দুই কোটি দরিদ্র মানুষের কাছে খাবার পৌছে দেয়ার আহবান বিএনপির
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন ,’বাংলাদেশের প্রায় ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ২০ শতাংশ অর্থাৎ তিন কোটি ৪০ লাখ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। এর মধ্যে প্রায় দুই কোটি মানুষের অবস্থান অতি দারিদ্র্যসীমার নিচে। তাদের কাছে খাদ্য সাহায্য পৌঁছে দিতে হবে। ‘
আজ দুপুরে তিনি নয়াপল্টন অফিসে এক ভিডিও কনফারেন্সর মাধ্যমে সরকারের প্রতি এ আহবান জানান।
এ সময় রিজভী বলেন, সরকারের পর্যাপ্ত উদ্যোগ ও আন্তরিকতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন দেশের ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে এই সরকার দরিদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য কিছুই করছে না। আওয়ামী লীগের নেতা, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী ধনিক শ্রেণীর জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনার কথা বলছে সরকার। তাতে সব চেয়ে দুরাবস্থায় পতিত সাধারণ নাগরিকদের দুর্দশা লাঘব করবে কে ?
রিজভী বিদেশ ফেরতদের করোনা শনাক্তের ওপর জোড় দেয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন পথে ৬ লাখ ৬৫ হাজার ১৩ জন দেশে প্রবেশ করেছেন।
শেষ দুই সপ্তাহে এসেছেন পৌনে দুই লাখ মানুষ। এ ছাড়া এ পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতর ও আইইডিসিআরের হট নম্বরগুলোয় সহায়তা চেয়ে ফোনকল এসেছে ৮ লাখ ২ হাজার ৫৮০ জনের। এ পর্যন্ত পরীক্ষা করা হয়েছে মাত্র এক হাজার ৭৬ জনের। বাকি লোকদের ভেতর কতজন আক্রান্ত তা কেউ বলতে পারছে না। শনাক্তের বাইরে থাকা লোকগুলো সমাজে মেলামেশা করছেন। নিজের অজান্তেই ছড়িয়ে দিচ্ছে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সরকারের ভূমিকা এবং জনগণের জীবনযাপন প্রক্রিয়ায় কয়েকদিনের মধ্যেই এটি চতুর্থ স্তর বা মহামারীতে পরিণত হতে পারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যত দ্রুত সম্ভব শনাক্ত রোগীদের সংস্পর্শে আসা (কন্ট্রাক ট্রেসিং) সবাইকে পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি পালিয়ে না থেকে জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানায়, দেশে এখন পর্যন্ত ৪৮ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে পাঁচজন মারা গেছেন।
সুস্থ হয়েছেন ১৫ জন এবং বর্তমানে চিকিৎসাধীন ২৮ জন। প্রতিদিন হাজার হাজার কল পাচ্ছে আইইডিসিআর। যার প্রত্যেকটি কলই করোনা সক্রান্ত বলে জানিয়েছেন জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক। এদের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজনের পরীক্ষা করা হচ্ছে। আইইডিসিআর করোনা পরীক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্বই দিচ্ছে না। এই পর্যাপ্ত পরীক্ষা করার সুযোগ না থাকায় ঝুঁকি বাড়ছে।
অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বারবার বলে আসছে, করোনা আক্রান্তদের শনাক্ত করতে যত বেশি সম্ভব পরীক্ষা করতে হবে। অর্থাৎ যত বেশি মানুষের লালা-রসের নমুনা পরীক্ষা করা যাবে, জানা যাবে সংক্রমিত হয়েছেন কিনা, ততো তাড়াতাড়ি তাদের আইসোলেশনে রাখা যাবে।
তাতে কমবে সংক্রমণের মাত্রা। আপনারা জানেন, দ্রুত পরীক্ষা করার বন্দোবস্ত থাকায় সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়ায় সংক্রমণ তেমন ব্যাপক আকার নিতে পারেনি। আর এই সুযোগ না থাকার ফলেই ইতালি, স্পেন, যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, দ্রুত চিহ্নিত না করতে পারলে সংক্রমণ ঠেকানো মুশকিল। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশেও পর্যাপ্ত পরীক্ষা করার সুযোগ না থাকায় দিন দিন বাড়ছে ঝুঁকি। সরকার বাসা থেকে রোগীর নমুনা সংগ্রহ করার কথা বললেও কোন অগ্রগতি নাই।