মুহূর্তেই ব্রহ্মপুত্রে হারিয়ে গেল বিদ্যালয়ের দোতলা ভবন
ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে নিলামে বিক্রিত গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কাউয়াবাধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোতলা ভবন। এতে একদিকে হুমকির মুখে পড়েছে শিক্ষা কার্যক্রম।
অপরদিকে সর্বশান্ত হয়ে গেছে নিলামে ওই বিদ্যালয় ভবন কিনে নেওয়া জোবেদা ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এছাড়া দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে।
রোববার (৩ জুলাই) দুপুরে বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের ৩৩ শতাংশ জমির মধ্যে ৩০ শতাংশ জমিই চলে গেছে নদীর বুকে। বর্তমানে বিদ্যালয়ে পাঠদানের কোনো ভবন নেই। এতে হুমকির মুখে পড়েছে বিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থা।
তিনি আরও বলেন, পাশেই নিজের আরেকটি জমিতে বিকল্প ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানের পরিকল্পনা করা হলেও টিনসেড কিংবা অবকাঠামো নির্মাণের মতো অর্থ আমাদের হাতে নেই। সরকারি সহযোগিতা না পেলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধের আশঙ্কা করছি।
জোবেদা ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত ২৬ জুন আড়াই লাখ টাকায় ভবনটি নিলামে কেনেন তিনি।
এরপর কিছু অংশ ভাঙার কাজ চলছিল। শ্রমিকরা কিছু ইট ও রড সরিয়ে নিলেও ভাঙনের তীব্রতায় শুক্রবার (১ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটি ধসে ব্রহ্মপুত্রের গর্ভে তলিয়ে যায়। নিলাম বিজ্ঞপ্তির অল্প সময় অর্থাৎ চার-পাঁচদিনে ভবনটি সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। ভবনটি রক্ষায় অন্তত ১৫ দিন আগে কর্তৃপক্ষের নিলাম বিজ্ঞপ্তি দেওয়া দরকার ছিল, আক্ষেপ করে বলেন তিনি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাসুম মিয়া জানান, ১৫ দিন আগেও নদীর ভাঙন এলাকা থেকে ১৫০ মিটার দূরত্বে ভবনটির অবস্থান ছিল। পানি কমায় ব্রহ্মপুত্রের অব্যাহত ভাঙনের মুখে পড়ে ভবনটি। এ পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিদ্যালয়টি নিলামে বিক্রি করা হয়। কিন্তু ঠিকাদার দ্বিতল ভবনটি ভেঙে সরিয়ে নেওয়ার আগেই তলিয়ে যায়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কাউয়াবাধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। ২০০৯ সালে দ্বিতল ভবনটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়। এ ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলে আসছিল। কিন্তু এখন ভবনটি নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় পাঠদান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে ফুলছড়ি উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম কামরুজ্জামান জানান, বিদ্যালয়ের অধিকাংশ জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। অবশিষ্ট জমিতে বিদ্যালয় নির্মাণ সম্ভব নয়। কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত অন্যত্র বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।