জাকাত যাদের দেওয়া যাবে না
নিজ পিতা-মাতা, দাদা-দাদী, নানা-নানী, অর্থাৎ জাকাত দাতার সকল পিতৃকুল ও মাতৃকুলের সকল ঊর্ধ্বতন নারী-পুরুষকে জাকাত দেওয়া যবে না।
ঔরসজাত ছেলে- মেয়ে, নাতী- নাতনি, পরনাতি-পরনাতনি, অর্থাৎ নিজের অধস্তন সকল নারী-পুরুষকে জাকাত দেওয়া যাবে না।
স্বামী স্ত্রীকে এবং স্ত্রী স্বামীকে জাকাত দিতে পারবে না। এছাড়া অন্য সব দরিদ্র আত্মীয়-স্বজনকে জাকাত দেওয়া যাবে। যেমন- ভাইবোন, চাচা-ফুফু, মামা-খালা, শ্বশুড়-শাশুড়ি, সৎ মা-সৎ বাবা, জামাতা, পুত্রবধূ ইত্যাদি। -হেদায়া: ১/২০৬
জাকাত প্রদানের ক্ষেত্রে জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত নিকটাত্মীয়দের জাকাত দেওয়া উত্তম। -রদ্দুল মুহতার: ৩/২৯৩, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/১৯০, মারাকিউল ফালাহ: ৫৯৪
মাসয়ালা: যে ব্যক্তির কাছে জাকাতযোগ্য সম্পদ নেসাব পরিমাণ নেই, কিন্তু অন্য ধরনের সম্পদ, যাতে জাকাত আসে না, যেমন ঘরের আসবাবপত্র, পরিধেয় বস্ত্র, জুতা ইত্যাদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত ও নেসাবের সমমূল্য পরিমাণ আছে, তাকে জাকাত দেওয়া যাবে না। -বাদায়েউস সানায়ে: ২/১৫৮
মাসয়ালা: জাকাতের টাকা কোনো জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা যাবে না। ব্যয় করা হলে জাকাত আদায় হবে না। যেমন- রাস্তাঘাট, পুল নির্মাণ করা, কূপ খনন করা, বিদ্যুৎ-পানি ইত্যাদির ব্যবস্থা করা। কেননা শরিয়তে জাকাতের বিধান দেওয়া হয়েছে ব্যক্তির প্রয়োজন পূরণের জন্য; সামাজিক প্রয়োজন পূরণের জন্য নয়। জাকাতের টাকা দ্বারা মসজিদ-মাদরাসার বিল্ডিং নির্মাণ করা, ইসলাম প্রচারের জন্য ব্যাপকভাবে ব্যয় করা, ইমাম-মুয়াজ্জিনের বেতন-ভাতা দেওয়া, ওয়াজ-মাহফিলের জন্য ব্যয় করা বা এগুলোতে সহায়তা দেওয়া, মিডিয়া তথা রেডিও, টিভি চ্যানেল করা জায়েজ নয়; বরং জাকাতের টাকা তার হকদারকেই মালিক বানিয়ে দিতে হবে। অন্য কোনো ভালো খাতে ব্যয় করলেও জাকাত আদায় হবে না। -মুসান্নাফ আবদুর রাজ্জাক: হাদিস নং ৬৯৪৭, রদ্দুল মুহতার: ২/৩৪৪