চীনের ঋণের ফাঁদে দুর্বল দেশ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে সুপার পাওয়ার যুক্তরাষ্ট্র ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন নিজেদের সামর্থ প্রকাশ করতে নানা নীতি তৈরী করেছিল। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র মনরো ডকট্রিন নীতি এবং এছাড়া ডলার নীতি করেছিলো । এগুলো করার একটাই কারণ ছিল, অর্থ-সহায়তার নামে পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদিতা। তারই পথ ধরেই চীন তার নেকড়ে অর্থনীতির ফল দুর্বল রাষ্ট্রগুলোর গলার কাঁটা হয়ে দাড়াচ্ছে।
অর্থনীতি ও অবকাঠামো শক্তিশালী করার খোঁজে দুর্বল ও উন্নয়নশীল দেশগুলো চীনের ঋণের ফাঁদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ডেইলি টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে, শ্রীলঙ্কা থেকে পাকিস্তান, পাকিস্তান থেকে কেনিয়া পর্যন্ত সবাই কমবেশি চীনা ফাঁদে পা দিয়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে।
ওই উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষায় উন্নয়নশীল দেশগুলো চীনের ঋণের ফাঁদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং পাকিস্তানের সংবাদপত্র ডেইলি টাইমস পাকিস্তানকে পরামর্শ দিচ্ছে যে, ইসলামাবাদকে কলম্বোর পথ এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
পাকিস্তান, যেখানে ঋণ, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্বের বৃদ্ধি এবং অন্যান্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক সমস্যাগুলির সঙ্গে লড়াই করছে, শ্রীলঙ্কার পথে চলছে বলে মনে হচ্ছে; যা বর্তমানে শ্রীলঙ্কার মতো একটি দুষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে রয়েছে। পাকিস্তানও চীনা প্রকল্পগুলোর সঙ্গে জড়িত ছিল যেটি এই অঞ্চলে একটি শক্তিশালী মিত্র হতে পারে; যা ইসলামাবাদের টেকসই অর্থনৈতিক লাভ এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য প্রয়োজন। তবে সংবাদপত্রটি বিশ্বাস করে যে দেশটিকে কলম্বোর পথ এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
চীনের উচ্চাভিলাষী প্রকল্প থেকে নিজেদের বাঁচাতে শ্রীলঙ্কা হতে পারে অন্যান্য দেশের জন্য একটি বড় উদাহরণ। ঋণ বা ইক্যুইটি অদলবদলে, শ্রীলঙ্কা হাম্বানটোটা বন্দর ও পাওয়ার প্ল্যান্ট হস্তান্তর করেছে এবং বিমানবন্দরটি চীনা নিয়ন্ত্রণে হস্তান্তর করতে পারে কারণ এটি তার ঋণ পরিশোধ করতে অক্ষম। উপরন্তু, ঋণ পরিশোধে শ্রীলঙ্কা রাজস্বের ৯০ শতাংশ খরচ করে।
আরেকটি উদাহরণ হতে পারে ভেনিজুয়েলা, যেখানে চীন এখন পর্যন্ত যে কোনো একক দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে। ডেইলি টাইমস রিপোর্ট অনুসারে চীন দেশটিতে ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৳৫২ বিলিয়ন বিনিয়োগ করেছে। পাকিস্তানের মোট ঋণ মার্কিন ৭২ বিলিয়ন ডলার বা জিডিপির ৭০ শতাংশের কাছাকাছি এবং চলতি হিসাবের ঘাটতি প্রায় ১২০ শতাংশ বেড়েছে।—খবর এএনআই।