনে করলেন এবং এ কথা ভেবে আত্মতৃপ্তি অনুভব করলেন যে, আগামীতে তিনি যখন সিজার হবেন তখন হিটলারকে তার গভর্নর হিসেবে জার্মানির দায়িত্ব দেবেন। এর কয়েক বছর পর তিনি যখন পুনরায় জার্মানি ভ্রমণে এলেন তখন হিটলার সম্পর্কে তার আগের ধারণা পাল্টে গেল। তিনি হিটলারের নেতৃত্ব গুণ এবং অতি অল্প সময়ের মধ্যে জার্মান সেনাবাহিনীর চৌকস হয়ে ওঠা দেখে রীতিমতো ভয় পেয়ে গেলেন। তার মনে উল্টো এই আশঙ্কা দেখা দিল যে, তিনি যদি হিটলারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যুদ্ধে জয় করতে না পারেন তবে হিটলার অচিরেই ইতালি দখল করে বসবেন। মুসোলিনি দ্বিতীয় দফার জার্মানি ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে এলেন এবং কোনোরকম চিন্তাভাবনা না করেই গ্রিস আক্রমণ করে বসলেন।

গ্রিস আক্রমণ করতে গিয়ে মুসোলিনি তার ভুল বুঝতে পারলেন। তিনি তার সামরিক দুর্বলতা এবং উচ্চাকাক্সক্ষার পার্থক্য অনুধাবন করতে পারলেন। তিনি বুঝতে পারলেন যে, দুর্বল লিবিয়া এবং ইথিওপিয়ায় সৈন্য পাঠিয়ে গণহত্যা চালানো এবং শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সাথে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করা এক জিনিস নয়। গ্রিসে লাখ লাখ সৈনের ইতালীয় বাহিনী আটকা পড়ল এবং মুসোলিনি শোচনীয়ভাবে পরাজিত হলেন। এ অবস্থায় হিটলার এগিয়ে এলেন। জার্মান বাহিনী গ্রিস দখল করে মুসোলিনির বাহিনীকে উদ্ধার করল। এই পরাজয়ের ফলে ইতালিতে মুসোলিনিভীতি কেটে গেল। তার আশপাশের লোকজন তাকে ক্ষমতাচ্যুত এবং বন্দী করে ফেলল। হিটলার পুনরায় মুসোলিনিকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এলেন। তিনি ইতালিতে অভিযান চালিয়ে মুসোলিনিকে উদ্ধার করলেন এবং তার অধীনস্থ গভর্নররূপে নিয়োগ দিলেন। হিটলার মুসোলিনিকে নির্দেশ দিলেন ইতালিতে বসবাসরত সব ইহুদিকে নির্বিচারে মেরে ফেলার। এছাড়া, মুসোলিনিকে যারা বন্দী করেছিল তাদেরকেও মেরে ফেলার হুকুম দিলেন হিটলার। একজন অধীনস্থ গভর্নররূপে মুসোলিনির সাধ্য ছিল না হিটলারের হুকুম অমান্য করার। ফলে যুদ্ধবাজ হিটলারের একের পর এক নির্দেশ পালন করতে গিয়ে মুসোলিনি পুরো ইতালিকে জাহান্নাম বানিয়ে ফেললেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিনটি পর্যন্ত মুসোলিনি-হিটলারের সেবা দাসরূপে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই মহাযুদ্ধে যখন হিটলারের পতন ঘটল তখন মুসোলিনি তার রক্ষিতা এবং কয়েকজন বিশ্বস্ত সঙ্গীসহ পালিয়ে যেতে চাইলেন। তিনি খুবই সতর্কতার সাথে ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন। কিন্তু ভুল করে অথবা বেখেয়ালে এমন একটি জামা পড়েছিলেন যেখানে হিটলারের নাৎসি বাহিনীর মনোগ্রাম অঙ্কিত ছিল। ফলে মিত্রবাহিনীর একটি চেকপোস্টে তিনি ধরা পড়ে গেলেন এবং সৈন্যরা তাকে এবং তার সহযোগীদের কাল বিলম্ব না করে গুলি করে হত্যা করে। এরপর তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীতে এবং জনসাধারণের ঘৃণা জানানোর জন্য সেই লাশ কয়েক দিন ধরে ফাঁসিতে লটকিয়ে রাখা হয়।
লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com