অনেক কাজের কাজি পিয়া
মডেল, উপস্থাপক ও অভিনেত্রী পিয়া জান্নাতুল। মূলত মডেলিং নিয়েই তার ব্যস্ততা। পাশাপাশি অভিনয় করছেন। গত পরশু অনুষ্ঠিত ‘ফেইস অব বাংলাদেশ’ শিরোনামের একটি আন্তর্জাতিক বিউটি প্রেজেন্টের বিচারক ছিলেন তিনি। অল্প বয়সে এ ধরনের বড় প্রতিযোগিতার বিচারকাজ করতে কোনো চ্যালেঞ্জ অনুভব করেন কিনা জানতে চাইলে পিয়া খুব জোরের সঙ্গেই বললেন ‘দেখেন, আমার বয়স কত তা দিয়ে কিন্তু সব বিচার করলে হবে না। আমি ১৬ বছর বয়স থেকে মডেলিং করছি। বিশ্বের বড় বড় অনেক বিউটি প্রেজেন্টে অংশ নিয়েছি। এরপর দেশের একাধিক বিউটি প্রেজেন্টে বিচারক হয়েছি। শুধু তাই নয়, বাহরাইনের একটি বিউটি প্রেজেন্টেরও বিচারক ছিলাম আমি। সুতরাং আমার এ বিষয়ে অনেক বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই কোন প্রতিযোগীর কাজ ভালো, মেধা বেশি সেগুলো সহজেই বুঝতে পারি। তাই আমি এ নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ অনুভব করি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমি চ্যালেঞ্জ অনুভব করি প্রতিযোগীর মানসিক অবস্থা বিচার করতে গিয়ে। কারণ আমরা বিউটি প্রেজেন্টে প্রতিযোগীদের বিচার করার জন্য খুব বেশি সময় পাই না। তাই তাদেরকে আমরা নির্বাচন করি একটু আলাদাভাবে। যারা অনেক মেধাবী, কিন্তু কাজটির প্রতি যত্ন বা উৎসাহ কম তাদেরকে সাধারণত আমরা বাদ দিই। যাদের মধ্যে মেধাও আছে আবার কাজটি ভালোবাসে তাদেরকে নির্বাচন করি। কারণ, একজন মডেল তৈরি করতে ইন্ডাস্ট্রির অনেক সময়, শ্রম ও অর্থ ইনভেস্ট করতে হয়। কিন্তু সে যদি কিছুদিন পর হারিয়ে যায়, তাহলে তো পুরো প্রক্রিয়াটাই ব্যর্থ।’
বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পর পিয়াকে আর উপস্থাপনায় দেখা যায়নি। তিনি বলেন, ‘আমি ক্রিকেট ছাড়া খুব বেশি উপস্থাপনা করি না। মাঝেমধ্যে দু-একটি ট্রাভেল শো বা করপোরেট শো করেছি। কিন্তু হরহামেশা এগুলো করতে থাকলে আমার অন্য কাজই হবে না। কারণ শোবিজের বাইরে আমার একাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সম্প্রতি গুলশান-২-এ ল্যাবিস বুটিক স্যালন নামে একটি বিউটি পার্লার খুলেছি। আশা করছি আমার এই ব্যবসাটিও ভালো করবে।’
অভিনয়ের ব্যাপারে খুবই খুঁতখুঁতে পিয়া। তাই সিনেমা-নাটক যাই করেন না কেন খুব ভেবেচিন্তে রাজি হন। তার ‘চোরাবালি’ সিনেমাটি সফল হয়েছিল। তাই সিনেমায় আগ্রহ বেড়েছিল। কিন্তু এখন সিনেমার সামগ্রিক পরিবেশ নিয়ে তিনি বেশ চিন্তিত। পিয়া বলেন, ‘আমি যে সিনেমাটি করব তা খুব যত্ন নিয়েই করতে চাই। অনেক শ্রম আর সময় দিতে চাই। কিন্তু সিনেমার অন্যান্য বিভাগের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের যত্নটা চোখে পড়ে না। সবচেয়ে খারাপ লাগে একটি সিনেমার কাজ শেষ হতে অনেক বেশি সময় নেওয়া হয়। এ জন্য কোনো সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর তা যখন বছরখানেক সময়ের মধ্যেও শুরু না হয়, সেটা নিয়ে আর কথা বলতেও আগ্রহ হারিয়ে ফেলি।’
শোনা যাচ্ছে রায়হান রাফি পরিচালিত পিয়ার ‘স্বপ্নবাজি’ সিনেমাটি এ মাসেই শুরু হবে। এ নিয়ে পিয়া শুধু এটুকুই বলেন, ‘আগে কাজ শুরু হোক। তারপর এটা নিয়ে বলব।’ তবে সিনেমায় আপাতত কাজ না করলেও সম্প্রতি একটি খন্ড নাটকে অভিনয় করেছেন পিয়া। আদিবাসী মিজান পরিচালিত এ নাটকে তার বিপরীতে আছেন জনপ্রিয় অভিনেতা জাহিদ হাসান। এ নাটকে পিয়াকে সচরাচর যে ধরনের গ্ল্যামারাস চরিত্রে দেখা যায় সেভাবে দেখা যাবে না। তিনি একটি গ্রামের মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কথা বলেছেন আঞ্চলিক ভাষায়। শিগগিরই নাটকটি প্রচারে আসবে। নাটকে অভিনয়ে নিয়মিত হন না কেন জানতে চাইলে পিয়া বলেন, ‘আমি আসলে অনেক কাজের সঙ্গে যুক্ত। আইন বিষয়ে গ্র্যাজুয়েশন শেষে এখন প্র্যাকটিস করছি। ইচ্ছা আছে এলএলএম করার। ব্যবসা আছে, মডেলিং-উপস্থাপনার ব্যস্ততা আছে। এর মধ্যে নাটকে যে পরিমাণ সময় দিতে হয় তা আমার পক্ষে বের করা সম্ভব নয়।’