সারা দেশে কোথায়-কখন ঈদের জামাত
করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর মীমিত পরিসরে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সংক্রমণ কমে আসায় এবার ঈদ ফিরছে উৎসবের পুরনো মেজাজে।
রবিবার বাংলাদেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে মঙ্গলবার।
এবার রোজার ঈদের প্রধান জামাতটি হবে সকাল ৮টায় ঢাকার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। একসাথে ৩৫ হাজার মানুষ ঈদগাহ ময়দানে নামাজ পড়তে পারবেন।
মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে জামাতে নামাজ পড়বেন ঈদের সকালে।
ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাতে জাতীয় ঈদগাহে চার স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
জামাতে ছাতা ও জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু না আনার অনুরোধ করেছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।মহামারির কারণে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া মাঠেও গত দুই বছর ঈদ জামাত হয়নি। আগে এই মাঠেই দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাতের আয়োজন হত।
এবার ঈদুল ফিতরের ১৯৫তম জামাতের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। সকাল ১০টায় শুরু হবে ঈদুল ফিতরের জামাত। ইমামতি করবেন মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।
শোলাকিয়ার ঈদ জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে। মোবাইল বা ছোটখাটো ডিভাইস নিয়ে মাঠে প্রবেশ করা যাবে না। শুধু জায়নামাজ নিয়ে জামাতে আসা যাবে।
ঈদের এই জামাতে যাতায়াতের সুবিধার জন্য শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেনেরও ব্যবস্থা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
বায়তুল মোকাররমে পাঁচটি জামাত
ঢাকার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে বরাবরের মতো এবারও রোজার ঈদের পাঁচটি জামাত হবে। প্রথম জামাত শুরু হবে সকাল ৭টায়। তাতে ইমামতি করবেন সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান।
এরপর সকাল ৮টা, সকাল ৯টা, সকাল ১০টা এবং বেলা ১০টা ৪৫ মিনিটে আরও চারটি জামাত হবে বায়তুল মোকাররমে।
আবহাওয়া প্রতিকূল হলে জাতীয় ঈদগাহের বদলে প্রধান ঈদ জামাত হবে বায়তুল মোকাররমে।
ঢাকায় অন্যান্য জামাত
রাজধানীতে ঈদগাহ ও মসজিদ মিলিয়ে ১ হাজার ৪৬৮টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। আজিমপুর ছাপড়া মসজিদে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৭টায়।
ধানমণ্ডির এলিফ্যান্ট রোডের তাকওয়া মসজিদে একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল সাড়ে ৮টায়। ধানমণ্ডির বায়তুল আমান মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায়, ঈদগাহ মাঠ মসজিদে ৮টায় এবং সোবহানবাগ জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত হবে।
পুরান ঢাকার লালবাগ শাহী মসজিদে সকাল ৮টা ও ৯টায় দুটি জামাত হবে। আজিমপুর কবরস্থান মসজিদে সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে চারটি জামাত হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথমটি সকাল ৮টায় এবং দ্বিতীয়টি সকাল ৯টায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল মসজিদে সকাল ৮টায়, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় এবং ফজলুল হক মুসলিম হলের পূর্ব পাশের মাঠে সকাল ৮টায় জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
আজিমপুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার বায়তুন নূর জামে মসজিদে সকাল ৮টায় জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
সকাল সোয়া ৭টায় বুয়েটের খেলার মাঠে ঈদ জামাত হবে।
সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ঈদের জামাত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়। জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ, হুইপ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ-সদস্য ও সংসদ সচিবালয়ের কর্মচারীসহ এলাকার মুসল্লিরা এই জামাতে অংশ নেবেন।
গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদে সকাল ৬টায়, সকাল সাড়ে ৭টায় এবং ৯টায় হবে তিনটি ঈদ জামাত।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মারকাজুল ফিকহিল ইসলামী মসজিদে সকাল ৭টায়, সি ব্লকের উম্মে কুলসুম জামে মসজিদ সকাল সোয়া ৭টায়, এফ ব্লকের জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায়, জি ব্লকের বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদ সকাল ৮টায়, এন ব্লকের ফকিহুল মিল্লাত জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় হবে ঈদের জামাত।
আরামবাগ দেওয়ানবাগ শরিফে সকাল ৮টা এবং সাড়ে ৯টায় দুটি ঈদ জামাত হবে।
দারুস সালামের মাদবর বাড়ি জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টা এবং সকাল ৯টায় দুটি জামাত হবে। মিরপুর ১২ নম্বরে হারুন মোল্লাহ ঈদগাহে ঈদের জামাত হবে সকাল সাড়ে ৭টায়।
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে প্রথম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে জমিয়তুল ফালাহ্ জাতীয় মসজিদে।
ঈদের দিন সকাল ৮টায় প্রথম এবং ৯টায় জমিয়তুল ফালাহ্ মসজিদে দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এছাড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) তত্ত্বাবধানে নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের প্রতিটিতে যে ঈদ জামাতের আয়োজন করা হত, এবার তা প্রতি ওয়ার্ডের মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে।
সকাল ৮টায় প্রথম জামাতের ইমামতি করবেন জমিয়তুল ফালাহ্ জাতীয় মসজিদের খতিব সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন আল কাদেরী। ৯টায় দ্বিতীয় জামাতের ইমামতি করবেন মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা আহমেদুল হক।
৪১টি ওয়ার্ডে সিসিসি’র কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে একটি করে প্রধান ঈদ জামাত স্থানীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে।
