দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে যা বললেন ফখরুল-মান্না

0

রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে অতি দ্রুত সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় নাগরিক ঐক্যের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা বলেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপের অংশ হিসেবে নাগরিক ঐক্যের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি নেতারা।

এদিন বিকাল সোয়া ৫ টায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল নাগরিক ঐক্যের কার্যালয়ে যান। প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের বলেছি যে, আমরা গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করবার জন্য। দেশের মানুষের যে অধিকার হারিয়ে গেছে তাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। বেঁচে থাকবার অধিকার,ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। আজকের এই ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে অধিকারগুলো ফিরিয়ে আনতে হবে। সত্যিকার অর্থে জনগণের সরকার গঠন করার জন্য বৃহত্তর আন্দোলনের কথা ভেবে ইতিপূর্বে অনানুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেছি।

তিনি বলেন, ‘আজকে দেশের মানুষ আশা করে আছে যে, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তারা একটা ঐক্যের মধ্যে এই সরকারের বিরুদ্ধে একটা সফল কার্যকরী আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। সেই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে পরিবর্তন হবে। পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার এবং পার্লামেন্ট গঠন হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা কথা বলেছি। আমরা এখনও কথা বলছি অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে কথা বলব। অতি দ্রুত তাদের সঙ্গে কথা আলোচনা শেষ করে আমরা আশা করছি একটা যৌথভাবে আন্দোলনের সূচনা করতে পারব। আশা করি খুব শিগগিরই আমরা এই কাজটা করতে পারব।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে যে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছি তার মূল বিষয় হচ্ছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার। প্রধান বিষয় একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সময়ে একটা সরকার নিরপেক্ষ হবে। আলোচনা করেছি, তারপরের নির্বাচন কমিশন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যে নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল দলগুলোকে নিয়ে একটি মতামতের ভিত্তিতে সরকার গঠন করা। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইতিমধ্যে বলেছেন যে একটা জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। আরেকটি প্রধান বিষয় পক্ষথেকে যা আছে তাতে উনিও (মান্না) একমত হয়েছেন, তিনি বলেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটক করে রাখা হয়েছে, তার মুক্তি। শুধু আমরা নই দেশের বেশিরভাগ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর যে মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা এবং আটক করে রাখা হয়েছে তাদের মুক্তি মামলাগুলো প্রত্যাহার এই যে নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে এগুলোকে বন্ধ করা।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে বলতে চাই, আজকের আলোচনা অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে এবং একটি কার্যকরী হয়েছে আমরা আশা করছি এই আলোচনার রেশ ধরে বাকি দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হবে। আমরা আশা করছি অতি দ্রুত একটা সত্যিকার অর্থে আন্দোলন নিয়ে জনগণের সামনে প্রস্তুত হতে পারব।’

এ সময় মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, জনগণের পরিবর্তণের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে একটা আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য যা যা করা দরকার, তা নিয়ে বিস্তারিত না হলেও মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। একটি বিষয়ে আমরা একমত যে, এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন নয়, নির্দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আমরা লড়াই করব। বৈঠকের শুরুতেই আমরা সেই বিষয়ে কথা বলেছি। এটাই ছিল আলোচনার ভিত্তি। আন্দোলনকে যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে দলগুলোর বোঝাপড়ার বিষয়েও গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বৈঠকে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, নির্বাহী সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন অংশ নেন।

অন্যদিকে মান্নার সঙ্গে নাগরিক ঐক্যর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এস এম আকরাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাখরুল ইসলাম নবাব, জিল্লুর চৌধুরী দীপু, যুগ্ম সম্পাদক ডা. জাহেদ উর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আবু জাহেদ মোহাম্মদ সারওয়ার, আনিসুর রহমান খসরু, মাহবুব মুকুল, মনজুর কাদের, এস এম এ কবির হাসান, আবু তালেব দেওয়ান, মুহিদুজ্জামান মুহিদ, আব্দুর রাজ্জাক রাজা প্রমুখ বৈঠকে অংশ নেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com