আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সম্ভব নয়: বিএনপি

0

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির একতরফা নির্বাচনের মতো উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধান বিচারপতির উদ্যোগ চেয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব প্রধান বিচারপতির প্রতি এই আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ আজ এমন একটি দেউলিয়া দলে পরিণত হয়েছে যে, আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে পুলিশ ও বহিরাগতদের ব্যবহার করে নিজেদের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করতে হয়- এটা বড় লজ্জার বিষয়। আশা করছি এ অবস্থায় প্রধান বিচারপতি সর্বোচ্চ বিচারালয়ের পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসবে এবং প্রতিষ্ঠানটির পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। একই সাথে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ‘একতরফা’ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল ও নতুন নির্বাচনের দাবিও জানান বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, আইনগতভাবে কোনো নির্বাচন না হলেও নির্বাচনের নাটক সাজিয়ে একতরফাভাবে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের অবৈধভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। আমি অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্টে যে তথাকথিত নির্বাচন বাতিল করে দিয়ে, আবার নতুন করে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানাচ্ছি।

‘আরেকবার আওয়ামী লীগের মুখোশ উন্মোচিত’ : মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা মনে করি, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোট ডাকাতিতে সিদ্ধহস্ত আওয়ামী লীগের মুখোশ আরেক বার উন্মোচিত হলো। দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার কফিনের শেষ পেরেকটি ঠোকানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে। আমি আবার পুনর্ব্যক্ত করতে চাই যে, এখন রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিভাগে যারা দায়িত্বরত রয়েছেন, কর্মরত রয়েছেন তাদের পবিত্র দায়িত্ব এই রাষ্ট্রকে রক্ষা করা এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর যে পবিত্রতা সেই পবিত্রতা রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব। আমরা কল্পনাও করতে পারি না যে, সুপ্রিম কোর্টে পুলিশ ঢুকে আইনজীবীদের আক্রমণ করবে, প্রহার করবে, তাদের আহত করবে। এটা ছোট কথা নয়, এটা হালকা করে দেখার বিষয় নয়।

তিনি বলেন, এসব ঘটনায় রাষ্ট্রের চরিত্র কী দাঁড়াচ্ছে? আমরা যেটা বলছি যে, এটা একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে তারই প্রমাণ আমরা দেখতে পারছি। আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানাব যে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে রক্ষা করার জন্য। তার ন্যূনতম যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেই প্রতিষ্ঠানগুলো আছে তা রক্ষা করার জন্য সবাই এগিয়ে আসা দরকার।

ফখরুল বলেন, আমরা বারবার বলে এসেছি যে, বাংলাদেশ আর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নেই, বাংলাদেশ এখন আর সত্যিকার অর্থে কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নেই। বাংলাদেশে যত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেই প্রতিষ্ঠানগুলো এই আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তার সর্বোচ্চ ন্যক্কারজনক উদাহরণ আমরা সর্বোচ্চ আদালতে দেখলাম।

তিনি বলেন, বার অ্যাসোসিয়েশন হচ্ছে বা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের বলা হয়, অফিসিয়ার্স অব দ্য কোর্ট। সেই আইনজীবীদের সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মধ্যযুগীয় কায়দায় পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে তা ধ্বংস করে দিলো। আওয়ামী লীগ দেশের একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়, আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ করায়ত্ত করে নিয়ে প্রায়, এখন চূড়ান্ত করতে চায়, বারগুলোকে জোর করে দখল করে নিতে চায়- এই কথাগুলো ক্ষোভ খেদ, দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে আজকে।

জাতীয় নির্বাচনেও কি এরকম কারচুপি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কি না প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, হয়ে যেতে পারে না। হবে। হবে বলে তো আমরা বলছি যে, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সম্ভব নয়। এদের চরিত্র হয়ে গেছে যে, তারা জোর করে সব কিছু নিয়ে নেবে। যখনই তারা ক্ষমতায় থাকবে, নির্বাচন হলে সেই নির্বাচন তারা নিয়ন্ত্রণ নেবে, সেই নির্বাচন করে তাদের মতো তারা প্রার্থীদের জয়ী ঘোষণা করবে। সুতরাং কোনো মতেই এই আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো গণতান্ত্রিক নির্বাচন সম্ভব না।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সহদফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার উপস্থিত ছিলেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com