ঘুস না দেওয়ায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চার্জশিট পুলিশের
দুই লক্ষ টাকা ঘুস না দেওয়ায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তদন্ত ছাড়াই চার্জশিট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের এক তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর দৈনিক যুগান্তরের প্রথম পাতায় ‘কুমিল্লার বরুড়ায় পাঁচ প্রভাবশালীর নিয়ন্ত্রণে দুর্নীতির সাম্রাজ্য’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশিত হয়। যুগান্তর প্রতিনিধি আবুল খায়ের ভুক্তভোগীদের বক্তব্য এবং প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষণে রেখেই ওই সংবাদ প্রকাশ করেন।
পরে ওই সংবাদে মানহানি হয়েছে দাবি করে সংবাদ প্রকাশের দুদিন পর ১৯ সেপ্টেম্বর বরুড়া পৌরসভার মেয়র বকতার হোসেন বাদী হয়ে সাংবাদিক আবুল খায়েরের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মানহানির মামলা দায়ের করেন। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের কুমিল্লা জোনকে মামলাটি তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন আদালত। এতে ওই জোনের এসআই মনিরুল ইসলাম তদন্তের দায়িত্ব পান।
পরে যুগান্তর প্রতিনিধি আবুল খায়েরকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের কুমিল্লা কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দুই লাখ টাকা ঘুস দাবি করেন ওই তদন্ত কর্মকর্তা।
যুগান্তর প্রতিনিধি ঘুস দিতে অস্বীকার করায় কোনো প্রকার সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং সংরক্ষিত ডকুমেন্ট না দেখেই গোপনে তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন এই তদন্ত কর্মকর্তা। বিষয়টি নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের পুলিশ সুপারকে অবহিত করা হলে তিনি বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক বলে দাবি করেন। এ সময় অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন পুলিশ সুপার।
এদিকে কোনো প্রকার সাক্ষ্য-প্রমাণ ডকুমেন্ট সংগ্রহ করা ছাড়া একজন সিনিয়র সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা চার্জশিট প্রদান করায় কুমিল্লায় গণমাধ্যমকর্মীরা ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ওই তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সভাপতি লুৎফুর রহমান বলেন, একজন পুলিশ কর্মকর্তার এমন অপেশাদার কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। আবুল খায়ের একজন পরিচ্ছন্ন মেধাবী সংবাদকর্মী। তাকে হয়রানি করা মানে কুমিল্লার পেশাদার সাংবাদিক সমাজকে হয়রানি করা।