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায় নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে। একই স্থানে দ্বিতীয় জামাত হবে সকাল ৯টায়।
এছাড়াও আকুয়া মার্কাজ মসজিদে সকাল ৭টা, ঐতিহ্যবাহী বড় মসজিদে সকাল সাড়ে ৯টা, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সাড়ে ৮টায়, ভাটিকাশর জামে মসজিদে সকাল ৯টা, বলাশপুর জামে মসজিদে সকাল ৯টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও জেলার ৭৩টি স্থানে বড় পরিসরে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।
রাজশাহী
রাজশাহীতে ঈদুল ফিতরের নামাজের প্রধান জামাত হবে সকাল ৮টায় রাজশাহী শহরের হযরত শাহমখদুম রূপোস (রহ.) কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে।
এখানে ইমামতি করবেন জামিয়া ইসলামিয়া শাহমখদুম (রহ.) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি শাহাদত আলী।
বৈরী আবহাওয়া থাকলে ঈদগাহ ময়দানের পরিবর্তে প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে হযরত শাহমখদুম (রহ.) দরগা শরীফ জামে মসজিদে। সেখানে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হলেও সময় অপরিবর্তিত থাকবে।
রাজশাহীতে ঈদের দ্বিতীয় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে নগরীর টিকাপাড়া ঈদগাহ ময়দানে সকাল ৮টায়।
এ ছাড়া নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টেও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়। এখানে সাহেববাজার বড় মসজিদসহ মধ্য শহরের পাঁচটি মসজিদের মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করবেন। এবারও এখানে নারীদেরও জামাতে নামাজের আলাদা ব্যবস্থা থাকবে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল জানিয়েছে, শহরের প্রায় ৫০টি এবং জেলার ৯ উপজেলায় আরও প্রায় ৩৫০টি ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় হবে। এ জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে ঈদগাহ কমিটি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুরুত্বপূর্ন ঈদগাহে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
রংপুর
রংপুর নগরীতে ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে। এ ঈদগাহ ময়দানে ২০ থেকে ২৫ হাজার মুসল্লি অংশ নিতে পারবেন।
আবহাওয়া খারাপ থাকলে কিংবা বৃষ্টি হলে সকাল ৯টায় মডেল মসজিদে হবে প্রধান জামাত।
এবারে রংপুর পুলিশ লাইন মাঠে ঈদের জামাত হবে না, তবে সকাল ৮টায় পুলিশ লাইন্সের ভিতরে ঈদের নামাজ হবে।
সদর মসজিদ মাঠ, পশ্চিম নীলকণ্ঠ ঈদগাহ মাঠ, মুন্সিপাড়া ঈদগাহ,রংপুর মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠে সকাল সাড়ে ৮টায় এবং বড়বাড়ি ঈদগাহ, দামুদরপুর বড় ঈদগাহ মাঠে সকাল ৯টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। কেরামত আলী মাজার সংলগ্ন কেরামতিয়া মসজিদে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নগরী ও জেলার বিভিন্ন এলাকার বেশিরভাগ ঈদগাহ মাঠে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সকাল ৯টার ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
সিলেট
সিলেটে প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে শাহী ঈদগাহ ময়দানে সকাল সাড়ে ৮টায়। জামাতে ইমামতি করবেন শেখ বাড়ি জামিয়ার মুহতামিম, শায়খুল হাদিস মুফতি মোহাম্মদ রশিদুর রহমান ফারুক।
সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসা মাঠে ঈদের জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে।
হযরত শাহজালাল (র.) দরগাহ মসজিদে ঈদের জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে।
নগরীর বন্দরবাজারের কালেক্টরেট জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় হবে ঈদের জামাত।
বন্দরবাজারের কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল সাড়ে ৭টায় এবং দ্বিতীয় জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় ও তৃতীয় জামাত সকাল সাড়ে ৯টায় হবে।
নগরীর রিকাবীবাজারস্থ মধুশহীদ জামে মসজিদে জামাত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়। তেলিহাওর জামে মসজিদ এবং মদিনা মার্কেট জামে মসজিদে জামাত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়।
খুলনা
খুলনা নগরীর প্রধান ঈদ জামাত হবে সকাল ৮টায় খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে।
এছাড়া সকাল সাড়ে ৮টায় খুলনা আলিয়া মাদ্রাসা-সংলগ্ন মডেল মসজিদে এবং সকাল ৯টায় টাউন জামে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
খুলনা সিটি করপোরেশনের ৩১টি ওয়ার্ডে সিটি করপোরেশনের সহায়তায় ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে পৃথকভাবে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
বরিশাল
বরিশালে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে শহরের বান্দরোড কেন্দ্রীয় হেমায়েত উদ্দিন ঈদগাহ মাঠে সকাল সাড়ে ৮টায়।
তবে বরিশালে সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে চরমোনাই দরবার শরিফ মাঠে সকাল সাড়ে ৮টায়।
বরিশাল জামে এবাদুল্লাহ মসজিদের খতিব মাওলানা নূরুর রহমান বেগ জানান, শহরের বেশ কয়েকটি মসজিদে দুটি করে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
এর মধ্যে কেন্দ্রীয় জামে কশাই মসজিদে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়, দ্বিতীয়টি সকাল ১০টায়। জামে এবাদুল্লাহ মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় প্রথম জামাত ও সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় জামাত বায়তুল মোকাররম মসজিদে প্রথম জামাত সকাল ৯টা ও দ্বিতীয় জামাত ১০টায়, পুলিশ লাইনস মাঠে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৮টায় ও দ্বিতীয় জামাত হবে সাড়ে ৯টায়।
এছাড়া বরিশাল মুসলিম গোরস্থান জামে মসজিদে ঈদের একমাত্র জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়। গুঠিয়া বায়তুল আমান জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ড সহ জেলার সহস্রাধিক ঈদ গাহ ও মসজিদে ভোট বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।