এটিএম আজহারকে মৃত্যু পরোয়ানা শুনানো হয়েছে

0

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে ট্রাইবুনালের জারি করা মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শুনানো হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আজহারুল ইসলামকে তার মৃত্যু পরোয়ানার আদেশ পড়ে শুনিয়েছেন কারা কর্তৃপক্ষ।

গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধের মামলায় ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম এ কারাগারের কনডেম সেলে বন্ধি আছেন। উচ্চ আদালতে এটিএম আজহারুল ইসলামের ফাঁসি বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে পৌঁছলে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যু পরোয়ানার আদেশ লাল কাপড়ে মুড়িয়ে সোমবার প্রথমে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জে পাঠানো হয়। পরে রাতে তার মৃত্যুদন্ডের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ওই কারাগার থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে গাজীপুরে কাশিমপুরের হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে এ পৌঁছে।

রাতে এটিএম আজহারুল ইসলাম ফাঁসির সেলে লকআপে চলে যাওয়ায় রাতে তাকে আর ওই মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শুনানো হয়নি। মঙ্গলবার সকালে তা পড়ে শুনানো হয়।

এসময় তিনি অনেকটাই স্বাভাবিকই ছিলেন বলে জানায় কারা কর্তৃপক্ষ। রায় পড়ে শুনানোর সময় কারাগারের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এসময় এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, আইনজীবী ও স্বজনদের সাথে কথা বলে ওই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করার সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তা জানান, এখন নিয়ম অনুযায়ী আসামিপক্ষ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবেন। রিভিউ নিষ্পত্তি হওয়ার আগে দণ্ড কার্যকর করা যাবে না। আসামিপক্ষ রায়ের সার্টিফায়েড কপি পাওয়ার পর থেকে সেই দিন গণনা শুরু হবে।

এই ১৫ দিনের ভেতরে তাকে রিভিউ পিটিশন দায়ের করতে হবে। রিভিউ পিটিশনের রায়ের উপরই নির্ভর করবে দণ্ড প্রক্রিয়ার পরবর্তী কার্যক্রম। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন না করলে যেকোনো দিন রায় কার্যকর হতে পারে। রিভিউ আবেদন খারিজ হলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আজহারুল ইসলামের রাষ্ট্রপতির কাছে অপরাধ স্বীকার করে প্রাণভিক্ষা চাইতে হবে। তিনি যদি প্রাণভিক্ষা না চান এবং চেয়েও যদি ক্ষমা না পান তাহলে রায় কার্যকরের ক্ষণগণনা শুরু হবে। রায় কার্যকরের আগে তিনি শেষবারের মতো পরিবারের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন।

একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ২২ আগস্ট এ টি এম আজহারকে মগবাজারের বাসা থেকে থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরের বছর (২০১৩ সাল) ১২ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ট্রাইব্যুনালে শুরু হয় তার যুদ্ধাপরাধের বিচার। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে এ টি এম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেন। জামায়াতের এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলকে একই সাথে ৩০ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। গত বছরের ৩১ অক্টোবর তার সেই সাজা বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। রোববার (১৫ মার্চ) আপিলের ওই রায়ে পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পৌঁছানোর পর তার বিরুদ্ধে মৃত্যুপরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। এরপরই মৃত্যুপরোয়ানা কারাগারে পাঠানো হয়।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com