বিএনপির সমাবেশ ঠেকাতে ফেনীতে মোড়ে মোড়ে ছাত্রলীগের মহড়া-মারধর
ফেনীর দাগনভূঞায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ ঠেকাতে ছাত্রলীগের পাল্টা কর্মসূচিকে ঘিরে দুই দলের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে উপজেলাজুড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পৌর শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত থেকে পৌর শহরে মোটরসাইকেল মহড়া দিচ্ছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। থেমে থেমে বিভিন্ন এলাকায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। সোমবার রাতে যুবদলের কয়েকজন নেতার বাড়ীতে হামলা, মারধর করা হয় বলে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ।
মঙ্গলবার সকাল থেকে বিএনপির কর্মসূচিতে আসার পথে উপজেলা সদরের কলেজ রোড, গজারিয়া রোড, মাতুভূঞা এলাকায় ছাত্রলীগের হামলায় অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করেন তারা। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে এবং অন্যরা গোপনে অন্যত্র চিকিৎসা নিচ্ছে।
আহত বিএনপি কর্মীদের মধ্যে রহিম মোল্লা, সৈকত, মিলন, সোহাগ, মহিউদ্দীন, নুর ইসলাম ও ফাহাদের নাম জানা গেছে।
দুপুর সাড়ে ১২টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় আতাতুর্ক স্কুল মার্কেটের সামনে, কলেজ রোড, চৌমুহনী রোডে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছে। এছাড়া সিলোনীয়া বাজার, বেকের বাজার, সিন্দুরপুর, রাজাপুর, কোরাইশমুন্সী সহ বিভিন্ন গ্রামের হাট-বাজারে পাহারা বসানো হয়েছে।
বিএনপি সূত্র জানায়, আজ মঙ্গলবার বিকালে দাগনভূঞা পৌর শহরে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রধান অতিথি থাকবেন। উপজেলা বিএনপির সভাপতি আকবর হোসেনের সভাপতিত্বে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ সভায় উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
এ নিয়ে গত ক’দিন ধরে বিএনপি ব্যাপক প্রস্তুতি চললেও কর্মসূচি ঠেকাতে ইকবাল মেমোরিয়াল কলেজ ছাত্রলীগ একইদিন বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
তবে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আকবর হোসেন জানিয়েছেন, যেকোনো মূল্যে তারা সমাবেশ করবেন। সমাবেশে অংশ নিতে নেতাকর্মীরা আসার পথে পথে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা বাধা দিয়ে মারধর করছেন। অনেককে মারধরের পর মোবাইল ও টাকা নিয়ে যায় এবং তাদের সমাবেশে এলে মেরে লাশ গুম করার হুমকি দেয়। গত ক’দিন ধরে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি ও বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মীর উপর হামলা করা হয়েছে।
এদিকে দাগনভূঞা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক খান জানান, দাগনভূঞায় যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমাদের নেতাকর্মীরা দাগনভূঞা বাজারের জিরো পয়েন্টসহ সব জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন। তবে কাউকে বাধা দেয়া বা মারধরের ঘটনা ঘটেনি।