বর্তমান সরকার নতজানু সরকার, তারা ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলতে চান না: মির্জা ফখরুল

0

বর্তমান সরকার নতজানু সরকার, তারা ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলতে চান না জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের আশা, ভারতের সরকার বাংলাদেশের মানুষের যে প্রত্যাশা, সেটির মর্যাদা দেবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ গভীর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। একদিকে তো রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ আছেই, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জও আছে। এখন একটা ভৌগোলিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। পানি আমাদের অধিকার। আমাদের ভেতর ভিন্ন দেশের যে নদীগুলোর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সেটি আমাদের দেশের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সমুদ্রে যাচ্ছে। এ পানির অধিকার সর্বজনীন স্বীকৃত। এ অধিকার থেকে আমাদের কেউ বঞ্চিত করতে পারে না। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে আমাদের প্রতিবেশী দেশ, যাকে আমরা বন্ধু মনে করি। তারা আমাদের যে পানির ন্যায্য হিস্যা তা থেকে ক্রমাগত বঞ্চিত করছে।

সোমবার (১০ জুন) ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফারাক্কার পানি নিয়ে বহু খেলা হচ্ছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে, অথচ তারা তিস্তার পানি চুক্তির বিষয়ে কথা বলে না। এখন তারা নতুন কথা বলছে। বলছে তিস্তা প্রকল্প। পানি চুক্তি বিষয়ে কিছু না করে সরকার বলছে, তিস্তা প্রকল্পের চীন সহযোগিতা করতে চায়, আবার বলছে ভারতের সহযোগিতা করতে চায়। আমার কাছে বিষয়টা বিস্ময়কর মনে হয়েছে। কিছুটা রহস্য যেন মনে হয়েছে। যার কাছ থেকে পানি পাই না, তারা আমাদের তিস্তা প্রকল্পে সহযোগিতা করবে কিভাবে? এটা আমার মাথায় আসে না।

বাঁধ নির্মাণের বিরোধিতা করে জনগণকে সাথে নিয়ে লংমার্চ করার ফলে আমাদের এমপি ইলিয়াস আলী কিন্তু নিখোঁজ হয়েছেন- জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের প্রতিরোধের মুখে সেই টিপাইমুখী বাঁধ এখনো বন্ধ আছে।

আন্দোলন না করলে কিছুই পাওয়া যাবে না- জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন আমাদের যে সরকার আছে তারা তো প্রতিবেশীর কাছে পুরোপুরিভাবে মুখাপেক্ষী। বর্তমান সরকার নতজানু সরকার, তারা কোনোমতেই ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলতে চান না। ভারতের বিরুদ্ধে বলছি না, যেগুলো আমাদের জনগণের ইন্টারেস্ট আছে, সেগুলো নিয়ে তো কথা বলতেই হবে।

জলবায়ুর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থা খুবই ভয়াবহ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, গবেষণা বলছে, ঢাকা হচ্ছে পৃথিবীর দ্বিতীয় দূষিত শহর অথচ আমরা সেই শহরেই বসবাস করছি। সবাই প্রচণ্ড রকমের একটা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একজন ক্ষণজন্মা মানুষ ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন দার্শনিক, তিনি শুধু স্বপ্নদ্রষ্টা নন, সেই স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়িত করার জন্য অল্প সময়ের মধ্যেই কাজ করেছেন। এটা অবিশ্বাস্য, যাকে একটা মানুষও চিনতেন না, ১৯৭১ সালে হঠাৎ ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য জনগণকে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করলেন। তাকে অস্বীকার করলে অস্বীকার করা যাবে না। এটা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে না। আমি তাদের (বিরোধী পক্ষ) ছোট করতে চাই না। সংগ্রামকে ছোট করতে চাই না। কারো অবদানকে ছোট করে দেখতে চাই না। জিয়াউর রহমানের যে অবদান আমরা বার বার বলব, সেটি ধ্রুব সত্য। জিয়াউর রহমানকে অস্বীকার করা মানেই স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা।

আজকের আওয়ামী লীগ সেই আওয়ামী লীগ নেই- মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, যে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছিল। এ আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই তাদের কেমিস্ট্রিতে পরিবর্তন দেখা যায়। সেই পরিবর্তনটাই হচ্ছে তখন তারা সর্বগ্রাসী হয়।

সাধারণ মানুষের তো ক্ষমতা শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে- জানিয়ে তিনি বলেন, কোথায় যাবেন তারা? বিচার নাই। ব্যবসা করতে গেলে কোনো সুযোগ পাবেন না, ঘুষ ছাড়া কেউ কথা বলেন না।

ভারত আমাদের প্রভাবশালী প্রতিবেশী দেশ জানিয়ে তিনি বলেন, ভারতের নতুন সরকারের কাছে আমাদের একটাই আশা। সে দেশের জনগণ যেভাবে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারে। তাদের নির্বাচন কমিশন এখনো যেভাবে স্বাধীন কাজ করতে পারে, তাদের বিচার বিভাগ যেভাবে কাজ করতে পারে। ১৯৭১ সালে এদেশের মানুষ সেই লক্ষ্য নিয়ে যুদ্ধ করেছি।

ভারতের সরকার বাংলাদেশের মানুষের যে প্রত্যাশা, সেটির মর্যাদা দেবেন। সেই ভাবেই তারা বাংলাদেশের মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন মির্জা ফখরুল।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com