ইউক্রেনে কঠিন পরিস্থিতির মুখে রাশিয়া
ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে ঘোষণা করার পর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সতর্ক করেছেন, এসব অঞ্চলে হামলা হলে তা রাশিয়ার ওপর হামলা হিসেবেই বিবেচিত হবে।
কিন্তু হুমকি তোয়াক্কা না করে ইউক্রেন এ অন্তর্ভুক্তিকে শুধু অস্বীকারই করছে না; বরং এসব এলাকায় হামলা করে তাদের ভূমি পুনরুদ্ধারও করছে।
এ পরিস্থিতিতে পুতিনের সামনে এখন বিকল্প কী? তিনি কি দখল ছেড়ে দেবেন নাকি যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন? এ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স কলেজের সেন্টার ফর ডিফেন্স স্টাডিজের সিনিয়র গবেষক ম্যাথিউ সাসেক্স অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক দ্য লোওয়ি ইনস্টিটিউটের এক সাময়িকীতে সম্ভাব্য কয়েকটি পথের কথা উল্লেখ করেছেন, যেগুলো পুতিন নিতে পারেন।
ম্যাথিউ সাসেক্সের মতে, পুতিন এখন যেটি করতে পারেন তার মধ্যে রয়েছে—
ইউক্রেনে ব্যাপকভাবে সহিংসতা বাড়ানো এবং রাশিয়ার ‘আক্রমণাত্মক সামরিক কৌশল’ প্রয়োগ, যেমন- শত্রু বাহিনীকে আটকে রাখা, শহরগুলোকে জিম্মি করে রাখা, নির্বিচারে বোমাবর্ষণ করে প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে দেওয়া।
এর পলে খুব দ্রুততার সঙ্গে যুদ্ধে জয়লাভ করা, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে পটভূমি থেকে সরিয়ে ফেলা এবং পুতিনের ঐক্যবদ্ধ ‘রাশিয়ার’ যে জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি তা অর্জন করা সম্ভব হলেও এর ফলে ভয়াবহভাবে বেসামরিক মানুষের জীবন যাবে।
ইউক্রেনে বিদ্রোহ আরও মাথাচাড়া দেবে। আন্তর্জাতিক ক্ষোভ বাড়বে যেটি রাশিয়াকে একঘরে করে দিতে পারে।
তিনি বলেন, রাশিয়ার অর্থনীতি ১৯৯০ সালের মধ্যবর্তী সময়ের চেয়েও খারাপের দিকে যেতে পারে এবং দেশের মধ্যে থেকেই পুতিনের ক্ষমতা হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।
সাময়িকভাবে পুতিন চরম বিশৃঙ্খল একটি পরিস্থিতি থেকে সরে আসতে পারবেন যেটি তিনিই তৈরি করেছেন।
ইতিবাচক কিছু ঘটতে পারে যেমন দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক মোটামুটিভাবে স্বাধীন অঞ্চলের মর্যাদা পেতে পারে এবং ইউক্রেন একটি ‘সেমি নিউট্রাল’ অবস্থান নিতে পারে। সেই সঙ্গে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হতে পারে।
এতে পুতিনের ইমেজ দেশে এবং আন্তর্জাতিকভাবে খারাপ হতে পারে। ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে রাশিয়াকে পিছু হটতে দেখা গেলেও তাদের পক্ষ থেকে পাল্টা হামলার তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।
যদিও রাশিয়া সৈন্য ঘাটতি মেটাতে তিন লাখ রিজার্ভ সৈন্য ডাকার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু শুরু থেকেই পুরো প্রক্রিয়া যেভাবে বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছে, তাতে করে প্রশ্ন উঠছে এই রিজার্ভ সৈন্য তলব করে রাশিয়া যুদ্ধের মোড় কতটা ঘোরাতে পারবে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি।