সমাজ পরিবর্তনে দায়িত্বশীলদের অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, ব্যক্তিগত সফলতার জন্য প্রশিক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে আমরা জ্ঞানের ঘাটতি পূরণ করবো, যোগ্যতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করবো। যোগ্যতা, দক্ষতা যাদের আছে আল্লাহ তায়ালা নেতৃত্ব তাদের হাতেই দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আমরা পরিবর্তন করতে চাই। এটা আমরা সবসময় বলে আসছি। তার আগে নিজেদেরকে পরিবর্তন করতে হবে। সেই পরিবর্তনের জন্য আমাদের যেমন মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে, তেমনিভাবে মাঠে ভূমিকা রাখার জন্য এগিয়ে যেতে হবে। সমাজ পরিবর্তনে দায়িত্বশীলদের অগ্রনী ভূমিকা পালনের জন্য তিনি আহ্বান জানান।
বুধবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত লিডারশীপ ওয়ার্কশপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান তার বক্তব্যে আরো বলেন, যোগ্যতা যাদের আছে আল্লাহ তায়ালা নেতৃত্ব তাদের হাতেই দেন। এটাই আল্লাহর বিধান। নিজেদেরকে জনগণের খেদমতের জন্য তৈরি করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করাই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। তিনি কুরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, সেই ব্যক্তি সফল হবে, যে নিজেকে তাজকিয়া করতে পারলো, সংশোধন করতে পারলো। সংশোধনের এই ধারায়ই আমরা আছি। আজীবন থাকবো। মনজিলে পৌঁছতে হলে প্রতিনিয়ত নিজেদেরকে সেভাবে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের নিজেদেরকে পরিবর্তনের তিনটি দিক রয়েছে। প্রথম হলো- যেই পরিবর্তনটা আমরা চাই, তার পর্যাপ্ত জ্ঞান আছে কিনা? দ্বিতীয় হচ্ছে- সেই পরিবর্তনের জন্য কৌশল উদ্ভাবন করা। তৃতীয় হচ্ছে- সামর্থকে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজে লাগানো। এই তিনটার যখন সমন্বয় হয়, তাহলে মানুষ পরিবর্তন আশা করতে পারে। এর যে কোনো একটা ঘাটতি হলে কাঙ্খিত মানের পরিবর্তন সম্ভব নয়।
মহানগরী দক্ষিণকে রোল মডেলের ভূমিকা পালনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সমাজের সর্বস্তরে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। জনগণের সেবায় জনগণের দোড়গোরায় পৌঁছে যেতে হবে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে আমাদের যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সেই পরিবর্তনের জন্য আমাদের যেমন মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে, তেমনিভাবে মাঠে ভূমিকা রাখার জন্য এগিয়ে যেতে হবে। জাতির কল্যাণে আমরা যেন যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারি আল্লাহ যেন আমাদের সেই তৌফিক দান করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জ্ঞানের বিষয়ে গভীরতা অর্জনের পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন দৃষ্টিভঙ্গির সাথে ত্যাগ ও কুরবানীর মানসিকতায় নিজেদেরকে গড়ে তুলতে হবে। তৃণমূলে নেতৃত্ব বিকাশে দায়িত্বশীলদের এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার অন্যায়ভাবে জামায়াতের নেতাকর্মীদের আটকে রেখেছে। তিনি অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও মানুষের কল্যাণে সবসময় মানুষের পাশে থাকে। মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও আর্তমানবতার জন্য কাঙ্ক্ষিত কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি দায়িত্বশীলদের আরো বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ডা: শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ঈমানের আলোকে ইলম, ইলমের আলোকে আমল এবং সেই অনুপাতে ময়দানে তৎপরতা বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র গঠনে এখনই মানুষকে সজাগ হতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী পরকালীন জবাবদিহিতার চিন্তা নিয়ে সব মানুষের জন্য একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করতে চাই। আমাদের দিক নির্দেশনার জন্য রয়েছে মহাগ্রন্থ আল কুরআন। যেখানে মানবজাতির কল্যাণ ও মুক্তির সব দিক নির্দেশিত রয়েছে। তিনি জামায়াতে ইসলামীর ডাকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও ড: শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় লিডারশীপ ওয়ার্কশপে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর মঞ্জুরুল ইসলাম ভুইয়া, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন ও দেলওয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নানসহ মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ এবং বিভিন্ন থানা ও বিভাগের আমীর, নায়েবে আমীর ও সেক্রেটারিবৃন্দ।