কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর চালানো গুলির তদন্ত চায় জাতিসংঘ

0

বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর চালানো গুলির তদন্ত চায় জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলেছে, যে কোনো দেশ তদন্ত করার জন্য অনুরোধ করলে সবচেয়ে উত্তম পন্থায় তা করার চেষ্টা করবে জাতিসংঘ। যদি জাতিসংঘ নিজস্বভাবে তদন্ত করতে চায় তাহলে সংস্থাটির লেজিসলেটিভ বোর্ডের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।

বুধবার জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজাররিক এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজাররিক বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দেন। তাতে বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সহিংসতা সত্ত্বেও বাংলাদেশে মানবিক সঙ্কট চলমান। আমি আপনাদের বলতে পারি রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সহিংসতা সত্ত্বেও আমরা দেখতে পেয়েছি এবং এটা সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে, বাংলাদেশে মানবিক সংকট চলমান। ঘূর্ণিঝড় রেমালসহ বেশ কিছু জরুরি অবস্থার শিকার মানুষদের অব্যাহতভাবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি আমরা এবং আমাদের অংশীদাররা। এ বছর ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ। ইন্টারনেট বন্ধ, ব্যাংক বন্ধ এবং কারফিউয়ের মতো অপারেশন চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমাদের অংশীদাররা তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছে। গত মাসে ১২ লাখ মানুষকে হিউম্যানিটারিয়ান রেসপন্স প্লানের অধীনে ৮ কোটি ডলারের তহবিল চালু করেছি আমরা এবং আমাদের অংশীদাররা।

এই আপিলে বর্তমানে শতকরা মাত্র ১৮ ভাগ তহবিল এসেছে। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়ার জন্য ৫ জুন সেন্ট্রাল ইমার্জেন্সি রেসপন্স ফান্ড থেকে ৭৫ লাখ ডলার সহায়তা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সেন্ট্রাল ইমার্জেন্সি রেসপন্স ফান্ড থেকে আরও ৬২ লাখ ডলার অবমুক্ত করা হয়েছে ৪ জুলাই। যমুনা অববাহিকায় বসবাসরত সম্প্রদায়কে নগদ অর্থ দেওয়ার জন্য এটা দেওয়া হয়েছে। কক্সবাজারে মিয়ানমারের শরণার্থীদের বড় রকমের মানবিক কর্মকাণ্ড চলছে। তাদেরকে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

ডুজাররিকের এ বক্তব্যের পর সাংবাদিক জানতে চান- বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশে প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের ওপর দমনপীড়ন চলছে। সেখানে ক্ষমতাসীন কর্তৃপক্ষ কি রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানের তদন্তে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছে এবং তাদের এই তদন্তে জাতিসংঘ কি কোনো সহায়তা দেবে? কারণ তাদের এই তদন্তে নিরপেক্ষতার ঘাটতি থাকে।

এ প্রশ্নের জবাবে ডুজাররিক বলেন, আপনার প্রশ্নের ভিতরে বেশ কয়েকটি বিষয় আছে। যে কোনো সরকার যদি বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের সহায়তা চায় তাহলে সবসময় তাদেরকে সহায়তা করতে প্রস্তুত আমরা এবং সেই তদন্ত আমরা সর্বোত্তম উপায়ে করি। স্বাধীন তদন্তের জন্য এসব বিষয়ে এই সংস্থার লেজিসলেটিভ বডির অনুমোদন প্রয়োজন। এর পরই সাংবাদিক তার কাছে জানতে চান- আপনি গাজায় নিহত সাংবাদিকের বিষয়ে কথা বলেছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশে তিনজন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। কেউ জানেন না তাদেরকে কোথায় রাখা হয়েছে। সাঈদ খান নামে আমার একজন সহকর্মী আছেন তার মধ্যে। কেউ জানেন না, তিনি কোথায় আছেন।

ডুজাররিক বলেন, বাংলাদেশে সরকারের গুলির যে দৃশ্য আমরা দেখেছি, তাতে নিন্দা জানাই। সরকার, সেটা হোক বাংলাদেশ বা অন্য যে কোনো স্থানের তাদের উচিত জনগণকে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ বিক্ষোভ করার অধিকারকে সুরক্ষিত রাখা। সাংবাদিকরা যাতে অবাধে তাদের কাজ করতে পারেন সেজন্য তাদের অধিকার সুরক্ষিত রাখা উচিত।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com