মোদি সরকারের বিধায়ক দিল্লি দাঙ্গায় লোক পাঠানোর কথা স্বীকার করলেন
ভারতে দিল্লি দাঙ্গায় লোক পাঠানোর কথা স্বীকার করলেন লোনির বিজেপি বিধায়ক নন্দ কিশোর গুর্জর। শুরু বিতর্ক।
রোববার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আয়োজনে এক ‘বিরাট হিন্দু সভা’র আয়োজন হয় দিল্লির অদূরে। সেখানে যোগ দিয়েছিলেন লোনির প্রভাবশালী বিজেপি বিধায়ক নন্দ কিশোর গুর্জর। দিল্লি দাঙ্গা ছাড়াও মুসলিমদের নিয়ে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য করেন তিনি। সভাটি নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেছে পুলিশ। তবে কারো নামে এফআইআর করা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এদিনের সভার মন্তব্য নিয়ে রীতিমতো বিতর্ক শুরু হয়েছে।
এদিনের সভায় নন্দ কিশোর বলেছেন, ‘আমরা কাউকে মারি না। কিন্তু আমাদের মারলে আমরা ছেড়ে কথা বলি না। দিল্লিতে সিএএ নিয়ে দাঙ্গা হয়েছিল। হিন্দুদের উপর অত্যাচার হচ্ছিল। তখন আপনাদের ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম। তখন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, আমি আড়াই লাখ লোক নিয়ে দিল্লিতে ঢুকেছি। আমি তো বোঝানোর জন্য নিয়ে গেছিলাম।’ এরপরই নন্দ কিশোর বলেন, পুলিশ তার উপর মামলা দায়ের করে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি জেহাদিদের মারবেন। সারা জীবন মারবেন।
নন্দ কিশোরের এহেন বক্তব্যে শুরু হয় বিতর্ক। প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি নন্দ কিশোর স্বীকার করে নিচ্ছেন যে, তিনি দিল্লি দাঙ্গায় হাজির ছিলেন এবং সহিংসতায় উৎসাহ দিয়েছেন? বহু মানুষ নন্দের বক্তব্য টুইট করে প্রশ্ন তোলেন।
ওই একই সভায় মুসলিমদের সরাসরি বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ প্রবেশ বর্মা। তিনি মুসলিমদের নাম না করে বলেছেন, তাদের দোকান থেকে জিনিস কেনা বন্ধ করতে হবে। তাদেরকে কোনোরকম কাজ দেয়া যাবে না। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী এমন কথা বলা কেবল নীতিবিরুদ্ধ নয়, শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিভাবে প্রকাশ্য সভায় প্রবেশ বর্মা এমন কথা বললেন, তা নিয়ে নানা মহলে অভিযোগ উঠেছে।
বিতর্ক শুরু হওয়ার পর নন্দ বলেছেন, তিনি দিল্লি দাঙ্গা নিয়ে কথা বলেননি। সংবাদমাধ্যম অকারণে বিতর্ক তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। লোনির সহিংসতা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। মুসলিমদের বিরুদ্ধেও তিনি কোনো কথা বলেননি, বলেছেন যারা হিন্দুদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে। যদিও তার বক্তৃতার ফুটেজ অন্য তথ্যই দেয়।
সহোদরার ডিসিপি আর সাথিয়াসুন্দরম সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘১৮৮ ধারা অনুযায়ী আমরা মামলা দায়ের করেছি। সংগঠকরা পুলিশের অনুমতি না নিয়েই এই সভার আয়োজন করেছিল।’ যদিও পুলিশের মামলায় ওই অনুষ্ঠানের কোনো সংগঠক বা বক্তার নামের উল্লেখ নেই।
পুলিশের দাবি, তারা ভিডিও খতিয়ে দেখছে। যারা অন্যায় করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়েছে পুলিশের তরফে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে