ডা. শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের অপবাদ দেওয়া হয়েছে: জামায়াত

আমির ডা. শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের অপবাদ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, জঙ্গিবাদের সম্পৃক্ততার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র করে জামায়াতে ইসলামীকে দমানো যাবে না। আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানকে যে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ও রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে তা প্রত্যাহার ও বাতিল করতে হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) অনলাইনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ১২ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১টায় জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানকে বাসা থেকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাকে জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অপবাদ দিয়ে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় ও ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। সরকারের এ অন্যায় ও মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে এবং তার মুক্তির দাবিতে দেশবাসী প্রতিবাদ জানিয়েছে ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান নিন্দা জানিয়েছে। আমরা সরকারের এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জামায়াত নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সরকার পরিবর্তন চায়। গঠনতন্ত্রের ৩ নং ধারায় জামায়াতের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে ‘নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতি’ এবং স্থায়ী কর্মসূচির ৪র্থ দফায় ‘নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক পন্থা’র কথা উল্লেখ রয়েছে। কোনো ধরনের হঠকারিতা, চরমপন্থা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক তো দূরের কথা বরং এ সব অপশক্তির বিরুদ্ধে জামায়াত সব সময়ই সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে।

ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে জামায়াত অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার কারণে জামায়াতের অনেক নেতাকর্মী সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের হামলার শিকার হন। জঙ্গিবিরোধী মামলা পরিচালনা করার কারণে ঝালকাঠির পিপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা হায়দার আলীকে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হত্যা করা হয়। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লেখালেখি করার কারণে বিশিষ্ট সাংবাদিক, জামায়াত নেতা খুলনা মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও খুলনা প্রেস ক্লাবের ভাইস-প্রেসিডেন্ট শেখ বেলাল উদ্দিনকে বোমা মেরে হত্যা করা হয়। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় জামায়াতের বহু নেতাকর্মীকে হামলার শিকার হতে হয়েছে।

আজ জামায়াতে ইসলামীর আমিরকে জঙ্গিবাদের অপবাদ দিয়ে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ এবং নিতান্তই হাস্যকর ও দুঃখজনক।

তিনি বলেন, জামায়াতের বিরুদ্ধে বহুবার জঙ্গিবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে, কিন্তু তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কারণ জঙ্গিবাদের সঙ্গে জামায়াতের কোনো সম্পৃক্ততা অতীতে ছিল না এবং বর্তমানেও নেই। আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানকে এমন এক সময় গ্রেপ্তার করা হলো, যখন তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও জনগণের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ১০-দফা দাবির ভিত্তিতে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। মূলত বর্তমান অনৈতিক সরকার জোরপূর্বক ক্ষমতায় টিকে থাকার লক্ষ্যে যুগপৎ গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ব্যাহত করার জন্যই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।