যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচন: বাইডেন-ট্রাম্পের ভিন্ন পরীক্ষা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখতে লাখ লাখ আমেরিকান ভোট দেবেন তাদের পছন্দের প্রার্থীদের। এবারের নির্বাচন হোয়াইট হাউজে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও তার দলের ভাগ্য নির্ধারণের পাশাপাশি আমেরিকানদের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শেষ মুহূর্তে ভোটারদের চাঙা করতে চূড়ান্ত প্রচারাভিযানও চালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রে এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনে বাইডেন ও ট্রাম্পের ব্যালট নেই। এটি শুধু কংগ্রেসের নির্বাচন। যেটির দুটি অংশের মধ্যে একটি হলো হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভ এবং অপরটি সিনেট। সংসদীয় এই ভোট প্রতি দুই বছর অন্তর অন্তর হয়। প্রেসিডেন্টের ৪ বছরের মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে হয় বলে এটিকে মধ্যবর্তী মেয়াদের নির্বাচন বলা হয়।
এই নির্বাচনের ফলে কংগ্রেসে সিদ্ধান্ত হবে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে আইনসভা ও গভর্নরের কার্যালয় কে নিয়ন্ত্রণ করবে। প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে দুজন সিনেটর থাকেন, যারা ছয় বছর মেয়াদের জন্য হন। রিপ্রেজেনটেটিভরা দুই বছরের জন্য কাজ করেন এবং ছোট জেলাগুলোর প্রতিনিধিত্ব করেন।
গত দুই বছর ধরে ডেমোক্রেটরা রিপ্রেজেনটেটিভ হাউজ ও সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখে কাজ করছে। যেটি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জন্য যে কোনও আইন পাসে সহায়ক হয়েছে।
তবে ডেমোক্রেটরা এবার সামান্য ব্যবধান ধরে রাখতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দু’পক্ষের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। পোলিং এজেন্টগুলো বলছে, রিপাবলিকানরা হাউজ দখল করতে পারে তবে ডেমোক্রেটরা সিনেটের আসন ধরে রাখতে পারে।
হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভে আসন ৪৩৫টি। ধারণা করা হচ্ছে, পেনসিলভানিয়া, ক্যালিফোর্নিয়া, ওহিও এবং উত্তর ক্যারোলিনার মতো রাজ্যগুলোর নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অপরদিকে, সিনেটের ৩৫টি আসনের মধ্যে নেভাদা, অ্যারিজোনা, জর্জিয়া এবং পেনসিলভানিয়া গুরুত্বপূর্ণ।
এবারের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হচ্ছে অভিবাসন, অপরাধ এবং দৈনন্দিন জীবনযাপনের ব্যয়। এসবই রিপাবলিকানদের জয়ের কারণ হতে পারে।
মঙ্গলবারের গুরুত্বপূর্ণ মধ্যবর্তী নির্বাচন শুরুর আগের দিন প্রার্থী ও নেতৃস্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিরা তাদের শেষ প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। ডেমোক্রেটদের সমর্থনে মেরিল্যান্ডে সমাবেশে বক্তৃতাকালে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, একটি অঙ্গরাজ্যকে সাধারণত গণতান্ত্রিক দুর্গ হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং সমর্থকদের বলেন ‘গণতন্ত্র ব্যালটে’।
অপরদিকে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রিপাবলিকান প্রার্থীদের প্রচারণায় অংশ নিয়ে ওহাইওতে একটি সমাবেশ করেন। রিপাবলিকান প্রার্থীদের সমর্থন করার জন্য ভোটারদের আহ্বান জানান তিনি। ট্রাম্প ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে আরও বলেন, ‘সঙ্গে থাকুন’।
এখন সবার নজর নির্বাচনী ফলাফলের দিকে, কারণ চেম্বারের নিয়ন্ত্রণ যাচ্ছে কার হাতে সেটিই দেখার বিষয়।
সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা