বহু সমীকরণ নিয়ে ডিসেম্বরে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচন

0

ভারতের গুজরাট রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১ ডিসেম্বর এবং ৫ ডিসেম্বর রাজ্যটিতে ভোটগ্রহণ।

৮ ডিসেম্বর নির্বাচনের ফল ঘোষণা। একই দিনে গুজরাটের সঙ্গে হিমাচল প্রদেশেরও ফল ঘোষণা করা হবে।

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবন থেকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার এসব তথ্য জানিয়েছেন। যদিও গত ১৪ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, হিমাচলে ভোট হবে ১২ নভেম্বর।

গুজরাটের ১৮২ আসনে বিধানসভার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। তার ১১০ দিন আগেই ভোট করানো হচ্ছে। ফলে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহের রাজ্যে দেরিতে নির্বাচনের যে অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা, তাকে কার্যত খারিজ করে দিল নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এ দিন থেকেই গুজরাটে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি কার্যকর হয়েছে।

গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা ৪ দশমিক ৯ কোটি। ৫১ হাজার ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া রাজ্যজুড়ে নির্বাচনে মোতায়েন থাকবে ১৬০ কোম্পানি সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী।

গত বিধানসভা নির্বাচনেও গুজরাটে দুই ধাপে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৪ নভেম্বর এবং দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০ নভেম্বর।

২৪ বছর ধরে গুজরাটে ক্ষমতায় রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। গত বিধানসভা নির্বাচনে গুজরাটের ১৮২টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছিল ৯৯টি, কংগ্রেস ৭৭টি, স্বতন্ত্র ৩টি এবং অন্যান্যরা পেয়েছিল ৩টি আসন।

এবার সমীকরণ বদল হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ দিল্লি ও পাঞ্জাব জয়ের পর আম আদমি পার্টি গুজরাটেও পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করেছে। আসন্ন গুজরাট নির্বাচনকে পাখির চোখ করেছেন কেজরিওয়াল। একই ভাবে কংগ্রেস। রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় মানুষের ঢল দেখা গেছে। পাশাপাশি দুই দশক পর কংগ্রেসের সভাপতির পদে মল্লিকার্জুন খাড়গে। পরিবারতন্ত্রের খোলস ছেড়ে বাইরে বের হতে চায় শতাব্দী প্রাচীন রাজনৈতিক দলটি। তার জেরে কিছুটা সমর্থন জোটাতে সক্ষম হচ্ছে কংগ্রেস।

ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া বিজেপি। বিরোধীদের মতে এবারও মেরুকরণ রাজনীতির পথেই হাঁটছে ক্ষমতাসীন দলটি। নির্বাচনের দিন ঘোষণার আগেই সোমবার (৩১ অক্টোবর) ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, আপাতত গুজরাটের মেহসানা ও আনন্দ জেলায় নাগরিকত্ব প্রদান কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে মেহসানা ও আনন্দ জেলার জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছে, তারা যেন পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে এই দুই জেলায় আগত হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, খ্রিস্টান ও পার্শিদের আবেদনের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেয়। তবে তারাই আবেদন করতে পারবেন যারা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে অবস্থান করেছে।

ফলে ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন এবং সম্প্রতি হয়ে যাওয়া উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের পর চলতি সময়ে বাকি বিধানসভা ভোটের মধ্যে গুজরাট ভোটের ফলাফল নিয়ে ভারতবাসীর চোখ থাকবে। প্রথমত, মোদী-শাহর রাজ্য। ফলে বিজেপির কাছে এটা মর্যাদার লড়াই। এর আগে পশ্চিমবঙ্গে দেখা গেছে, যেই কেন্দ্র থেকে মমতার উত্থান সেই নন্দীগ্রামেই মমতাকে পরাস্ত করেছিল বিজেপি। দ্বিতীয়ত, লোকসভার ভোটের আগে বিজেপির গুজরাট পরীক্ষা। এই রাজ্যের নির্বাচনই একটা ধারণা দিতে পারবে আগামীর লোকসভা নির্বাচনে ক্ষমতা কার হাতে থাকবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com