পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের

0
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি জা‌নি‌য়ে‌ছে বাংলাদেশ হিন্দু  বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। শ‌নিবার (২ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উ‌দ্যোগে এক সমা‌বে‌শে এ দা‌বি জানা‌নো হয়।
সমাবেশে অংশ নেয় বাংলাদেশ শিক্ষক ঐক্য পরিষদ, যুব ঐক্য পরিষদ, ছাত্র এক্য পরিষদ, সনাতন সংগঠনসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু সংগঠের সদস্যরা।
তারা ব‌লেন, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজামণ্ডপে হামলা নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা হয় এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ৩৩ হাজার পূজামণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে—পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের এমন মিথ্যা বক্তব্য দি‌য়ে‌ছেন তাই তার পদত্যাগ দা‌বি কর‌ছি।
তারা আরও বলছেন, এ মিথ্যাচারের দায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিতে হবে। অন্যথায় আগামী নির্বাচনে প্রার্থী করা হলে সংখ্যালঘু ভোটাররা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বর্জন করবে।
সমাবেশে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ঊষাতন তালুকদার বলেন, এ দেশে এখন শিক্ষকদের গলায় জুতার মালা পরানো হয়, তাও আবার প্রশাসনের উপস্থিতিতে। সরকার ভাবছে তাদের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটের প্রয়োজন নেই। কিন্তু সোনার বাংলা গড়তে হলে দেশের সব মানুষের অধিকার, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে বাঁচাতে হলে সরকারকে বাধ্য করতে হবে যে তারা এসব ঘটনার বিচার করে।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আরেক সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, যে বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সে বাংলাদেশ আমরা পাইনি। দেশে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ, পাকিস্তানি ধারার অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রয়েছে। নড়াইলে শিক্ষককে অপমান করা হয়েছে, শিক্ষককে পিটিয়ে মারা হচ্ছে। এমন বাংলাদেশ কেউ চায় না। সবাই মিলে দেশের বিভিন্ন স্থানে হওয়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রতিবাদ করতে হবে, এগিয়ে আসতে হবে।
নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছনার ঘটনায় দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়ে পরিষদের আরেক সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, সমাজের, দেশের মানুষ গড়ার কারিগরদের আজ অপদস্ত করা হচ্ছে, শিক্ষকদের খুন করা হয়েছে। এ লজ্জা রাখার জায়গা নেই। এসব ঘটনার খেসরত দিতে হবে এ জাতিকে।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বিচার হয় না মন্তব্য করে নির্মল রোজারিও বলেন, সন্ত্রাস দমনে সরকার সফল হয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তায় সরকারকে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিতে হবে। বিচারহীনতার কারণে অনেক ঘটনা একের পর এক ঘটে যাচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে নির্মল রোজারিও বলেন,
‘বাংলাদেশ সম্পর্কে তিনি অজ্ঞ, তা প্রকাশ করেছেন। আপনি দায়িত্বশীল বক্তব্য রাখবেন, দেশে সম্প্রীতি বিনষ্ট করবেন না। অদায়িত্বশীল বক্তব্য রাখলে দেশের সম্প্রীতি বিনষ্ট হবে।’
পরিষদের কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতিমন্ডলীর মধ্যে রয়েছেন সুব্রত রায় চৌধুরী বলেন, সারা দেশে অসংখ্য শিক্ষক নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। হেফাজতের নির্দেশে পাঠ্যপুস্তক পরিবর্তন করা হয়েছে। দেশে মানবিকতা, মূল্যবোধ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসেও দুঃখ নিয়ে বলতে হচ্ছে, এ বাংলাদেশ কেউ চায় না।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি তোপখানা সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এর আগে সমাবেশ থেকে আগামী ১৬ জুলাই বিকেল তিনটায় সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
মিছিলের আগে হওয়া সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদ রয়েছেন মনীন্দ্র কুমার নাথ, জয়ন্ত কুমার দেব প্রমুখ।
তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com