বিএনপির ওয়াকআউটের কারণ জানালেন সালাহউদ্দিন আহমেদ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করে পরে আবারও যোগ দিয়েছে বিএনপি। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বৈঠক থেকে তারা ওয়াক আউট করে।
সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ২০তম দিনের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক বেলা ১১টার দিকে শুরু হয়।
কিন্তু এক পর্যায়ে সরকারি কর্ম কমিশন, দুদক, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগ ইস্যুতে আলোচনা থেকে ওয়াকআউট করে বিএনপি।
এ বিষয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে গঠনের ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি। এরপরও সাংবিধানিক ও আইন দ্বারা পরিচালিত পদগুলোতে নিয়োগ নিয়ে ভিন্ন ভাবনার প্রয়োজন নেই।
এতে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা সীমিত হবে এবং তা রাষ্ট্র পরিচালনায় জটিলতা সৃষ্টি করবে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির অন্যতম জ্যেষ্ঠ এই নেতা।
তবে এসব অগ্রগতির মধ্যেও নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি যেমন সংসদের কাছে, তেমনি জনগণের কাছেও রয়েছে। কিন্তু যদি কর্তৃত্ব না থাকে, কেবল দায়িত্ব আর জবাবদিহি থাকে, তাহলে তা কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যথেষ্ট নয়।
সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানসমূহের নিয়োগে নির্বাহী বিভাগের হাত-পা বাঁধা হলে তা ভবিষ্যতের জন্য বাধা সৃষ্টি করতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে নির্বাহী বিভাগকে শক্তিশালী হতে হবে, দুর্বল নয়, বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা সংলাপে অংশ নিচ্ছে একটি গঠনমূলক লক্ষ্য নিয়ে, তবে যেখানে মৌলিক দ্বিমত রয়েছে, সেখানে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকা বা মতপার্থক্য প্রকাশ করাও গণতন্ত্রের ভাষা।
তিনি বলেন, সব বিষয়ে ঐকমত্য হবে এমন দাবি কেউ করেনি। দ্বিমত থাকবে, ভিন্নমত থাকবে, আর সেগুলোর মধ্য দিয়েই তো গণতন্ত্রের সংগ্রাম এগিয়ে যায়। আমরা মনে করি না যে ‘নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে কাউকে ঐকমত্যে বাধ্য করা উচিত। ঐকমত্যের অর্থই হচ্ছে সকলকে সঙ্গে নিয়ে পথচলা। বিএনপি অংশ না নিলে কীভাবে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে, সেটি নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়।
সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আমাদের দলীয় অবস্থান থেকে সরে এসে নির্বাচন কমিশন গঠনে একমত হয়েছি। একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে থাকবেন বলেও একমত হয়েছি। কিন্তু সব জায়গায় যদি নির্বাহী বিভাগের হাত-পা বেঁধে দেওয়া হয়, রাষ্ট্র ফাংশন করবে কী করে? এজন্য এই আলোচনা থেকে আমরা ওয়াকআউট করেছি।
বক্তব্য শেষে সালাহউদ্দীন আহমেদ জানান, সংলাপের পরবর্তী পর্যায়ে বিএনপি অংশ নেবে এবং ইতিবাচক আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকবে।