ভারতের বৃহত্তম তেল সরবরাহকারীতে পরিণত হয়েছে রাশিয়া

0

ভারতের বৃহত্তম তেল সরবরাহকারীতে পরিণত হয়েছে রাশিয়া। ভারতে তেল সরবরাহের দিক থেকে সৌদি আরব এবং ইরাকও এখন রাশিয়ার থেকে পিছিয়ে পড়েছে। অক্টোবরের এই পরিসংখ্যান নিয়ে পাশ্চাত্যের দেশগুলো যে কিছুটা অসন্তুষ্ট হতে পারে, তা ধরাই যায়। তবে ভারত যে অন্য দেশের ভাবনা নিয়ে বিচলিত নয়, তা স্পষ্ট এই রিপোর্টে। এবং ভারত অব্যাহতভাবে রুশ তেল কিনে যাবে। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর প্রথমবার দেশটি সফরে গিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ওই কথা বলেও এসেছেন। আর ভারতের এই পদক্ষেপ রুশ অর্থনীতিকে পঙ্গু করার পাশ্চাত্যের উদ্যোগকেই ভণ্ডুল করে দিচ্ছে।

জয়শঙ্কর মঙ্গলবার মস্কোতে তার রুশ প্রতিপক্ষ সার্গেই ল্যাভরভ এবং সেইসাথে কৃষি, পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস, জাহাজ চলাচল, অর্থ, কেমিক্যালস, সার, ও বাণিজ্য কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন। এতে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক জোরদার হওয়াটা প্রতিফলিত হচ্ছে।

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মস্কোর ওপর বাণিজ্যিক বয়কটের ডাক দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পাশ্চাত্য বিশ্ব। ক্রেমলিনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে জোগান কমায় বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বাড়তে থাকে। এই সুযোগেই রাশিয়া থেকে তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। গ্রাহক কম থাকায় কম দামেই তেল দিতে শুরু করে ভ্লাদিমির পুতিনের সরকার।

এনার্জি কার্গো ট্র্যাকার ভোরটেক্সার প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী ৩১ মার্চ ২০২২ পর্যন্ত ভারতের আমদানি সমস্ত তেলের মাত্র ০.২ শতাংশ রাশিয়া থেকে আসত। এদিকে অক্টোবরেই সেটা তুঙ্গে পৌঁছে যায়। গত মাসে ভারতকে প্রতিদিন ৯,৩৫,৫৫৬ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করেছে মস্কো। এখন ভারতের মোট আমদানি করা ক্রুড অয়েলের ২২ ভাগ আসে রাশিয়া থেকে।

এই বিষয়ে একাধিকবার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে নয়াদিল্লি। তারা জানিয়েছে, ভারত সরকার রাশিয়ার সাথে বাণিজ্য রক্ষা করতে বাধ্য। কারণ দেশবাসীর স্বার্থে সবচেয়ে সস্তায় ক্রুড অয়েল সংগ্রহ করা সরকারের কর্তব্য। আর সেই স্বার্থে অন্য দেশের ভাবনায় প্রভাবিত হওয়া যাবে না।

গত সপ্তাহে আবু ধাবিতে ভারতের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি বলেন, ‘আমাদের একটি নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের দেশের জনসংখ্যা ১৩৪ কোটি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই, আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, তাদের যেন পর্যাপ্ত শক্তি সরবরাহ করা হয়, সেটা পেট্রোল-ডিজেল যা-ই হোক না কেন।’

গত মাসে ওয়াশিংটনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেও একই কথা বলেন তিনি। মার্কিন জ্বালানি সচিব জেনিফার গ্রানহোমের সাথে বৈঠক করেন হরদীপ সিং পুরি। এরপর তিনি বলেন, আমাদের নীতি স্পষ্ট, জ্বালানির নিশ্চয়তা এবং সাশ্রয়কে অগ্রাধিকার দিতে আমরা যেখান থেকে কিনলে সুবিধা হবে সেখান থেকেই কিনব। এই জাতীয় আলোচনা সাধারণ মানুষকে যেন প্রভাবিত না করে।

তিনি বলেন, ‘অনেক সময়েই লোকে বুঝতে পারে না যে কিভাবে অপরিশোধিত তেলের কেনাবেচা হয়। তেল কেনার সময়ে যদি এত দূর থেকেই কিনতে হয় যে জাহাজের আইসব্রেকারের ভাড়াটুকুও দিতে হবে, সেক্ষেত্রে কিনে কোনো লাভ নেই। যতটা সম্ভব কাছাকাছি স্থান থেকে কেনাটাই আদর্শ।’
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস ও আলজাজিরা

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com