ছাত্রলীগের অপপ্রচারে শিক্ষার্থীদের জবাব

0

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের ব্যানারে অনুষ্ঠিত শোক সভার যারা বিরোধিতা করেছে তাদের শিবির আখ্যা দিয়ে বুয়েটে ফের ছাত্ররাজনীতি সচল করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। এর জবাবে শিক্ষার্থীরা একটি সংবাদ সম্মেলন করে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।

গত রোববার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে আয়োজিত একটি মানববন্ধন থেকে বিক্ষোভকারীদের ‘শিবির’ আখ্যা দেন জয়। এরপর বেলা ২টায় বুয়েট অডিটোরিয়ামের সামনে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা।

ঢাবি ছাত্রলীগ আয়োজিত মানববন্ধনে জয় বলেন, বুয়েটে যে ঘটনা ঘটেছে কোনো সাধারণ শিক্ষার্থী এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জন্য কি। সুতরাং জামায়াত-শিবিরের লোকেরাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা কারা যারা সেøাগান দেয় ‘ছাত্রলীগের ঠিকানা, বুয়েট ক্যাম্পাসে হবে না’ এত সহজ! এটা এত সহজ না। বাংলাদেশের প্রতিটি ইঞ্চিতে ছাত্রলীগের ইতিহাস রয়েছে। ছাত্রলীগকে যারা ঠিকানা মনে করে না তাদের উদ্দেশ্য আমরা বুঝে গেছি। তাদের উদ্দেশ্য হলো বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর কাঁঠাল ভেঙে মেধাবী শিক্ষার্থীদের অন্যায়ের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা। যারা ছাত্রলীগ এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করেছে তাদের বিচার হবে।

ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, গত রাতে বুয়েট ক্যাম্পাসে আমরা হিজবুত তাহরীর, শিবির এবং উগ্রবাদীচক্রের যে তাণ্ডব দেখতে পেয়েছি সেটির প্রতি ধিক্কার জানাই। এই ঘটনায় বুয়েট প্রশাসনের নীরবতা আমাদের ভাবিয়ে তোলে। তারাই নাকি বাংলাদেশের সবচেয়ে মেধাবী। ছাত্রলীগসহ যেসব বাম সংগঠন প্রগতিশীলতার রাজনীতি করে তাদের নিষিদ্ধ করে আপনারা উগ্রবাদী কার্যক্রমকে উৎসাহিত করছেন।

শিক্ষার্থীদের শিবির আখ্যা দেয়ার জবাবে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, লেজুড়বৃত্তির ছাত্র রাজনীতির কালো থাবা যেন ক্যাম্পাসে আবার ত্রাসের রাজত্বে পরিণত না করতে পারে, সেই আশঙ্কার জায়গা থেকে গতকাল আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সমবেত হই। আমরা অবাক হয়ে লক্ষ্য করছি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্লাটফর্মে আমাদের কর্মসূচি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জোর অপপ্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ অপপ্রচার আমাদেরকে করেছে ভীত, সন্ত্রস্ত এবং একই সাথে ব্যথিত। আমরা স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করতে চাই, আমাদের গতকালকের কর্মসূচি কোনোভাবেই ক্যাম্পাসে আয়োজিত শোক দিবসের অনুষ্ঠান বিরোধী ছিল না। আমরা বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধু সার্বজনীন, তার চেতনা ধারণ করতে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের পরিচয় ধারণের প্রয়োজন পড়ে না। বুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে জাতীয় দিবসগুলোর অনুষ্ঠান নিয়মিত আয়োজিত হয়ে আসছে।

শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, গত ১১ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে বুয়েটে সব রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রম কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে নিষিদ্ধ করা হয়। বুয়েটের প্রশাসনিক আইন অনুসারে, বুয়েটের বর্তমান ও সাবেক সব শিক্ষার্থী, প্রশাসনিক এবং অ্যাকাডেমিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি ওই নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে বাধ্য। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের ব্যানার দেখে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে অবহিত করে এবং কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামের সামনে অবস্থান করে। সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতির পুনরুত্থানের আশঙ্কায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে উত্থাপন করা হয়। সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠান যথারীতি শেষ হয় এবং শিক্ষার্থীরা সেখানে কোনো ধরনের বাধা দেয়নি। আমাদের বিক্ষোভের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের ব্যানার ব্যবহার করার অনুমতি প্রদান করায় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জবাবদিহিতা আদায় করা।

 

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com