শান্তি ও সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে: ফখরুল
শান্তি ও সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে ফ্যাসিবাদী পতিতদের ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। তারা দেশকে বিভক্ত করার অপচেষ্টা করছে। তবে ৫ আগস্টের মতো আবারো জনগণের ঐক্যবদ্ধ শক্তি দিয়ে সকল ষড়যন্ত্র রুখতে হবে।
এখন কেউ যেন দেশকে বিভক্ত করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা একটা সুযোগ পেয়েছি। সেজন্য আমি সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ সব বাহিনীকে অনুরোধ করতে চাই- আসুন, এই সুযোগ আমরা কাজে লাগাই। আবার আমরা সমস্ত বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে গড়ে তুলি।’
গতকাল সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শিবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে দেশের মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। স্বৈরাচার সরকার জনগণকে বোকা বানিয়ে তিনটা নির্বাচন করে জোর করে ক্ষমতায় ছিল। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ভেবেছিলেন, তিনি কোনো দিন ক্ষমতা থেকে যাবেন না। কিন্তু দেখেন, কিভাবে ছাত্র-জনতার প্রবল গণআন্দোলনের মুখে পরিবারের সবাইকে নিয়ে হাসিনাকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। সেই নেত্রী বলেছিলেন, আমি পালাই না, আমি ভয় পাই না, আমি মুজিবের বেটি, আমি পালাই না।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশ ছেড়ে ওপারে পালিয়ে গিয়ে শেখ হাসিনা সেখান থেকে ষড়যন্ত্র করছেন, চক্রান্ত করছেন। একটা মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন- এখানে নাকি আমাদের হিন্দু ভাইদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে একটা কথা বলে রাখতে চাই, আমরা খুব শান্তিপ্রিয় মানুষ। আমরা সবসময় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলমান একসাথে বসবাস করি।
মির্জা ফখরুল বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকার দেশ থেকে ২৮ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে এবং প্রতি বছর ১২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। তারা বিচার ব্যবস্থা, অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। পুলিশকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করেছে।
তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ছয় বছর ধরে জেলে আটক রাখা হয়েছিল এবং তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটানোর জন্য বিষ প্রয়োগ করে তাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।
ছাত্র-জনতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি ছাত্র-জনতাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, আমাদের ভাইয়েরা যারা ১৫ বছর লড়াই করেছেন, তাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা নিজেদের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে আমাদের জন্য আবার একটা সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। যেন আমরা দেশে আবার একটা গণতান্ত্রিক পথ সৃষ্টি করতে পারি। আমরা এখানে সব মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে চাই।’
দলের সংস্কার প্রস্তাবের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে ‘ভিশন বাংলাদেশ টুয়েন্টি-থার্টি’ দিয়েছিলেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান ২০২২ সালে ৩১ দফা দিয়েছেন। সেই ৩১ দফা কী, সংস্কার প্রস্তাব। এই সংস্কারটা আমরা চাই। এই সংস্কার বলতে বুঝি, আমরা যেন ভোটটা দিতে পারি, আমাদের দেশে যেন শান্তি থাকে, জিনিসপত্রের দাম যেন কম হয়, মারামারি যেন না হয়, চুরি-ডাকাতি যেন না হয়। আর কথায় কথায় ঘুষ যেন দিতে না হয়। এ রকম একটা বাংলাদেশ আমরা চাইছি।’