টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্তের ফলের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেবেন স্টারমার

0

তদন্তের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে অর্থ ও নগরবিষয়ক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন ক্যাবিনেট মন্ত্রী পিটার কাইল।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

গতকাল রোববার স্কাই নিউজের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে পিটার কাইল বলেন, স্বাধীন তদন্তের ফল যা-ই হোক না কেন, তার ভিত্তিতে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।

আর কনজারভেটিভ নেতা কেমি বাডেনচ প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বলেছেন, তিনি তার ব্যক্তিগত বন্ধুকে দুর্নীতি বিরোধী মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন, যেখানে সিদ্দিক নিজেই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত।

ক্যাবিনেট মন্ত্রী পিটার কাইল বলেন, সিদ্দিক সংসদীয় তদারকি সংস্থার কাছে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানিয়ে ঠিক কাজ করেছেন।

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (তার খালা) ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দেওয়া একাধিক ফ্ল্যাটে বসবাস করেছেন।

টিউলিপের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সামনে আসার পর সেগুলো তদন্তের আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অন মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস (প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা) লাউরি ম্যাগনাসের কাছে গত সোমবার চিঠি লেখেন তিনি।

ম্যাগনাসকে পাঠানো চিঠিতে তদন্ত শুরু করার অনুরোধ জানিয়ে টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, ‘তিনি কোনো ভুল করেননি’। একই দিন প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিক সম্পূর্ণভাবে সঠিক কাজ করেছেন এবং তিনি তার ওপর আস্থা রেখেছেন।

তবে সানডে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনের সম্পত্তিগুলো তদন্ত করা উচিত। যদি তিনি সেগুলো ‘স্পষ্ট ডাকাতি’করে অর্জন করে থাকেন, তবে তা সরকারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।

টিউলিপ সিদ্দিককে ক্ষমা চাইতে এবং পদত্যাগ করতে আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, তিনি নিজে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হয়ে নিজেকে রক্ষা করছেন। হয়ত আপনারা তখন বুঝতে পারেননি, কিন্তু এখন বুঝতে পারছেন।

কনজারভেটিভ নেতা কেমি বাডেনচ টিউলিপ সিদ্দিককে পদচ্যুত করার আহ্বান জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, কিয়ার স্টারমারের টিউলিপ সিদ্দিককে পদচ্যুত করার সময় এটা।

পিটার কাইল স্কাই নিউজের সানডে মর্নিং উইথ ট্রেভর ফিলিপস অনুষ্ঠানে বলেন, আমি মনে করি সিদ্দিক ঠিকই করেছেন। তিনি নিজের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য আবেদন করেছেন। সেই তদন্ত চালিয়ে যেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এই পরিস্থিতি সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে এবং কর্তৃপক্ষকে তদন্ত করার সুযোগ দিতে হবে। আমরা তাদের আরও ক্ষমতা দিয়েছি যাতে তারা স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে পারে। আপনারা জানেন, সময় হলে কিয়ার স্টারমার অবশ্যই কর্তৃপক্ষের কথা শুনবেন।

শ্যাডো চ্যান্সেলর মেল স্ট্রাইড টরি নেতা কেমি বাডেনচ এর মতামত পুনর্ব্যক্ত করে কিয়ার স্টারমারের কাছে টিউলিপ সিদ্দিককে পদচ্যুত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সিদ্দিকের জন্য এখন তার দায়িত্ব পালন করা অসম্ভব এবং প্রধানমন্ত্রীকে তাকে পদ থেকে সরিয়ে দিতে হবে।

স্ট্রাইড স্কাই নিউজের ‘সানডে মর্নিং উইথ ট্রেভর ফিলিপস’ অনুষ্ঠানে বলেন, যা সঠিক নয় তা হলো, প্রধানমন্ত্রী তাকে ওই পদ থেকে সরাচ্ছেন না এবং পদত্যাগ করতে বলছেন না।

তিনি বলেন, কারণ তিনি দুর্নীতি বিরোধী মন্ত্রী, তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে এবং এই পরিস্থিতিতে তার পক্ষে এই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা কঠিন। তাই তাকে পদত্যাগ করা উচিত এবং প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেয়া উচিত।

শ্যাডো চ্যান্সেলর আরও বলেন, এমন কিছু পরিস্থিতি থাকে, যেখানে আপনি কার্যকরভাবে আপনার কাজ করতে পারেন না। এখন দেখুন, চ্যান্সেলর চীন গিয়েছেন। আমার ধারণা ছিল, টিউলিপ সিদ্দিক তার সাথে যোগ দিয়ে সেখানে যাবেন। কিন্তু এখন তিনি যাচ্ছেন না এবং আমি অনুমান করতে পারি, এর কারণ তার বর্তমান পরিস্থিতি।

তিনি বলেন, তাহলে বর্তমানে তিনি সরকারে তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে সক্ষম নন। এবং প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে তাকে সরিয়ে দিতে হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com