সুনামগঞ্জে বেড়েই চলেছে পানিবাহিত রোগ
সুনামগঞ্জে ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়সহ বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। পর্যাপ্ত শয্যার অভাবে গুরুতর অসুস্থদের হাসপাতালের বারান্দা ও মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি বন্যার সময় পানি না ফুটিয়ে পান করার ফলে বেড়েছে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ।
দুর্ভোগ যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না সুনামগঞ্জবাসীর। দ্বিতীয় দফা বন্যা মোকাবিলা শেষে এখন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন জেলার মানুষ। সম্প্রতি উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয় সুনামগঞ্জের পৌর শহরসহ ১২ উপজেলা। ঘর বাড়ির পাশাপাশি ডুবে যায় এই জেলার সকল টিউবওয়েল। দেখা দেয় নিরাপদ পানির সংকট।
সেই সময় নিরাপদ পানি না পেয়ে ময়লা আবর্জনাযুক্ত ও দূষিত অনিরাপদ পানি পান করায় জেলাজুড়ে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয় ও চর্মরোগ। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি।
গত দুই দিন ধরে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। ফলে পর্যাপ্ত শয্যার অভাবে অধিকাংশ রোগী মেঝেতে শুয়েই চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয় নিয়ে ১৮৩ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় সামাল দিতে হিমসীম খেতে হচ্ছে হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজনরা জানিয়েছেন, বন্যার পর থেকেই প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে। শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে ছুটছেন তারা। এমনকি এক সিটে দুজন, তিনজন করে রোগীকেও জায়গা দিতে হচ্ছে। অনেকে জায়গা না পেয়ে থাকছেন মেঝেতেও।
চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন আমেনা বেগম বলেন, বন্যার পানিতে টিউবওয়েল ডুবে গিয়েছিল। পরে পচা পানি খেয়ে আজ শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন হালিমা বেগম বলেন, পানি কমার পর থেকেই বাচ্চারা সব অসুস্থ হয়ে পড়েছে। দুই দিন ধরে হাসপাতালে বাচ্চাকে নিয়ে ভর্তি আছি।
সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আহম্মদ হোসেন বলেন, সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যায় বেশিরভাগ পানি দূষিত হয়ে গেছে। যার কারণে পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে। গত দুইদিনে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ১৮৩ জন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে।