কাজী আবদুল আউয়ালের বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ‘অন্ধ ও বধির’ বলে মন্তব্য করে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, তারা (কমিশন) কিছু শুনতে চায় না, দেখতেও পায় না।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, দেশের সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যমসহ অধিকাংশ ব্যক্তি ইভিএমের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অথচ কারও কথা না শুনে ইভিএমের কারিগরি ত্রুটি না দেখে নির্বাচন কমিশন ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোটের ঘোষণা দিলো। কমিশন কী উদ্দেশে এ কাজ করছে, তা আমাদের বোধগম্য নয়।
রোববার (২৮ আগস্ট) দুপুর ১২টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে সুজন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন বলছে ইভিএমে কারচুপির সুযোগ নেই। অথচ ইভিএম প্রযুক্তিতে কারিগরি ত্রুটি রয়েছে, সমস্যা রয়েছে। ইভিএম প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্বাচনের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এটি একটি দুর্বল যন্ত্র। এর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। ইভিএমের নিয়ন্ত্রণ বাইরের কারও হাতে না থাকলেও নির্বাচন কমিশন ও কর্তাব্যক্তিদের হাতে আছে। ১৫০ আসনে ইভিএম দেওয়ার সিদ্ধান্তের ফলে কমিশন প্রতিটি মানুষের আস্থা হারিয়েছে।
তিনি বলেন, ব্যালট পেপার না হলে তারা (নির্বাচন কমিশন) যা বলবে তাই চূড়ান্ত। এটা যাচাই করা আমাদের পক্ষে কঠিন। আমাদের শঙ্কা নির্বাচন কমিশনের সততা বিশ্বাসযোগ্যতা ও ইভিএমের কারিগরি ত্রুটি নিয়ে।
তিনি আরও বলেন, নতুন ইভিএম কিনতে হলে অর্ধ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হবে। অন্যদিকে আমরা বর্তমানে চরম সংকটে আছি। সংকট নিরসনে ৭ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছি। এমতাবস্থায় এটি কতটুকু যুক্তিযুক্ত আমার বোধগম্য নয়।
প্রবন্ধ উপস্থাপনে প্রযুক্তিবিদ ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ইভিএমের অন্য বিষয়গুলো ডিজিটাল হলেও ফলাফল তৈরি প্রক্রিয়া ডিজিটাল নয়। এটি ম্যানুয়াল হওয়ায় অসচ্ছতা ও কারচুপির সুযোগ আছে। কমিশনের ৭০-৭৫টি আসনে ইভিএমে নির্বাচন করার সক্ষমতা আছে মাত্র। অর্থনৈতিক এ সংকটে নতুন করে ইভিএম কিনে ডলার খরচ করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
এ প্রসঙ্গে ড. বদিউল বলেন, নিখুঁত বায়োমেট্রিক ও এনআইডি সমস্যা থাকায় ইভিএম ব্যবহার সঠিক হবে না। মাত্র এক বছরের মধ্যে এ সমস্যা সমাধান সম্ভবও নয়। এ সমস্যা মেশিনের নয়, বরং সঠিক ডাটাবেইজ সমস্যা।
সাবেক সচিব আবদুল লতিফ মন্ডল বলেন, নির্বাচনে কুশীলব হলো রাজনৈতিক দলগুলো। বিশ্বের ১৭৮টি দেশ যারা ইভিএমের পক্ষে। আমার জানা মতে সেসব দেশে স্বৈরশাসক সরকার নেই।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সুজন সহ-সম্পাদক জাকির হোসেনসহ অন্য সদস্যরা।