শিগগিরই বাংলাদেশের সব মানুষকে নিয়ে চলমান লড়াইয়ে বিজয় অর্জন করব: মির্জা ফখরুল

0

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শিগগিরই বাংলাদেশের সব মানুষকে নিয়ে চলমান লড়াইয়ে বিজয় অর্জন করব।

শুক্রবার (১৭ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে অর্পণ বাংলাদেশ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও আন্দোলনে শহিদ নেতাদের স্মরণে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অর্পণ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীথিকা বিনতে হোসাইনের সভাপতিত্বে বিশেষ বক্তা ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

এছাড়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল বক্তব্য রাখেন।

ফখরুল বলেন, গত ১৫ বছর ধরে এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে আমরা আসি। কষ্ট পাই, পরিবারগুলো কষ্ট পায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা তাদের জন্য খুব বেশি কিছু করতে পারিনি।

তিনি বলেন, আমাদের চলমান আন্দোলন তো করার কথা না। আমরা আন্দোলন করেছি ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। যারা আমাদের অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছিল, গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছিল। একটা নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করছিল না। যে কারণে একটা যুদ্ধ হয়েছে। সেই যুদ্ধে আমরা জয়লাভ করেছি। একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ পাওয়ার জন্য আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। আমাদের দুর্ভাগ্য- সেই গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার জন্য আবারো লড়াই করতে হচ্ছে, প্রাণ দিতে হচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশ যে এই পরিস্থিতিতে পড়বে, তা আমরা কখনো ভাবিনি। কেউ ভাবেনি। মাঝে মাঝে মনে হয়! এ কেমন দেশ আমরা তৈরি করলাম? যে দেশে মানুষের সম্মান থাকবে না, যে দেশের মানুষের প্রাণের কোনো নিশ্চয়তা থাকবে না। বেঁচে থাকবার কোনো নিশ্চয়তা থাকবে না, আমি আমার ভোট দিতে পারবো না, সেখানে আমি আমার কথা বলতে পারব না, আমার প্রতি অন্যায় হবে সে কথা বলতে পারব না, আইনজীবীরা কোর্টে পুলিশের হাতে পিটানি খাবেন। সেই দেশটা আমরা চিন্তা করিনি, কোনো দিন ভাবিওনি।

সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিক ও আইনজীবীদের উপর হামলার প্রসঙ্গ এনে তিনি বলেন, বিচারপতির কাছে গিয়েছিলেন আমাদের আইনজীবীরা। তিনি বলেছেন ‘আমার যদি কিছু করার থাকে তাহলে আমি করবো।’ তিনি যদি এ কথা বলেন, তাহলে কোথায় যাবো আমরা? কার কাছে যাবো আমরা? এ দেশের মানুষ কোথায় যাবে?

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে শহীদদের পরিবারদের প্রসঙ্গে বলেন, অনেকে স্বামী হারিয়েছে, বাবা হারিয়েছে, ছেলে হারিয়েছে, ভাই হারিয়েছে। মানব সভ্যতার ইতিহাস বলে আত্মত্যাগ কোনো দিন বৃথা যাবে না। তাদের রক্তের স্রোত, মায়ের অশ্রু ধারা কখনো বৃথা যেতে পারে না। লড়াই শুরু করেছি, অধিকার ফিরে পাবার জন্য। আমাদের লড়াই ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। একটা আধুনিক, কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা লড়াই করছি। মানুষের অধিকার পাওয়ার জন্য লড়াই শুরু করেছে, ন্যায় বিচারের জন্য। এই লড়াইয়ে আমরা অনেক দূরে এগিয়েছি। প্রতিদিন আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের সমস্ত মানুষকে সাথে নিয়ে অতি শিগগিরই এই লড়াইয়ে জয়ী হবো।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, একটা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ছিল। বিএনপি এবার দেখিয়েছে সব নিয়ম মেনে আন্দোলন করেছে। আপনাদের আগামী দিনে বৃহত্তর লড়াই বিজয় অর্জনে প্রস্তুত হতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে যা করেছে তা কল্পনা করা যায় না। একটা সরকার কতটা ইতর ছোট লোক হলে এ রকমটা করতে পারে।

আহেমদ আজম বলেন, আমরা বাংলাদেশের মানুষ বাঁচতে চাই। আজকে বাংলাদেশে দুটো শ্রেণি হয়ে গেছে। যারা সরকারি দল তারা রাজা হয়ে গেছে। আর আমরা বিশ কোটি জনগণ প্রজা হয়ে গেছি। রাজাদের কারণে আমরা প্রজারা বিধ্বস্ত হয়ে যাচ্ছি।

ইশরাক হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার জোর করে তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সাধারণ জনগণের বুকে গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে। দ্রব্যমূল্য বাড়ার প্রতিবাদে যখন জনগণ আন্দোলন করেছে তখন ফ্যাসিস্ট সরকার যেভাবে গুলি করে হত্যা করেছে তা বিশ্ববাসী দেখেছে। আজকেও বাকশালী কায়দায় গণমাধ্যম বন্ধ করা হচ্ছে। আপনারা দেখেছেন লাঠিয়াল বাহিনী সুপ্রিমকোর্টে আইনজীবী সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে। তারা তাদের পুরোনো খেলায় মেতে ওঠেছে। এ সময় তিনি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান।

সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, এ যুদ্ধ আমাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যুদ্ধ। আজকে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত। আজকে এ আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছে তাদের পরিবারকে বলতে চাই এ যুদ্ধ আমরা শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে চালিয়ে যাবো।

স্বামী হত্যার সর্বোচ্চ বিচার চেয়ে বাগেরহাট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম ভূইয়ার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা বলেন, আমার স্বামীর জনপ্রিয়তা ও রাজপথে সাহসী ভূমিকার কারণে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা রাত ৯টায় বাসা থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com