‘দেশের জনগণকে অন্ধকারে রেখে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে গণবিরোধী চুক্তি করেছে সরকার’

0

জনগণের সম্মতি ছাড়া একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের উপর দিয়ে অন্য একটি দেশের ট্রেন চলাচলের চুক্তিকে সার্বভৌমত্ব বিরোধী চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যা দিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি। একটি প্রহসনমূলক ভোটারবিহীন নির্বাচনে ভারতের অনৈতিক সমর্থনের কৃতজ্ঞতা স্বরূপ প্রতিদান হিসেবে গোপন প্রতিশ্রুতি মোতাবেক দাসখত লিখে দিতে সরকার ভারতের সাথে অন্যায্য চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে দলটি।

সোমবার (২৪ জুন) এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব অভিযোগ করে এবি পার্টির নেতারা।

এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের সঞ্চালনায় ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখেন দলের আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার ও অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা লে. কর্ণেল (অব.) দিদারুল আলম প্রমূখ।

প্রেস ব্রিফিংয়ে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণকে অন্ধকারে রেখে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে যে গণবিরোধী চুক্তি সরকার করেছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪৫ অনুচ্ছেদে বলা আছে ভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে কোনো চুক্তি হলে তা সংসদে তুলে ধরতে হবে কিন্তু আওয়ামী লীগ কখনো তা করেনি। এই সংসদ যে ডামি সংসদ তাই সরকারের কাছেও এর কোনো গুরুত্ব নাই। সংসদে কেউ এ বিষয়ে কোন প্রশ্ন করছে না। ব্লু ইকোনমির নামে বাংলাদেশের সম্পদ ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ভারতের সাথে স্পর্শকাতর তথ্য বিনিময়ের যে চুক্তি হয়েছে সে সম্পর্ক জনগনকে অবহিত করতে হবে। ভারতের সাথে স্যাটেলাইট চুক্তির মাধ্যমে জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হবার আশঙ্কা প্রকাশ করে তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয়, বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা হয়েছে কি না নাগরিক হিসাবে আমরা জানতে চাই।

লে. কর্ণেল (অব.) দিদারুল আলম তার বক্তব্যে বলেন, ভারতকে ট্রানজিট দেয়া ও ট্রেন চলাচলের সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের কী লাভ বা স্বার্থ তা পরিস্কার করতে হবে। নদীর পানি প্রবাহের আন্তর্জাতিক আইন কখনোই ভারত মানেনি অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমাদের নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আমাদের অধিকার। এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে নিয়ে এবি পার্টি আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, এই সরকার ভারতের সাথে অবৈধ প্রেমে মত্ত। তারা জনগণের সামনে চুক্তি নিয়ে পরিষ্কার করে গলা উঁচিয়ে কথা বলতে পারে না। তারা গোপনে লুকিয়ে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে ভারতের সাথে চুক্তি করেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে ভারত বাংলাদেশ যত চুক্তি হয়েছে কোনোটাই ভারত বাস্তবায়ন করেনি। আমরা বেরুবাড়ি দিয়ে দিলাম কিন্তু আঙ্গোরপোতাহ পেতে বছরের পর বছর ঘুরতে হয়েছে। কাজেই ভারত কখনো বন্ধুত্বের কোনো পরিচয় রাখেনি।

সভাপতির বক্তব্যে এএফএম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, অনির্বাচিত সরকার যে অন্যায় চুক্তি করেছে আমরা সেজন্য ধিক্কার জানাই। বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছি, আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করি, নিজেদের আত্মমর্যাদা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করি। সাম্প্রতিক সময়ে কিছু পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন মতো সংগঠন বিবৃতি দিয়ে দুর্নীতিবাজদের পক্ষ নেয়ার বিষয়টি অনৈতিক।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে যারা ক্ষমতার দাপটে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছে তদন্তের কারণে তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কথা কিন্তু পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন আতঙ্কিত হচ্ছে জনগণ তা জানতে চায়? প্রজাতন্ত্রের কতিপয় কর্মচারী কিভাবে এতো পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছে এই জবাব জনগণকে দিতে হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি জানান।

ব্যারিষ্টার ফুয়াদ বলেন, আমরা দিল্লিকে বলতে চাই, বাংলাদেশের জনগণের সাথে প্রতারণা করে একটি অবৈধ, অনির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রীর সাথে চুক্তি করে হয়তো সাময়িক সুবিধা নিতে পারবেন কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এদেশের জনগণ এই অসম চুক্তি মেনে নেবে না।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com