মঙ্কিপক্স নিয়ে যে শঙ্কার কথা জানাল ডব্লিউএইচও

0
বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা মাঙ্কিপক্স অন্তঃসত্ত্বা, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়া ব্যক্তি ও শিশুসহ ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বুধবার (২৯ জুন) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এমন আশঙ্কার কথাই প্রকাশ করেছে। ব্রিটেনের দুটি সংক্রমণসহ আক্রান্ত শিশু, স্পেন ও ফ্রান্সের ফলো-আপ প্রতিবেদনের ওপর তদন্ত করে দেখেছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক শীর্ষ সংস্থাটি। তবে দুই শিশুর রোগ মারাত্মক রূপ নেয়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকায় একটি স্থানীয় রোগের আখ্যা পেয়েছে মাঙ্কিপক্স। কিন্তু এবার মহাদেশটির বাইরের অন্তত ৫০টি দেশে ছড়িয়েছে সংক্রামক রোগটি। নমুনা পরীক্ষা ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলছে।
সংস্থাটির প্রধান টেড্রোস আধানম গেবরিয়াসুস বলেন, টেকসই সংক্রমণ নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। আমার শঙ্কা, ভাইরাসটি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলছে। এখন এটি ঝুঁকিপূর্ণদের মধ্যে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে।
বুধবার জেনেভায় এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। গেল মে-তে প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত তিন হাজার ৪০০ মাঙ্কিপক্স রোগী আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে একজনের। ইউরোপে আক্রান্তদের অধিকাংশই একই লিঙ্গের সঙ্গে যৌনসম্পর্ক স্থাপনকারী পুরুষ।
যেসব দেশে রোগটির সচরাচর প্রকোপ আছে, চলতি বছরে সেসব দেশে দেড় হাজার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৬৬ রোগী।
করোনাভাইরাসের মতো এতটা দ্রুত ছড়ায় না মাঙ্কিপক্স। কিন্তু রোগটি এখন মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরিতে সক্ষম হয়েছে। গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ায় ‘বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করা হবে কি না; সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় সংস্থাটির সমালোচনা করে আফ্রিকার শীর্ষ বিজ্ঞানীরা বলেন, রোগটি তাদের অঞ্চলে বহু বছর ধরে সংকট তৈরি করে রেখেছে।
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের ব্যাঙ্গুই প্যাসটুয়ার ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ইমানুয়েল নাকুন বলেন, যখন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কোনো রোগ ছড়ায়, তখন সেটিকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হচ্ছে না। কিন্তু উন্নত দেশগুলোতে ছড়ালেই জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হচ্ছে।
মাঙ্কিপক্সের ওষুধ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে আসছেন এই গবেষক। তিনি বলেন, যদি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোনো জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে, তবে অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যদি প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশগুলোর মধ্যে সমানভাবে পদক্ষেপ নেয়ার রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকে, তবে প্রতিটি দেশের জন্যই তা উপকারী হবে।
মহামারির প্রাদুর্ভাব ঘটলে ডব্লিউএইচওর সর্বোচ্চ সতর্কতা হলো আন্তর্জাতিকভাবে ‘জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা’। বিশ্বের শীর্ষ স্বাস্থ্য সংস্থাটি মহামারি ঘোষণা করে না, তবে ২০২০ সালের মার্চে করোনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তারা এই পরিভাষাটি ব্যবহার করেছে।
তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com