রাশিয়ার হামলা: ইউক্রেনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সহায়তার প্রস্তুতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের
চলতি সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ২০২৩ সালের জন্য ইউক্রেনকে বিশাল আর্থিক সহায়তা ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বস্তুত রাশিয়ার হামলায় বিপর্যস্ত অবকাঠামো ইউক্রেনের মানুষের জীবনযাত্রা হুমকির মুখে ফেলছে।
গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে রাশিয়ার হামলা সত্ত্বেও ইউক্রেন হারানো বহু ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে। গোটা দেশের অবকাঠামো ও বেসামরিক স্থাপনার ওপর রাশিয়ার লাগাতার হামলা সত্ত্বেও সে দেশের সেনাবাহিনী শীতের আগে যতটা সম্ভব অধিকৃত এলাকার ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম এবং রাশিয়ার সামরিক ক্ষমতা খর্ব করতে চাইছে।
কিন্তু জরুরি অবকাঠামোর ওপর হামলার ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ, পানি ও ঘর গরম রাখার উত্তাপ সরবরাহের অভাবে এমনকি রাজধানী কিয়েভ থেকে নাগরিকদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ভাবনা-চিন্তাও শুরু হয়েছে।
এমন সংকটের মুখে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনের জন্য আরও দীর্ঘমেয়াদী সহায়তার অঙ্গীকার করছে। ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন রোববার সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কির সঙ্গে টেলিফোনে নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
২০২৩ সালে ইউক্রেনের জন্য ১ হাজার ৮০০ কোটি ইউরো পর্যন্ত আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব পেশ করতে চলেছেন ফন ডার লিয়েন। এর আওতায় ইউক্রেনকে সহজ শর্তে সুদবিহীন দীর্ঘমেয়াদী ঋণ দেওয়া হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার লক্ষ্যে সংস্কার ও দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়ার জন্যও সেই অর্থ কাজে লাগানো হবে বলে ইইউ কমিশন আশা করছে।
কমিশনের মতে, ইউক্রেনের দুর্দিনে অন্যান্য দাতাদেরও ইইউয়ের মতো আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। এর আগে গত জুন মাসে ইইউ শীর্ষ নেতারা ইউক্রেনের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ৯০০ কোটি ইউরো মঞ্জুর করেন। এর মধ্যে ৩০০ কোটি ইউরো ইতোমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। চলতি বছরের শেষের মধ্যে আরও ৩০০ কোটি ইউরো পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বাকি অর্থ ইইউয়ের প্রস্তাবিত সহায়তার অংশ হবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
ইইউ ও অন্যান্য দাতাদের আর্থিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা সত্ত্বেও ইউক্রেন শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার হামলা সামলে শীতকালে সাধারণ নাগরিকদের জীবনযাত্রা সহনীয় করে তুলতে পারবে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে।
কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিৎকো বলেন, নাগরিক জীবনযাত্রা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা এড়াতে প্রশাসন যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি আমাদের শত্রু শহরে উত্তাপ, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ধ্বংস করার লক্ষ্যে সব চেষ্টা চালাচ্ছে, যাতে আমরা মরে যাই।’