বিএনপির র্যালিতে পুলিশের গুলি: রাজনৈতিক দলের নিন্দা
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে পুলিশের গুলিতে একজন নিহত ও বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোট।
গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক পৃথক বিবৃতিতে দলগুলোর নেতারা এই মত জানান।
সাতদলীয় গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে নারায়ণগঞ্জ, নেত্রকোনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ডাকা কর্মসূচিতে পুলিশের হামলা, গুলিবর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, ‘ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সরকার।’
জোনায়েদ সাকির সই করা বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘জনগণকে হত্যা করে কেউ পার পাবে না। বাংলাদেশে একটি গণঅভ্যুত্থান আসন্ন। সেই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন হবে।’
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, ‘বিরোধী দলের কর্মসূচিতে ইচ্ছাকৃতভাবে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠন ও পুলিশ যৌথভাবে বাধা সৃষ্টি করে এবং কোথাও কোথাও সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনাও ঘটেছে। পুলিশ নানা অজুহাতে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। বিএনপি’র ডাকা সমাবেশের বিপরীতে আওয়ামী লীগের পাল্টা কর্মসূচি এবং ১৪৪ ধারা ঘিরে বিভিন্ন স্থান রণক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে।’
আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘এসবের মাধ্যমে সরকার প্রমাণ করছে ন্যূনতম গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার আগ্রহী নয়, বরং রাষ্ট্রযন্ত্র ও পেটুয়া বাহিনী দিয়ে হত্যাযজ্ঞ ও নিপীড়নের মাধ্যমে কর্তৃতবাদী শাসন ব্যবস্থা দীর্ঘস্থায়ী করতে সরকার বেশি আগ্রহী। কারণ সরকারের পায়ের তলার মাটি দিন দিন সরে যাচ্ছে।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়ে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে গিয়ে গোটা দেশে তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। বিরোধীদের দমন করতে গিয়ে দেশকে তারা গভীর অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিচ্ছে।’
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক মাসুদ রানা বিবৃতিতে বলেন, ‘এ ঘটনা কোনও গণতান্ত্রিক চেতনাসম্পন্ন মানুষ কিংবা রাজনৈতিক শক্তি সমর্থন করবে না।’
গণফোরাম (একাংশ) সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টুর সভাপতিত্বে দলের এক সভায় নেতারা বলেন, ‘অবৈধ সরকার ক্ষমতা অবৈধভাবে টিকিয়ে রাখতে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ দিয়ে ন্যক্কারজনক হামলা করে মানুষ হত্যার মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে।’
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বলেন, ‘বিরোধী দলের সভা সমাবেশ মিছিলে হামলা চালিয়ে, গুলি করে নেতা-কর্মীকে হত্যার মাধ্যমে জনগণের পুঞ্জীভূত বিক্ষোভ থেকে সরকার নিজেদের বেরুনোর পথ তৈরি করে চলেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাসে ভোটের মাধ্যমে কোনও দাবি আদায় হয়নি। রাজপথে গণআন্দোলনের মধ্য দিয়েই সব কিছুর ফয়সালা হয়েছে।’
এবি পার্টির আহবায়ক, সাবেক সচিব এএফএম সোলায়মান চৌধুরী ও সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে বিএনপিকর্মী নিহত এবং সারাদেশে কয়েকশত নেতাকর্মী আহত হওয়ার ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি।’
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড ও সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ এক যৌথ বিবৃতিতে নারায়ণগঞ্জ, নেত্রকোনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির ওপর পুলিশের হামলা-গুলিবর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তারা অবিলম্বে দায়ী পুলিশ সদস্যদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেছেন।