অগণতান্ত্রিক সরকারের পদত্যাগের দাবিতে সবাইকে রাজপথে নেমে আসতে হবে: শাহাদাত
আওয়ামী লীগ নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ও মিথ্যা ইতিহাস শেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, মিথ্যা ইতিহাস শেখানোর দায়ে নতুন প্রজন্ম আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করবে না।
সোমবার (৭ নভেম্বর) সকালে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ষোলশহরের বিপ্লব উদ্যানে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির পুষ্পস্তবক অর্পণ ও র্যালিপূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
শাহাদাত হোসেন বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালোরাতে আওয়ামী লীগের ব্যর্থতায় জাতি যখন নেতৃত্বশূন্য দিশেহারা, তখনই জিয়াউর রহমান উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো আবির্ভূত হয়েছিলেন। এমনি এক অনিশ্চয়তার মধ্যে ষোলশহর বিপ্লব উদ্যানে তিনি পাক-বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘উই রিভোল্ট’ বলে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। সেদিন আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই পার্শ্ববর্তী দেশে চলে গিয়েছিলেন। নেতৃত্বশূন্য এই জাতিকে মুক্তি দিতে এগিয়ে এসেছিলেন জিয়াউর রহমান।
‘তিনি কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন আবার অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন। তার মেধা ও সামর্থ্যের কারণে তিনি দুইটা সেক্টরের দায়িত্ব পালন করেছেন। জিয়াউর রহমান ছিলেন জেড ফোর্সের অধিনায়ক। এটাই ইতিহাস। এর বাইরে আর কোনো বক্তব্য থাকতে পারে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ এখন নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ও মিথ্যা ইতিহাস শেখাচ্ছে। মিথ্যা ইতিহাস শেখানোর দায়ে নতুন প্রজন্ম আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করবে না।’
তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তীসময়ে বাংলাদেশের রাজনীতি কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠার একপর্যায়ে একদলীয় বাকশালী শাসনব্যবস্থায় রূপ পেয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর সেনাবাহিনীর একটি অংশ আধিপত্যবাদের ভাবনায় প্ররোচিত হয়ে তৎকালীন সেনাবাহিনীর চিফ স্টাফ অফিসার জিয়াউর রহমানকে সপরিবারে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করে। তিনি ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ক্যান্টনমেন্টে বন্দি ছিলেন। ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে তিনি মুক্ত হন। ৭ নভেম্বরের বিপ্লবের মাধ্যমেই দেশে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের সূচনা হয়েছিল। কিন্তু আজকের বাংলাদেশে মানুষের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ও জনগণের নিরাপত্তা কিছুই নেই। দেশ ও জাতি আজ চরম ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছে। তাই ৭ নভেম্বরের চেতনাকে ধারণ করে গণজাগরণ সৃষ্টির মাধ্যমে বর্তমান অগণতান্ত্রিক সরকারের পদত্যাগের দাবিতে সবাইকে রাজপথে নেমে আসতে হবে।’
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ৭ নভেম্বর সৃষ্টি না হলে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতো না। গণতন্ত্র বর্তমানে একটি ঐতিহাসিক শব্দে পরিণত হয়েছে। কারণ দেশে গণতন্ত্র বলতে কিছুই নেই। দেশে চলছে একনায়কতন্ত্রের আাধিপত্যবাদ। এমতাবস্থায় ৭ নভেম্বরের বিপ্লবের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশপ্রেমিক জনতাকে এগিয়ে আসতে হবে।