হুমকি-ধমকি দিয়ে জবিতে টেন্ডার বাণিজ্যে ছাত্রলীগের ‘গুরু-শিষ্য’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) সব টেন্ডার পান সাখাওয়াত হোসেন প্রিন্স ও কামরুল হাসান। দু’জনই শাখা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। তাদের গড়া রাজনৈতিক শিষ্য বর্তমান সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসেন এখন নিয়ন্ত্রণ করছেন সবকিছু। প্রশাসনকে জিম্মি, হুমকি-ধমকি দিয়ে ঠিকাদার তাড়ানো, চেক আটকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তারা গুরুদের প্রতিদান দিচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক প্রকৌশলী জানিয়েছেন, ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা অলিখিত নিয়ম বানিয়ে ফেলেছেন– ক্যাম্পাসের কাজ মানেই পাবেন প্রিন্স ও কামরুল। বড় কাজ কামরুল নিলে প্রিন্সকেও একই টাকার ছোট ছোট কাজ দিতে হয়। সভাপতি তাঁর ভোলার বড় ভাই ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রিন্সকে এবং সম্পাদক তাঁর মাদারীপুর ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুলকে কাজ দেন। বিনিময়ে টেন্ডারের ৮-১০ শতাংশ কমিশন নেন তারা। আগে প্রিন্স ও কামরুলের কর্মী ছিলেন তারা।
হাজি ট্রেডের কর্ণধার ভুক্তভোগী ঠিকাদার আজাদ হোসেন জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের ৫৭ লাখ টাকার কাজ তিনি ১০ শতাংশ কমে করতে টেন্ডার জমা দেন। ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহিম ফোন করে ক্যাম্পাসে না যেতে হুমকি দেন। পরে কাজটি তাঁর পছন্দের প্রিন্সকে ৫৭ লাখ টাকায় দেওয়া হয়েছে।
আরেক ভুক্তভোগী ঠিকাদার মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘কমিশন বেশি দিতে রাজি নই বলে তারা (সভাপতি-সম্পাদক) আমাকে কাজ দেন না। তাদের লোক ছাড়া কেউ কাজ পেলে কর্মী পাঠিয়ে ঝামেলা করেন।’ এ ছাড়া নতুন ক্যাম্পাসের প্রাচীর নির্মাণকারী ঠিকাদার আনোয়ার হোসেনের ১০ লাখ টাকার চেক সভাপতি আটকে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০২২ সালের ১ জানুয়ারি ইব্রাহীমকে সভাপতি ও আকতারকে সাধারণ সম্পাদক করে জবি ছাত্রলীগের কমিটি হয়। এর পর থেকে ক্যাম্পাসের সব টেন্ডার কবজায় নেন তারা। দেড় বছর আগে কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও তাদের দাপটে অসহায় প্রশাসন।